ঠিক অন্যান্য খেলার মতই, ক্রিকেটেও খেলোয়াড়েরা রেকর্ড গড়েন, রেকর্ড ভাঙেন, রেকর্ড পালটে দেন। ব্যাটিং হোক, বোলিং হোক কিংবা হোক শুধুই ফিল্ডিং; ক্রিকেটাররা তো এই রেকর্ড দিয়েই খেলাটাকে এত সুন্দর বানিয়েছেন।
এই রেকর্ড দিয়ে খেলাটাকে সুন্দর বানানো কয়েজন ক্রিকেটারের রূপকথা আজকে আমরা জেনে নেব। তারা কেবল রেকর্ড গড়েই থেমে থাকেননি – নিজেদের নাম তুলেছেন গিনেজ বুকের পাতায়।
- মহেন্দ্র সিং ধোনি
মহেন্দ্র সিং ধোনির নাম নানা সময়ে নানা কারণে মনে রাখতে হবে। তবে ক্রিকেট রেকর্ডে একটা জায়গাতে তিনি পিছিয়ে দিয়েছেন অন্যদের সবাইকে । সবচাইতে দামী ব্যাট দিয়ে ব্যাট করার কৃতিত্বটা যে তাঁরই।
তবে এতে যদি আপনি মনে করেন, নিজের গাঁটের টাকা পয়সা খরচ করে দামী ব্যাট কিনে ব্যাট করেছেন তিনি, তাহলে আপনার অনুমান ঠিক নয় । আসলে, ২০১১ বিশ্বকাপে আইকনিক শট খেলা ব্যাটটা বিক্রি হয়েছে ভারতীয় মুদ্রার হিসেবে ৮৩ লাখ রূপিতে!
- ভিরাগ মেয়ার
ভিরাগ মেয়ারকে আপনারা হয়তো এক নামে চিনবেন না। তবে ক্রিকেটার হিসেবে এই ছেলেটির আছে এমন এক রেকর্ড যা নেই কোন বড় নামের পাশেও। রেকর্ডটা নেট সেশনের।
৫০ ঘন্টা, ৫ মিনিট, ৫১ সেকেন্ড- টানা এতক্ষণ নেটে ব্যাটিং করেছেন ভিরাগ মেয়ার। ২০১৫ সালে এই কীর্তি গড়ে গিনেজ বুকে নিজের নাম উঠিয়ে ফেলেন তিনি। ২২ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর, টানা ৩ দিন পুনেতে বোলিং মেশিনকে সঙ্গ দিয়েছেন তিনি।
- অ্যান্থনি ম্যাকমোহন
যুবরাজ সিং ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম ব্যাটসম্যান, যিনি ছয় বলে ছয়টা ছক্কা হাঁকিয়েছেন।
কিন্তু যেকোন ধরণের ক্রিকেটে যুবরাজই প্রথম এই কাজটা করেননি। চেষ্টার লী স্ট্রিটের ক্রিকেটার এন্থনি ম্যাকমোহন যুবরাজেরও আগে ছয় বলে ছয় ছক্কা হাঁকিয়ে সবচেয়ে কম বয়সে ওভারের সব কয়টি বলে ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড গড়ে গিনেস বুকে নাম লেখান।
২০০৩ সালে ডারহামে যখন এন্থনি এই রেকর্ড গড়েন, তখন তাঁর বয়স কত ছিল জানেন? মাত্র ১৩ বছর!
- রাজা মহারাজ সিং
একজন ক্রিকেটার ৭২ বছর বয়সে অভিষেক ম্যাচ খেলছেন, এমন কি আপনি কখনও কল্পনা করতে পারেন? যদি না পারেন, তাহলে আপনি হয়তো রাজা মহারাজ সিংয়ের নামটাই শোনেননি।
১৯৫০ সালে যখন ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে অভিষেক হয় রাজা মহারাজ সিংয়ের। সেই ম্যাচে ‘বোম্বে গভর্নর ইলেভেন’কে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ৭২ বছর!
- শচীন টেন্ডুলকার
আচ্ছা, ক্রিকেট রেকর্ডের এমন কোন লিস্ট কি আছে যেখানে ‘শচীন রমেশ টেন্ডুলকার’ নামটা নেই? থাকার কথা নয়। তাহলে এখানে তাঁর নামটা না থাকাই হত আশ্চর্যজনক। এত এত রেকর্ড তিনি করেছেন, আজ তাঁর একটা অনন্য রেকর্ডের কথা বলব।
আইসিসি ওয়ার্ল্ডকাপে সবচাইতে বেশি রান করার রেকর্ডটা শচীন টেন্ডুলকারের। ২২৭৮ রান করে তিনি বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। শুধু তাই নয়, তাঁর কাছাকাছি থাকা ক্রিকেটারের রানও তাঁর চাইতে ৫০০ কম!
- শোয়েব আক্তার
এই রেকর্ডটা আপনাদের হয়তো জানা আছে। বলছি ক্রিকেটের সবচাইতে দ্রুততম ডেলিভারিটার কথা। ২০০৩ বিশ্বকাপে ১৬১.৩ কিমি/ঘন্টা বেগে বল ছুড়ে ক্রিকেটের দ্রুততম ডেলিভারিটার রেকর্ড গড়েন তিনি।
- জস বাটলার
তর্কসাপেক্ষে সাদা বলে এখন বিশ্বের অন্যতম প্রতাপশালী ব্যাটসম্যান জস বাটলার। নানা সময়ে নানা রেকর্ড করা জস বাটলার গিনেস বুকে নাম লিখিয়েছেন তাঁর জার্সি দিয়ে। কিভাবে?
বিশ্বকাপে শেষ ওভারে বাটলারের করা রান আউটটার কথা মনে আছে। ঐ রান আউটটার সময় বাটলার যে জার্সিটা পরে ছিলেন, সেই জার্সিটা বিক্রি হয়েছে ৬৫ হাজার ১০০ পাউন্ডে। এর চাইতে বেশি দামে কোন ক্রিকেটারের জার্সি বিক্রি হয়নি এর আগে।
- অ্যালিসা হিলি
অ্যালিসা হিলি, অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দলের অপরিহার্য সদস্য তিনি। এই পরিচয়টুকুর বাইরেও অ্যালিসার আরেকটু বাড়তি পরিচয় আছে, সেই পরিচয়টা অনন্য।
ক্রিকেটের সবচাইতে উঁচুতে ওঠা বল ক্যাচ ধরার রেকর্ডটি যে তাঁর দখলে। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ড্রোনের সাহায্যে ৮০ মিটার উঁচু থেকে ফেলে দেওয়া বল ক্যাচ ধরে তিনি এই অনন্য রেকর্ড গড়েন। এই রেকর্ড করার সময় তিনি ভেঙে ফেলেন ইংলিশ ক্রিকেটার ক্রিস্টিয়ান বমগার্টনারের ৬২ মিটার উঁচুতে ওঠা বলের ক্যাচ ধরার রেকর্ডটি!
এবার আপনিই বলুন, এই রেকর্ডগুলো কি ক্রিকেটকে সুন্দর করেনি?