এই আমাদের টেস্ট ভেন্যু!

তবে, ২০১৬ সালের পর থেকে এখানে কোনো রকম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই হয়নি। বিসিবি এই মাঠের সংস্কার কিংবা পরিচর্যা নিয়ে এতটাই উদাসীন যে কয়েকদফা গণমাধ্যমে লেখালেখির পরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিসিবির ঘুম ভাঙবে কবে?

বর্ষাকাল শেষে মাঠ থেকে যখন পানি নেমে যায়, তখন পানি স্মৃতি হিসেবে রেখে যায় পলিমাটিকে। আর সেই পলি মাটির মাঠে ধান চাষ করে কৃষক। প্রথম ছবিটি দেখে মনে হচ্ছে সেই রকম পলিমাটির কোন এক মাঠ, যেখানে কৃষক সবে ধান রোপন করেছে।

ঢাকা শহরের মানুষজন ছুটির দিনে হাতিরঝিলে যায়। ধানমন্ডি লেক দেখতে যায়। দ্বিতীয় ছবিতে তেমনই কোন এক শহরের লেক এর মত দেখা যাচ্ছে। কি সুন্দর! লেকের পানিতে মেঘ পালের দুষ্টুমি পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে।

আর তৃতীয় ছবি দেখে মনে হচ্ছে এট হয়ত কোন এলাকার বৃষ্টির পরের অবস্থা। কাঁদাতে পুরো রাস্তা একাকার।

মূল ফটক

কিন্তু আদতে এটি হচ্ছে ফতুল্লা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম। যেখানে মাঠের ভিতরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চাইলে এখন ধান চাষ করতে পারবে। আউটার মাঠে মাছের চাষ করতে পারবে। সেই মাছগুলোর মধ্যে যদি কৈ মাছ থাকে তাহলে সেগুলো বৃষ্টির দিনে পার্কিং এর জায়গায় লাফালাফি করতে পারবে।

এত সুন্দর ব্যবস্থা কোথা থেকে যে পায় বিসিবি! মাঠে খেলা নেই, তাতে কি! মাঠগুলোকে ধান চাষ কিংবা মাছের খামার বানিয়েই টাকা উপার্জন করা যায়। এমনি এমনিই তো আর আয়ের দিক দিয়ে চার নম্বর হয়নি।

সম্প্রতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানিয়েছিল, করোনাভাইরাসের প্রকোপের মাঝেও স্থানীয় ক্রিকেটারদের অনুশীলনের জন্য স্টেডিয়ামগুলো প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। যেখানে ফতুল্লার এই খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের কথাও উল্লেখ ছিল। যদিও এরপরই দেশের শীর্ষ কয়েকটা গণমাধ্যমে ফতুল্লা স্টেডিয়ামের এমন কিছু ছবি ছাপা হয়। তাতে, ক্রিকেট মহল ও ক্রিকেট সমর্থক – সবারই চোখ ছানাবড়া হতে বাধ্য।

স্টেডিয়ামের মূল মাঠ

ফতুল্লার স্টেডিয়াম যেখানে প্রস্তুত থাকার তথ্যটিকে বেমালুম ভুল প্রমাণ করছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে ড্রেনের রুপ পাওয়া ফতুল্লার গেইট। মূল মাঠে জমেছে পানি এবং ডুবন্ত আউটার স্টেডিয়াম। আর মাঠের যে অবস্থা সেখানে কোনো ভাবেই কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটই খেলা সম্ভব নয়, অনুশীলনও নয়।

ফতুল্লা স্টেডিয়ামের এই বেহাল দশা অবশ্য নতুন কিছু নয়। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের বাংলাদেশ সফরে একটা প্রস্তুতি ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল এই ভেন্যুতে। তবে, আশেপাশের কারখানা থেকে আসা বর্জ্যের গন্ধ এতটাই তীব্র ছিল যে, খেলতে অস্বীকৃতি জানায় অস্ট্রেলিয়া দল।

অথচ, এটা বাংলাদেশের টেস্ট ভেন্যু! স্বয়ং রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া, বিরাট কোহলির ভারত এখানে টেস্ট খেলে গেছে।

আউটার স্টেডিয়াম

তবে, ২০১৬ সালের পর থেকে এখানে কোনো রকম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই হয়নি। বিসিবি এই মাঠের সংস্কার কিংবা পরিচর্যা নিয়ে এতটাই উদাসীন যে কয়েকদফা গণমাধ্যমে লেখালেখির পরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরাবরই একটা অনীহা কাজ করে। বিসিবির ঘুম ভাঙবে কবে?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...