সময়ের সাথে বদলেছে পৃথিবী, বদলে গেছে ক্রিকেট, বদলেছে নিয়ম।
কিছু জিনিস তবুও বদলায়নি! যুবক ক্রিস্টোফার হেনরি গেইল ইউনিভার্স বস ছিলেন, বুড়ো ক্রিস্টোফার হেনরি গেইল এখনো ইউনিভার্স বস আছেন।
২০ ওভারের ক্রিকেটে তিনি ১৩ হাজার রান করেছেন। ধারের কাছেও কেউ নেই। এর মধ্যে ছয় হাজার রানের বেশি এসেছে ছক্কা থেকে। হ্যাঁ, ‘বিনোদনের ফেরিওয়ালা’ খ্যাত ক্রিস গেইলের টি-টোয়েন্টিতে ছক্কার সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
এই ফরম্যাটে চারও আছে তাঁর এক হাজারের ওপর। এখানেও তিনি বাকিদের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। বোঝা যাচ্ছে, স্রেফ বাউন্ডারি দিয়েই ১০ হাজারের ওপর টি-টোয়েন্টি রান করেছেন। তাঁকে ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ব্র্যাডম্যান’ বলা ছাড়া এখন আর কোনো উপায় নেই। তিনি খুবই বাস্তব, কিন্তু তাঁর পরিসংখ্যানগুলোকে অবাস্তব মনে হয়।
বয়সের সাথে সাথে স্ট্রাইক রেটে কমতি এসেছে, ছক্কাগুলোর প্রতিটাই এখন আর গ্যালারির সবচেয়ে উঁচুতে আছড়ে পড়ে না, ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর সংশয় তৈরি হয়েছে তাকে ঘিরে, নিলামে তাই তাকে নিয়ে কাড়াকাড়ি লাগে না। একাদশে জায়গা না পেয়ে ডাগআউটে বসে হাসির আড়ালে চোয়াল চাপা প্রতিজ্ঞাটা তাই আড়াল করেন। প্রথম সুযোগেই বুঝিয়ে দেন – ‘আমি ক্রিস্টোফার হেনরি গেইল! এত সহজেই ভুলে গেলে তোমরা? কিভাবে এই ভুল করলে!’
তাই তো হাফ সেঞ্চুরির পরও তাকে উদযাপন করতে দেখা যায়, সেঞ্চুরি মিসের হতাশায় ব্যাট ছুঁড়ে ফেলেন আক্রোশে, একটি রানের জন্যও বুড়ো গেইলের হতাশা বিস্ফোরিত হয়। কারণ, অনেক কিছু বদলে গেলেও রানক্ষুধাটা যে বদলায়নি।
চল্লিশোর্ধ্ব বয়সের এই বুড়ো জ্যামাইকান এক হাতে খেলুক বা দুই হাতে, এক পায়ে খুঁড়িয়ে চলুক বা হুইল চেয়ারে, এই ২০ ওভারের সাম্রাজ্যে সেই অবিসংবাদিত সেনাপতি। ওই স্পার্টান খাপখোলা তরবারি, ওই দানবীয় শরীর, ওই দুই শীতল চোখের নৃশংস খুনে দৃষ্টি, ওই আবেগহীন চেহারা, ওই ক্রিস্টোফার হেনরি গেইল, আপনার মেরুদণ্ডে ভয়ের শীতলতা আনতে এখনও সমানভাবে সক্ষম।
সময় আরও বয়ে যাবে, ইউনিভার্স বস আরও বুড়িয়ে যাবেন, চোখ এবং হাত বিশ্বাসঘাতকতা শুরু করবে, তবুও আমি টিভির সামনে বসবো তার সেঞ্চুরির অপেক্ষায়! আমি জানি, এমনকি একজন অর্ধেক গেইলও এই তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে যেতে পারেন আপনার ভাবনার গতিকে পরাস্ত করে।
আমি জানি, জানেন ইউনিভার্স বসও!