ভাইয়েরা আমার, গেট আ লাইফ

ক্রিকেট জীবন না, আপনারা এত কষ্ট করবেন না এটা নিয়ে, খেলা দেখেন, এনজয় করেন, হারার খেলা নিয়ে দুইটা গালি দিতে পারেন, কাউকে ভালোবাসলে ভালোবাসেন, কিন্তু নিজের জীবনভাবনা কারও ওপর চাপিয়ে দিয়েন না।

এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল থেকে আর তেমন চাওয়া পাওয়া নেই। আমি প্রেডিক্ট করেছিলাম তিনটা জিতবে, দুইটা ডান, আর একটা হইলে সেটা হবে চাঁদ ছোঁয়ার মতো একটা ব্যাপার। আমি প্রেডিক্ট করেছিলাম সেমিফাইনাল, কোনও মতে ওই দৌড়ে থাকাটাও দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ভারতের মধ্যে একটা বড় ব্যাপার।

তবে এর বাইরেও কিছু ব্যাপার আছে ভাইয়েরা, প্রথমে বলবো গেট আ লাইফ – আমরা যারা রিপোর্টার সারাদিন এগুলাই আমাদের কাজ বলতে পারেন। সারাদিন কে কোথায় জিতলো আর এরপরেই ‘আর বাংলাদেশ’ বলে লাফিয়ে ওঠাটা হীনমন্যতা।

নামিবিয়া সেদিন শ্রীলঙ্কার সাথে জিতেছে, জিম্বাবুয়ে জিতেছিল পাকিস্তানের সাথে সেটা জিম্বাবুয়ের ক্রেডিট, এখানে বাংলাদেশের কিছু হারাবার বা অনুধাবনের নেই বলেই আমি মনে করি। এই সেদিন আপনারা বললেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট এগিয়ে যাচ্ছে, আজ বলছেন টিটকারি মেরে ‘প্রবল পরাক্রমশালী জিম্বাবুয়ে’কে হারিয়ে – গেট আ লাইফ। যে কোনও এক জায়গায় থাকেন।

ক্রিকেটাররা অসাধারণ কেউ না, তারা আমাদের থেকে যারা ক্রিকেটার হইতে চাইছিলেন, তাদের মধ্যে ১১-২০ জন। তাই তারা বেতন পাইলেই সবখানে সফল হইতে হবে ব্যাপারটা তা না- ক্রিকেটারদের খেলার বাইরেও একটা বিশাল লাইফ মেইনটেইন করে আজকের সাকিব আজকের কোহলি হতে হয়েছে।

স্বভাবতই আপনার ২০-৩০ হাজার টাকা বাসা ভাড়ার চিন্তা করে ওরা ইনকাম করবে না, তাই আপনার পাল্লায় তাদের ভাববেন না। দেশপ্রেমের বিষয়টাও নিজের ক্ষেত্রে ঠিক রাখেন, দেখবেন একজন একজন করে সবারই হয়ে যাবেনে, কিন্তু দেশপ্রেমের প্রশ্ন এলেই ক্রিকেটাররা কী করছে এটা নিয়ে হাউকাউ করে রাজনৈতিক নেতাদের সাথে গদগদ করে যে ছবিটা তোলেন, ওটা কিন্তু বড্ড কিউট লাগে।

বিশ্বব্যাপিই ফ্যানস মিট অ্যান্ড গ্রিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ – এবং এটা বেশ ব্যয়বহুল ব্যাপার, ব্র্যান্ড ইমেইজের ব্যাপার, শাহরুখ খান নিজের চেহারাকে মূল্যবান বানিয়েছেন, নিজের উপস্থিতিকেও, তিনি নিজের উপস্থিতির দাম হিসেবে বিয়েবাড়িতে এক কোটি টাকা নেন, ক্রিকেটাররাও তেমন পারফরর্মিং আর্টিস্টই- এই মানুষগুলা সাকিবদের আরও ১০ বছরেও দেখবে কি না সন্দেহ, তাই তাদের মধ্যে যারা সামর্থ্যবান তারা সময় কাটাইসে, আমার ব্যক্তিগত ভাবনা বলে এতে দোষের কিছুই নেই- বড় বড় ফুটবলারদের এমন ফ্যান্স ইভেন্ট আছে, অনেক এক্সপেন্সিভ ওরা আরও প্রতিযোগিতামূলক ফিক্সচারের মধ্য থেকেই সময় নিয়ে এসব ইভেন্ট করে- এসব একটু ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই পাবেন।

এটাকে চাঁদাবাজি আর যাই বলুক কোনও মানুষ, আপনারা সেই স্রোতে কেন গা ভাসাবেন? আপনাদের তো বুদ্ধি বিবেচনা আছে তাই না? কিন্তু না আপনারা নিজেদের মূর্খ প্রমাণে ব্যস্ত। বিদেশ যাবেন টাকা জমিয়ে, নিজেদের মন বড় হবে, চিন্তার দুয়ার আরও ওপেন হবে।

কোনা দিক দিয়া একটু বিরিয়ানির ছবি দেখে বিশ্বাস করে নিয়েছেন তাসকিন বিরিয়ানি খেয়েছে – ও তো দুই ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ আপনাদের তো এখন ওইটা আপলোড দিয়ে কোথাও সরি লিখতে দেখি না।

আমি আবারও বলি নিজের জায়গা ক্লিয়ার করে, বাংলাদেশ কোনও আহামরি কিছু জেতেনি, ক্রিকেট খেলতে নামসে, ক্রিকেট ম্যাচ জিতসে, যাতে তারা প্রায়ই ব্যর্থও হয়ে আসছে। কিন্তু, ক্রিকেট জীবন না, আপনারা এতো কষ্ট করবেন না এটা নিয়ে, খেলা দেখেন, এনজয় করেন, হারার খেলা নিয়ে দুইটা গালি দিতে পারেন, কাউকে ভালোবাসলে ভালোবাসেন, কিন্তু নিজের জীবনভাবনা কারও ওপর চাপিয়ে দিয়েন না।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...