ইটস কামিং হোম?

১৯৬৬ বিশ্বকাপ জয় ছাড়া আর কোনো বড় সাফল্য নেই ইংল্যান্ডের, নিদেনপক্ষে একবারো জিততে পারেনি ইউরোর শিরোপা। অথচ প্রতিবারই বড় কোনো টুর্নামেন্টের আগে ইংরেজ গণমাধ্যমের সামনে বাকিদের টেকা দায়। 'ইটস কামিং হোম' স্তুতিতে মেতে উঠে সবাই। কিন্তু টুর্নামেন্ট সামনে গড়ানোর সাথে সাথে স্তিমিত হতে থাকে তাদের আওয়াজ। ল্যাম্পার্ড, জেরার্ড, ওয়েন, স্কোলসরাও হতাশ করেছেন বারবার।

ইউক্রেনের স্বপ্নযাত্রার সমাপ্তি হলো কোয়ার্টার ফাইনালেই। সাউথগেটের দুধর্ষ ইংল্যান্ডের সামনে অসহায় এক আত্নসমর্পন শেভচেঙ্কোর দলের, হ্যারি কেইনের জোড়া গোলের পাশাপাশি হেন্ডারসন এবং ম্যাগুয়ারের গোলে ৪-০ গোলের বড় ব্যবধানে জিতে সেমিফাইনালে উঠেছে থ্রি লায়ন্সরা।

১৯৬৬ বিশ্বকাপ জয় ছাড়া আর কোনো বড় সাফল্য নেই ইংল্যান্ডের, নিদেনপক্ষে একবারো জিততে পারেনি ইউরোর শিরোপা। অথচ প্রতিবারই বড় কোনো টুর্নামেন্টের আগে ইংরেজ গণমাধ্যমের সামনে বাকিদের টেকা দায়। ‘ইটস কামিং হোম’ স্তুতিতে মেতে উঠে সবাই। কিন্তু টুর্নামেন্ট সামনে গড়ানোর সাথে সাথে স্তিমিত হতে থাকে তাদের আওয়াজ। ল্যাম্পার্ড, জেরার্ড, ওয়েন, স্কোলসরাও হতাশ করেছেন বারবার।

এবারো টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তাই ইংরেজদের কথায় কর্ণপাত করেনি কেউই। কিন্তু টুর্নামেন্ট সামনে গড়াতেই সাউথগেটের শিষ্যরা বুঝিয়ে দিয়েছেন তারা বিদায় নিতে আসেননি, এসেছেন বহু প্রতীক্ষার ট্রফি জিততে। টুর্নামেন্টে এখনো কোনো গোল হজম না করা সেই দৃঢ় মানসিকতারই প্রতিচ্ছবি।

সুইডেনের বিপক্ষে খেলা ফুটবলের ছিটেফোঁটাও এদিন প্রদর্শন করতে পারেনি ইউক্রেনের ফুটবলাররা। ম্যাচের শুরু থেকেই তাদের দিশেহারা করেছে ইংল্যান্ড। আর তাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন। গ্রপপর্বের তিন ম্যাচে গোল না পাওয়াতে একটা যায় যায় রব উঠেছিল কেইনকে ঘিরে, নকআউট পর্বে এসে গোলের ফুলঝুরি ছিটিয়ে সেই সমালোচনাকে উড়িয়ে দিলেন কেইন। আগের ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে এক গোল করার পাশাপাশি আজকে করেছেন জোড়া গোল।

রোমার কোচ হিসেবে কিছুদিন আগেই নিযুক্ত হয়েছেন হোসে মোরিনহো। গতকালকে তিনি রোমার সমর্থকদের শুভেচ্ছাও গ্রহণ করেছেন ম্যাচের আগেই। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে কোচিং করানোর সময়ে লুক শ’কে তিনি একদমই পছন্দ করতেন না, একবার তো মিডিয়ার সামনে যাচ্ছেতাই কথা শুনিয়েছিলেন। সেই লুক শ’ই আজ কাঁপিয়ে দিলেন মরিনহোর নতুন দল রোমার মাঠে, অসাধারণ ডিফেন্ডিং করার পাশাপাশি করলেন দুই অ্যাসিস্টও। তার এই অনবদ্য পারফরমেন্স দেখে নিশ্চয় মাথা চাপড়াবেন দ্য স্পেশাল ওয়ান।

হ্যারি ম্যাগুয়ারের কথাও ভুলে গেল চলবে না। ইনজুরির কারণে টুর্নামেন্টের শুরুর ম্যাচগুলোতে ছিলেন না এই তারকা ডিফেন্ডার। ম্যাচ জিতলেও কোথাও যেন তাই তৃপ্তি পাওয়া যাচ্ছিল না থ্রি লায়ন্সদের দেখে, তিনি ফেরার পর বদলে গেল পুরো দলের মনোভাব। পেছনে ভরসা পেয়ে নির্ভার হয়ে আক্রমণের পসরা সাজালেন মাউন্ট, স্টালিং, সানচো, কেইনরা।

হয়তো কিছুটা কাকতালীয়ই, তবু দুই বছরের আলোচনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সানচো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড় হলেন এবং সেই চুক্তি পাকা হবার পরে ইংল্যান্ডের প্রথম যে খেলা, তাতেই শুরুর একাদশে জায়গাও পেয়ে গেলেন। অসাধারণ খেলেছেন তিনি। গোল-অ্যাসিস্ট না পেলেও ডানপ্রান্ত দিয়ে বারবার ভীতি ছড়িয়েছেন হলুদ শিবিরে।

চিরায়ত আন্ডারডগ পারফরম্যান্স দেখিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে এসেছিল ইউরোপের রুটির ঝুড়ি খ্যাত ইউক্রেন। তাদেত ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় শেভচেঙ্কোর অধীনে আবারো অঘটন ঘটানোর স্বপ্নে বিভোর ছিল পুরো হলুদ শিবির। কিন্তু আগের ম্যাচে হার না মানা মনোভাব এদিন দেখাতে পারেননি ইয়ারমোলেংকো-ইয়ারেমচুকরা। উপরন্তু ৩৬ মিনিটে ক্রিভতসভ ইনজুরির কারণে মাঠ ছাড়লে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ইউক্রেনের ডিফেন্স। প্রথমবারের মতো কোয়ার্টারে আসা ইউক্রেনের যাত্রার সমাপ্তি তাই এখানেই।

সেমিফাইনালে ডেনমার্কের মুখোমুখি হবে থ্রি লায়ন্সরা। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের ফাইনাল হয়েছিল ওয়েম্বলিতেই, এবারো সেমিফাইনাল-ফাইনাল খেলবে সেই মাঠেই। জিওফ হার্স্টের পুনরাবৃত্তি কি ঘটাতে পারবেন হ্যারি কেইন-স্টার্লিংরা?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...