বিশ্বকাপ শুরুর আগে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পেসার ভাবা হচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু, বিশ্বকাপের মঞ্চে এসেই যেন নিজের চেনা ছন্দে আগ্রাসী বোলিংয়ের ধারটাই হারিয়ে ফেললেন পাকিস্তানের শাহীন শাহ আফ্রিদি। এখন পর্যন্ত এ পেসারের ঝুলিতে জমা হয়েছে মাত্র ৪ টি উইকেট।
অথচ, অনেকেই তাঁকে এ আসরের সম্ভাব্য সেরার তালিকায় রেখেছিলেন। কিন্তু, সেরাদের তালিকা তো দূরে থাক। রীতিমত গড়পড়তা বোলিং দিয়ে প্রায় প্রতি ম্যাচেই হতাশার প্রতিচ্ছবি আঁকছেন শাহীন আফ্রিদি।
আফ্রিদির এমন ধারহীন বোলিং নিয়ে সমালোচনা হচ্ছিল কয়েকদিন আগে থেকেই। তবে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের বড় হারের পর তাঁকে রীতিমত ধুয়ে দিয়েছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকর রবি শাস্ত্রী। তাঁর মতে, আফ্রিদির মধ্যে বিশেষ কিছুই নেই।
এ নিয়ে স্টার স্পোর্টসের এক অনুষ্ঠানে রবি শাস্ত্রী বলেন, ‘শাহীন আফ্রিদি ওয়াসিম আকরাম নয়। নতুন বলে ও ভালো বোলার, উইকেট নিতে পারে। কিন্তু ওর মধ্যে সত্যি বলতে বিশেষ কিছু নেই। তাঁকে আমি বড়জোর ‘ভাল’ বোলারদের তালিকায় রাখবো। কিন্তু সে দুর্দান্ত কিছু না। এই সত্যটা মানতে হবে।’
রবি শাস্ত্রীর মতো শাহীন আফ্রিদিকে নিয়ে হতাশা জানিয়েছেন ভারতের আরেক ব্যাটিং গ্রেট সুনীল গাভাস্কারও। মূলত, ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের হার যখন প্রায় সুনিশ্চিত, তখন এক কাটারে রোহিত শর্মাকে আউট করেন আফ্রিদি।
একই ভাবে পাকিস্তানের ইনিংসে রিজওয়ানকে কাটারে পরাস্ত করেছিলেন বুমরাহ। আহমেদাবাদের উইকেটে এমন কিছু দেখার পরও কেন শাহীন সেই কাটারের পন্থা শুরু থেকে অবলম্বন করেছেন সেই প্রশ্ন তোলেন গাভাস্কার।
তিনি বলেন, ‘রিজওয়ানের উইকেটটা অনেক বড় ধাক্কা ছিল। পরের ওভারে বুমরা কাটার দিয়ে আরও একটি উইকেট পায়। এখান থেকেই তো বুঝা যায়, উইকেট কেমন আচরণ করছিল। এর অর্থ পাকিস্তানিরা প্রথম ইনিংস থেকে উইকেট নিয়ে কোনো শিক্ষাই নেয় নি। তারা শুধু শেষ দিকে কাটার করেছে। তাতে শাহীন রোহিতকে আউটও করেছিল। কিন্তু আমি ভেবেছিলাম, ওরা নতুন বলেও কাটার করবে। এমন তো কোনো নিয়ম নেই যে, নতুন বলে একটা নির্দিষ্ট গতিতেই বল করতে হবে।’
এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসকে পেয়েও বল হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি শাহীন আফ্রিদি। ৭ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ছিলেন বেশ খরুচে। ৯ ওভারে ৬৬ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। তবে শাহীনের এমন ধারহীন বোলিং আর স্পষ্টত হয় ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে এসে।
১৯২ রানের লক্ষ্য দিয়ে জিততে হলে শাহীনকেই জ্বলে উঠতে হতো। কিন্তু তার কানাকড়িও মেলেনি ম্যাচে। শুরুতে শুভমান গিলের উইকেট নিলেও পরে নিষ্প্রভ ছিলেন এ পেসার। শেষ দিকে রোহিতের উইকেট নিলেও কার্যত ততক্ষণে ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছে।
সব মিলিয়ে বল হাতে সময়টা মোটেই ভাল যাচ্ছে না এ পেসারের। যদিও ফেরার জন্য যথেষ্ট ম্যাচ তাঁর সামনে রয়েছে। অফফর্মের এ বৃত্ত থেকে নিশ্চিতভাবেই বের হতে চাইবেন শাহীন আফ্রিদি।