হার্দিক পান্ডিয়া, স্পেশাল ট্যালেন্ট

এমন ইনজুরিতে পড়ে ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যায় অনেক ক্রিকেটারের। হার্দিক পান্ডিয়ারও শেষ হয় যেতেই পারতো। কিন্তু ইনজুরির বাঁধা জয় করে নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করেই ক্রিকেটে ফিরেছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। ইনজুরির পর থেকে যেন দেখা গিয়েছে পান্ডিয়া ২.০ কে।

সাদা বলের ক্রিকেটে ভারত দলের অপরিহার্য অংশ এখন পান্ডিয়া। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে টেস্ট দলের বাইরে এই অলরাউন্ডার। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন মনে করেন সাদা বলের ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করা পান্ডিয়ার এখন সময় হয়েছে লাল বলের ক্রিকেটে ফেরার।

ঘরের মাঠের সিরিজ গুলোতে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের খুব একটা প্রয়োজন পড়ে না ভারতের। স্পিন শক্তি দিয়েই প্রতিপক্ষকে কাবু করে আসছে টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু পান্ডিয়ার মত পেস বোলিং অলরাউন্ডের প্রয়োজন বোঝা যায় যখন দল বিদেশের মাটিতে সিরিজ খেলতে যায়। পান্ডিয়ার ইনজুরির প্রথম পর্যায়ে বেশ কিছুদিন শুধুমাত্র ব্যাটার হিসেবেই দলে খেলেছেন। তবে ভারত দল যে অলরাউন্ডার পান্ডিয়াকেই চায় সেটি বারবারই বলে এসেছিলেন তখনকার ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি।

পান্ডিয়ার অনুপস্থিতিতে অ্যাওয়ে সিরিজ গুলোতে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের ভূমিকায় খেলেছেন শার্দুল ঠাকুর। তবে শার্দুল ঠাকুরকে পুরোপুরি অলরাউন্ডার বলা যায় না। তিনি এমন একজন ক্রিকেটার যিনি বোলিংটা ভালো পারেন আর ব্যাটিংটা মোটামুটি কাজ চালানোর মত। তাই ভারতীয় দলে পান্ডিয়ার প্রয়োজন দেখছেন কিংবদন্তি পেস বোলিং অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন।

পান্ডিয়াকে বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যই ‘বিশেষ প্রতিভা’ বলে মনে করেন ওয়াটসন। চলমান লিজেন্ড ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় আসর চলাকালীন ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়াটসন বলেন, ‘যদি তাঁর শরীর টেস্ট ক্রিকেটের ধকল সামলাতে পারে তাহলে অবশ্যই তাঁর টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা উচিত। শুধুমাত্র ব্যাটার হিসেবেই তাঁর দক্ষতা দারুণ। তাঁর ব্যাটিং স্কিল এবং টেকনিক গুলো অসাধারণ।’

ওয়াটসন আরো বলেন, ‘যদিও সাদা বলে সে একজন পাওয়ার হিটার কিন্তু প্রায় সব দলই তাকে ব্যাটিং অর্ডারের ওপরের দিকে নিয়ে আসছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। আইপিএলে গুজরাটের হয়েও সে চার নম্বরে ব্যাট করেছে। এমন কি ওয়ানডে ক্রিকেটেও সে শুধুমাত্র একজন পাওয়ার হিটার নয় এখন। সুতরাং, শুধু ব্যাটিংয়ের দিক থেকে চিন্তা করলেও টেস্ট ক্রিকেটকে দেবার অনেক কিছুই আছে তাঁর।’

শুধু ব্যাটিং নয় পান্ডিয়ার বোলিং স্কিলেও মুগ্ধ ওয়াটসন, ‘যদি সে ফিট থাকে, বোলিংয়েও তাঁর স্কিল দারুণ। নতুন বলে সে সুইং করাতে পারে এবং ভারতের টেস্ট দলের জন্য সে অনেক বড় অবদান রাখতে পারে। আমার মনে হয় পুরো বিষয়টাই তাঁর শরীরের ওপর নির্ভর করছে যে সে পেস বোলিং অলরাউনন্ডার হিসেবে খেলে টেস্ট ক্রিকেটের ধকল নিতে পারবে কিনা। আমি চাই সে অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে আরো এক ধাপ উপরে নিয়ে যাক এবং তিন ফরমেটের ক্রিকেটেই পারফর্ম করুক কারণ বিশ্ব ক্রিকেটে সবচেয়ে বিশেষ প্রতিভা গুলোর মধ্যে সে অন্যতম।’

এদিকে চরম বাজে ফর্মে থাকা লোকেশ রাহুলকে একাদশ থেকে সরিয়ে শুবমান গিলকে সুযোগ দিয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। ইন্দোর টেস্টে গিল সেই আস্থার প্রতিদান দিতে না পারলেও আহমেদাবাদ টেস্টে ঠিকই নিজের জাত চিনিয়েছেন সেঞ্চুরি করে। তবে বরাবরই লোকেশ রাহুলের ব্যাটিংয়ের প্রসংশা করা ওয়াটসন এখনো থাকতে চান রাহুলের পাশেই। ওয়াটসন মনে করেন তুলনামূলক সহজ পিচে খেলার সুযোগ পেয়েছেন গিল যেটা রাহুল পাননি।

ওয়াটসন বলেন, ‘রাহুলের সবচেয়ে বড় গুণ ছিল সে নিজেকে মেলে ধরে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। শুবমান গিল অনেকটা ভালো ব্যাটিং সহায়ক পিচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছে অন্য টেস্ট গুলোর থেকে। গিল অনেক তরুণ, তাঁর মধ্যে তারুণ্যের সেই আগ্রাসন আছে। কিন্তু রাহুলের জন্য দুর্ভাগ্য ছিল শেষের দিকে এসে তাঁর জায়গা হারানোর ভয় পেয়ে বসেছিলোম। তাঁর সেই স্বাধীনতা ছিল না ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে নিজের স্কিল গুলো কাজে লাগানোর। আমি রাহুলের অনেক বড় একজন ভক্ত। তাঁর খেলা দেখতে আমি খুব পছন্দ করি। তাঁর স্কিল দুর্দান্ত। সব ধরণের কন্ডিশনে কঠিন বল গুলোও সে দারুণ ভাবে মোকাবেলা করত।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link