বিশ্বকাপের বাইরে রিঙ্কু সিংকে রাখার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না। রিঙ্কুর ব্যাটটাও বারবারই প্রমাণ করে চলেছে, সিদ্ধান্তটা কতটা কঠিন ছিল।
গতির বিস্ফোরক বোলিং করা তানজিম সাকিবের ফুলটসে প্যাডল সুইপে সেদিন কিপারের উপর দিয়ে ছয় খেলে করলেন অর্ধশতক। তারপরেই নিজের হাতের ট্যাটুর দিকে দেখালেন। যাতে লেখা ছিল বিধাতার পরিকল্পনা।
আদতেই তাই। বিধাতার লেখা নাটকই বলা যায় রিঙ্কুর জীবনকে। সংগ্রামী জীবনে প্রথম সাফল্য আসে তার আইপিএলের ময়দানে, ২০২৩ সালে। সেখান থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস নাগাদ চলছিলেন দারুণ গতিতে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১৫ সদস্যের মাঝে না থাকলেও ছিলেন স্ট্যান্ড বাই হিসেবে।
তবে, একটা আক্ষেপ বোধহয় তাও রয়ে যায়। তা হলো ক্রিজে অল্প সময় কাটানোর সুযোগ। ১৭৫ স্ট্রাইক রেট আর প্রায় ৬০ গড়ে ব্যাট চালানো রিঙ্কুর শেষ ১০ টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন মাত্র ৬৭ বল। গত আইপিএলটাও এমনই গেছে তার।
তবে ২৬ বছর বয়সী এ তারকার কিন্তু এ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ আমার দল ভাল করছে, ততক্ষণ আমার কোনো অভিযোগ নেই।’ সাথে সেই জগত জয়ী হাসি।
তিনি আরও বলেন, ‘যখন ২-৩ ওভার বাকি আমার লক্ষ তখন বেশি করে চার-ছয় হাকানো। মূলতও আমার চেষ্টা থাকে দলের জন্য যতটুক সম্ভব রান তোলা। ম্যাচে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ব্যাট হাতে নামতে হয় আমাকে। তাই যদি আগে ব্যাট করতে নামলে সিংগেল আর ডাবল করে রান নেয়া। আর সহজ বলে আক্রমনাত্মক খেলা।’
হার্দিক পান্ডিয়া আর রিয়ান পরাগের আগে ৪১ রানে তিন উইকেট দশায় ব্যাট হাতে নামেন রিংকু। নিজের পরে আরও ব্যাটার আছে জেনে তিনিও চাপমুক্ত হয়ে চমৎকার এক ইনিংস উপহার দেন দলকে।
সেদিন কোচও তাকে দিয়ে দেন ওপেন চেক। বলেই বসেন, ‘মারতে যাও বল কো!’ অর্থাৎ মারতে থাকবে কেবল বলে বলে। রিঙ্কুও বাধ্য ছেলের মতো ১৮২.৭৬ স্ট্রাইক রেটে খেলেন পাঁচ চার আর তিন ছক্কার মার।
প্রতিভায় ভরা ভারতীয় দলের প্রতিটা সুযোগই যেন একটা করে অমাবশ্যার চাঁদ। সেই চাঁদ হাতে পেয়েও সবাই তা কাজে লাগাতে পারেনা। কঠিন বাস্তবতার কোলে শিক্ষা নেয়া রিঙ্কুও সেই চাঁদ হাতে পেয়েছিলেন। সর্বোচ্চটা কাজেও লাগান তিনি। ক্রিকেট নামক নাট্যমঞ্চে এ যেন বিধাতারই হাতে গড়া নাটক।