পাকিস্তানের মাটি, হ্যারি ব্রুকের ঘাঁটি – শুনতে রাজনৈতিক স্লোগান মনে হলেও বর্তমান ক্রিকেটের সাথে দারুণভাবে মানিয়েছে। কেননা পাকিস্তানের মাটিতে সত্যিকারের দূর্গ গড়ে তুলেছেন হ্যারি ব্রুক। ছয়টি টেস্ট শতকের চারটিই হাঁকিয়েছেন সেখানে, সবশেষ তিন ইনিংসেই অবশ্য সেঞ্চুরির হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি।
২০২২ সালে মুলতান টেস্টে এই ডান-হাতি করেছেন ১০৮ রান, পরের টেস্টে করাচির উইকেটে আবার খেলেছেন ১১১ রানের ইনিংস। দুই বছর পর আবারো মুলতানে ফিরেই আরো একটি একটি তিন অঙ্কের ইনিংসের দেখা পেলেন। সেটাও আবার ওয়ানডে মেজাজেই, পাক বোলারদের এতটুকু সুযোগও দেননি স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলার।
৫৫৬ রানের পাহাড় গড়ে পাকিস্তান বোধহয় তৃপ্তির হাসি হেসেছিল, কিন্তু জো রুটের ব্যাটে ভর করে প্রতিরোধ গড়ে তোলে ইংল্যান্ড। তখনো ম্যাচে ভারসাম্য ছিল, কিন্তু ব্রুক বাইশ গজে আসতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এককভাবে হাতে পেয়ে যায় সফরকারীরা।
উইকেটে আসার পর থেকেই তিনি দাপট দেখিয়েছেন উইলো হাতে, মাত্র ৪৯ বল লেগেছিল হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে এসে কিছুটা ধীর গতির হয়েছিলেন বটে, তবে বেশি বল খরচ করেননি। ১১৮ বল খেলেই পেয়ে যান হেলমেট খুলে উদযাপনের উপলক্ষ – ততক্ষণে দলের রানও চারশোর গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে।
শেষমেশ ১৪১ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন এই তারকা, সব মিলিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে তাঁর মোট রান এখন ৬০৯! ব্যাটিং গড় ১২১.৮ আর স্ট্রাইক রেট নব্বইয়ের কাছাকাছি। শাহীন শাহ আফ্রিদিদের তিনি কতটা পছন্দ করেন সেটা তাই স্পষ্ট।
আরো একটা পরিসংখ্যান দেয়া যাক, পাকিস্তানের মাটিতে চারটি বা এর বেশি টেস্ট শতক আছে কেবল তিনজন ব্যাটারের। এর মধ্যে অরবিন্দ ডি সিলভার লেগেছে ১৭ ইনিংস আর মহিন্দর অমরনাথের লেগেছে ১৮টি। অথচ হ্যারি ব্রুক স্রেফ ছয় ইনিংসেই তাঁদের ছুঁয়ে ফেলেছেন – চলতি সিরিজ তো বটেই ক্যারিয়ার জুড়ে তিনি যে পাকিস্তানে রাজত্ব করবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।