ঝাড়খণ্ডের ছোট্ট শহর রাঁচিতে বেড়ে ওঠা মহেন্দ্র সিং ধোনির। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এক সাধারণ ছেলের অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্পের শুরুটা এই শহর থেকেই। সেই গল্পের শুরুর মাহি শুধু রাঁচির, তবে শেষটা হয় একটা গোটা ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি হিসেবে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন তা প্রায় বছর দুয়েকের বেশি হয়ে গিয়েছে। তবে আলোচনায় কখনও আড়ালে থাকেননি ধোনি। এই যেমন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে ধোনির শহর রাঁচিতে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। সে ম্যাচের আগে প্রেস কনফারেন্সে এসেছিলেন শার্দুল ঠাকুর। সেখানেই উঠে আসে ধোনির নাম।
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করে বসলেন, আপনি কি মনে করেন, ধোনির অবসরের পর ভারতের বোলাররা ধারাবাহিকতার দিক দিয়ে একটু পিছিয়েছে? বিশেষত, স্ট্যাম্পের পেছন থেকে দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ধোনির মত কেউ নেই।
শার্দুল ঠাকুর প্রশ্নের জবাবটা দিলেন অকপটে। এমন প্রশ্নে ধরাশয়ী হওয়ার কোনো মানেই নেই। তিনি বললেন, ‘ধোনিকে সবাই মিস করে। উনি ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক ওয়ানডে, প্রায় নব্বইটির মত টেস্ট খেলেছেন। তাঁর মত অভিজ্ঞ ক্রিকেটার দলে পাওয়া সত্যিই কঠিন। আমরা যেহেতু তাঁর সাথে খেলেছি, তাই তাঁকে মিস না করার কোনো কারণ নেই।’
তবে বোলারদের ধারাবাহিকতা নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নে শার্দুল ঠাকুর বলেন, ‘আপনি যদি আমাদের বোলারদের ধারাবাহিকতা নিয়ে কথা বলেন, আমার মনে হয় প্রতিপক্ষ বোলারদের নিয়েও কথা বলা উচিত। দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে টি-টোয়েন্টি সিরিজে আমাদের বোলারদের নিয়ে যদি সমালোচনা হয়, সেই একই সমালোচনা তাদের বোলারদের নিয়েও হওয়া উচিৎ। আমরা সেই সিরিজটি জিতেছি এবং তাদের বোলার প্রচুর রান লিকও করেছে।’
শার্দুল ঠাকুর আরও বলেন, ‘ভারত কখনও ঘরের মাটিতে একপেশে ম্যাচ হারে না। প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কোনো রকম প্রতিরোধ না গড়ে ম্যাচ হেরেছি, এমন ম্যাচসংখ্যা খুবই কম। আমাদের বোলাররা যেদিন এক্সপেন্সিভ থাকে, সেই একই চিত্র থাকে প্রতিপক্ষ বোলারদেরও।’
এই মুহূর্তের আধুনিক ক্রিকেটে বোলারদের খরুচে হওয়ার পেছনে পিচ, কন্ডিশনসহ আরও অনেক কিছু ফ্যাক্টর বিবেচনায় আসে। প্রেস কনফারেন্সে সে সব বিষয় গুলো যুক্ত করে শার্দুল ঠাকুর বলেন, ‘দেখুন, বোলারদের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গেলে আগে আপনাকে কন্ডিশন, পিচ নিয়ে জানতে হবে। যে পিচে গড়ে ৩৫০ হয় সেখানে আসলে বোলারদের জন্য আর কিছু থাকে না। এখন সেই বিবেচনায়, কোনো দলের বোলাররাই খুব বেশি ইকোনমিক্যাল বোলিং করতে পারে না। তবে দুই একটা ম্যাচ বাদে আমরা বেশিরভাগ ম্যাচই জিতি। পিচ, কন্ডিশন যেমনই থাকুক না কেন আমরা ভাল ফাইট দিতে পারি। এজন্য আমি মনে করি, আমাদের দলটায় ব্যাটিং এবং বোলিং, দুই ইউনিটেই যথেষ্ট ধারাবাহিকতা আছে।’
সংবাদ সম্মেলনে শার্দুল ঠাকুরের কড়া জবাবের মত ভারতও অবশ্য সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে মোক্ষম জবাব দিতে পেরেছে। আগের ম্যাচ হেরে সিরিজে পিছিয়ে গেলেও এদিন ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতায় আনে শিখর ধাওয়ানের দল। আগামী ১১ অক্টোবর সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আবারও মুখোমুখি হবে এই দু’দল। তাছাড়া শেষ ওয়ানডে ম্যাচটাও জিতে সিরিজটা ২-১ ব্যবধানের নিজেদের করে নিয়েছে শিখর ধাওয়ানের সতীর্থরা।