ভারতের সুনীল গাভাস্কার কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলি, শ্রীলঙ্কার অর্জুনা রানাতুঙ্গা কিংবা পাকিস্তানের রমিজ রাজা – এই রথী মহারথীদের সাথে এবার উচ্চারিত হবে এবার ফারুক আহমেদের নাম। পাঁচ জনের মধ্যে মিল হল, সবাই দেশের হয়ে ক্রিকেট মাঠে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরে মাঠের খেলা শেষে একটা বয়সে গিয়ে দেশের ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ পদে গিয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন।
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিষেধ থাকলেও এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ছায়াতলেই গড়ে ওঠে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদ। তাই তো ক্ষমতার পালাবদল হতেই সেখানে পরিবর্তন আসে, এবারও হয়েছে তাই। আওয়ামী লীগের ক্ষমতা হারানোর জের ধরে বিসিবি সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন।
ইতোমধ্যে তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ফারুক আহমেদকে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মত সাবেক কোন ক্রিকেটারকে বোর্ডের প্রধান হিসেবে পেল বাংলাদেশ। সাবেক অধিনায়কদের ক্ষেত্রেও ফারুক-ই প্রথম বিসিবি বস হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছেন।
যদিও অন্যান্য দেশে এমনটা আরো আগেই ঘটেছে। ভারতের পরাক্রমশালী অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি ২০১৯ সালে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রায় তিন বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০২২ সালে এসে বোর্ড থেকে বিদায় নেন তিনি।
এর আগে অবশ্য অধিনায়ক ও বোর্ড সভাপতি হওয়ার বিরল কীর্তি গড়েছিলেন কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি – যদিও অধিনায়ক কিংবা বোর্ড সভাপতি কোন পরিচয়েই সেই অর্থে ছাপ ফেলা হয়নি তাঁর।
প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে রমিজ রাজার কল্যাণে। ধারাভাষ্যকার হিসেবে খ্যাতি পাওয়া মানুষটা খেলোয়াড়ী জীবনে স্বপ্ল সময়ের জন্য হয়েছিলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক, এরপর ২০২১ সালে এসে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান হন তিনি। তবে ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়েই বছর খানেক পর পদত্যাগ করতে হয় তাঁকে। ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড প্রধান হয়েছিলেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাবেক ক্রিকেটাদের তেনন একটা বোর্ডে দেখা যায় না। যদিও ফারুক আহমেদ নির্বাচক হিসেবে এর আগে কাজ করেছিলেন। কিন্তু এবার তাঁর কাজ করার পরিবেশ যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রতিকূল। আবেগ তাড়িত ফারুক বলেন, ‘আই অ্যাম ভেরি প্রিভিলেজড।’ কথায় আছে, উইদ গ্রেট পাওয়ার কামস গ্রেট রেসপন্সিবিলিটি! এই কথাটাও নব নিযুক্ত বোর্ড সভাপতির নিশ্চয়ই অজানা নয়!