সৌরভের প্রস্থান, নাকি নতুন শুরু?

পরবর্তী মেয়াদে আর বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া(বিসিসিআই)-এর সভাপতি হিসেবে থাকছেন না সৌরভ গাঙ্গুলি। এই খবর নিশ্চিত হওয়ার পর চারিদিকেই শোরগোল উঠেছে সৌরভের পরবর্তী গন্তব্য কোথায়? ব্যাক টু কলকাতা, দিল্লী ক্যাপিটালসের ডিরেক্টর নাকি আইসিসি’র চেয়ারম্যান? 

তবে চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে এরই মধ্যে সৌরভ গাঙ্গুলির সাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছে দুইজনকে। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এবং বোর্ডের প্রাক্তন কর্তা এন শ্রীনিবাসনও রয়েছেন আইসিসি’র চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে।

তাই সৌরভ গাঙ্গুলির জন্য সে পথটা খুব বেশি মসৃণ হচ্ছে না। অবশ্য নিজে থেকে আরও এক মেয়াদ বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত সেটিও হচ্ছেনা। 

বিসিসিআই-এর পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন রজার বিনি- এমন খবরই বেশি শোনা যাচ্ছে। তাই বিসিসিআই-এর মসনদ হারাতে যাচ্ছেন সৌরভ গাঙ্গুলি। ভিতরের খবর বলছে, পরবর্তী বিসিসিআই সভাপতি না হওয়ার কারণে খানিকটা হতাশই হয়েছেন গাঙ্গুলি। 

সৌরভ গাঙ্গুলি নিজে থেকে কখনও রজার বিনির নাম প্রস্তাব করেননি। বোর্ডের বিভিন্ন পদের মনোনয়নের দিনে বিসিসিআই কার্যালয়ে এসেছিলেন গাঙ্গুলি। সবার আগে এসেও বিসিসিআই অফিস থেকে সবার শেষে প্রস্থান হয়েছিল গাঙ্গুলির। কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় বেশ হতাশ,বিষণ্ণ এক সৌরভকে দেখা যায়। 

রজার বিনি প্রেসিডেন্ট হলে সৌরভ গাঙ্গুলির সাথে বিসিসিআই ছাড়তে হতে পারে যুগ্ম সচিব জায়েশ জর্জ ও কোষাধ্যক্ষ  অরুণ সিংকেও। কারণ প্রেসিডেন্টের সাথে এ দুটি পদেও নির্বাচন হবে। আর সে নির্বাচনে আগে থেকেই বেশ পিছিয়ে থাকবেন এ দুজন। তবে অরুণ সিংকে আইপিএলের চেয়ারম্যান হিসেবে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।  

এর আগে বিসিসিআই-এর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জয় শাহের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথাই বেশ জোরেশোরে শোনা যাচ্ছিল। সেটি হলে বিসিসিআই-এর ইতিহাসে তিনিই হতেন সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে নিজের মত বদলান জয় শাহ। তিনি আরও এক মেয়াদ সেক্রেটারি হিসেবেই থাকতে চান। 

আজ বুধবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। ১৮ অক্টোবর বোর্ডের নির্বাচন। ২০১৯ সালে একদম শেষ মুহূর্তে এসে  বিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট হয়ে চমক দেখিয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। এবারও কি তেমন চমক অপেক্ষা করছে? এবার হয়তো সেই ভাগ্যের ছোঁয়াটা তিনি পাচ্ছেন না। কারণ সে সময়ের শুভানুধ্যায়ীদের এবার তিনি পাশে পাচ্ছেন না।

তাছাড়া বোর্ডের গত বার্ষিক সাধারণ বৈঠকের আগে মঙ্গলবার মুম্বাইয়ে বিসিসিআইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলির প্রেসিডেন্ট সময়কাল নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা করা হয়। এই পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে, সৌরভের সময়ে বাজে পারফরমেন্সের দোহাই দিয়েই সৌরভকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষপদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

তবে আরেকটি সূত্র বলছে, আইপিএল চেয়ারম্যান পদের অফার পেয়েছিলেন গাঙ্গুলি। কিন্তু, তিনি স্পষ্ট এই পদ গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। তবে সব হারালেও, ভারতীয় ক্রিকেটের সাবেক অধিনায়কের কাছে সিএবি-এর দরজা খোলাই থাকছে। ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল- এর নিয়ম বলছে আরও এক বছর পদে থাকতে পারবেন গাঙ্গুলি। ফলে আবার সিএবি প্রেসিডেন্ট হতে বাঁধা নেই তাঁর।

তাছাড়া, সৌরভ প্রেসিডেন্ট হতে চাইলে আপত্তি থাকার কথা না বিরোধীদেরও। কিন্তু সেক্ষেত্রে তাঁর পদের মেয়াদ হবে এক বছরই। তবে সৌরভের ভবিষ্যত গন্তব্য কোথায় হচ্ছে তা জানতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে আইসিসি’র চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন পর্যন্ত।    

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link