তরুণ তুর্কি। আগ্রাসী ব্যাটার হিসেবে তিনি খানিক সমীহ কুড়াতে শুরু করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট আঙ্গিনায়। জিসান আলম অনূর্ধ্ব- ১৯ দল থেকেই নজর কাড়ছেন। যুব পর্যায়ে তার ব্যাটিংয়ের ধরণ প্রশংসা কুড়িয়েছে। এখন তার ডালপালা মেলে বাংলাদেশ জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার পালা। সে রাস্তায়ই যেন রয়েছেন জিসান।
বাংলাদেশ হাই পারফরমেন্স ইউনিটের হয়ে তিনি খেলছেন টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজ। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে, পেস বান্ধব উইকেটে দারুণ এক ইনিংসের উপহার দিয়েছেন তরুণ এই ব্যাটার। ১৩৮.৮৯ স্ট্রাইকরেটে অর্ধ-শতক হাঁকিয়েছেন ডান-হাতি এই ব্যাটার।
২টি ছক্কার সাথে ১টি চারে সাজিয়েছেন নিজের ইনিংস। স্বচক্ষে কেউ ইনিংসটি দেখে না থাকলে, মনে হতেই পারে বড্ড সাদামাটা। রানের বিচারে সাধারণই বটে। কিন্তু তার প্রয়াস দৃষ্টিগোচড় হওয়ার মত। তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন বড় শট খেলার। প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরির বোলারদের উপর চড়াও হতে চেয়েছেন।
কিন্তু পুরোপুরি সফল হতে পারেননি জিসান। ৩৬ বলে ৫০ রানের এই ইনিংস খেলার পথে অতিরিক্ত বাউন্সের মোকাবেলা করতে হয়েছে তাকে। সাধারণত উপমহাদেশের উইকেটে খুব বেশি বাউন্স থাকে না। অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশের উইকেটের মধ্যে নিশ্চিতরূপেই রয়েছে বিস্তর ফারাক।
যুব বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মত জিসান সুযোগ পেয়েছেন প্রতিকূল পরিবেশে খেলার। তাইতো একটি ইনিংস দিয়ে তাকে এখনই মূল্যায়ন করবার সময় আসেনি। এমনকি বাংলাদেশ এইচপির হয়ে প্রথম সফরেই তিনি সবকিছু ওলট-পালট করে দেবেন- সেটা ভাবাও ভুল।
তবে তার চেষ্টা সহজেই পরিলক্ষিত হয়। তার সাহসী মনোভাব প্রকাশিত হয় বাইশ গজে। সেটাই বরং আশার সঞ্চার ঘটাচ্ছে। তিনি উইকেটে থিতু হয়ে, কচ্ছপ গতিতে রান তোলায় বিশ্বাসী না। বরং তিনি যতক্ষণ থাকবেন, ততক্ষণ আক্রমণ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ঠিক এখানেই বাকিদের থেকে আলাদা জিসান।
তার টেকনিক্যাল বেশকিছু দুর্বলতা রয়েছে। তিনি বাউন্সের লাইনে যেতে ব্যাট করবার সময় শরীর ওঠা-নামা করাচ্ছেন। যাতে করে তার শরীর ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। তিনি ঠিকঠাক শট খেলতে পারছেন না। ব্যাটে বল লাগলেও তা যথাযথ ফলাফল এনে দিচ্ছে না।
একেবারেই শুরুর দিকে রয়েছেন জিসান। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেও তিনি ব্যাটে রান পাচ্ছেন। তা নিশ্চিতরূপেই তাকে আত্মবিশ্বাসী করবে। তবে আত্মতুষ্টি হওয়ার মত কিছুই এখনও করেননি জিসান। আফতাব আহমেদের পর নির্ভীক একজন ব্যাটার পাওয়া যাবে, এই ধারণা করছেন অনেকেই। সে প্রত্যাশা পূরণের জন্য জিসানকেই হতে হবে অগ্রগামী ও পরিশ্রমী।