বাবা ভারতের, ছেলে ইংল্যান্ডের!

হ্যারির বয়স এখন আঠারো। ফাস্ট বোলিং দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে সে ওপেনিং ব্যাটার ও অফ-স্পিনার হিসেবে নিজেকে পরিপক্ব করেছে। বাবার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা অল্পতে থেমে গেলেও, ক্রিকেটে হ্যারির সফল পদচারণা হোক দীর্ঘ।

বাবা খেলতেন ভারতীয় জাতীয় দলের হয়ে। আর ছেলে খেলতে চলেছেন ইংল্যান্ড এর অনুর্ধ-১৯ দলের হয়ে। ক্রিকেটের কতোশতো মজার ঘটনার মতোই,  আরেকটি চমকপ্রদ ঘটনা হতে যাচ্ছে এটি। রুদ্র প্রতাপ সিং যিনি ক্রিকেট দুনিয়ায় পরিচিত আর পি সিং সিনিয়র নামে পরিচিত।

১৯৮৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুটি ওয়ানডে খেলেছিলেন এই ডানহাতি মিডিয়াম পেসার। তাঁরই ছেলে হ্যারি সিংকে শ্রীলঙ্কার অনূর্ধ্ব ১৯ বিরুদ্ধে আসন্ন হোম সিরিজের জন্য ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব ১৯ দলের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।

ভারতের হয়ে তাঁর ক্যারিয়ার ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত। স্বল্পকালীন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনে তেমন সফলতা না পেয়ে কোচিং এর দিকে মনোনিবেশ করেন তিনি। ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে ইংল্যান্ডে চলে যান আর পি সিং সিনিয়র এবং ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্লাব এবং ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) এর সাথে কোচিং অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহণ করেন।

ল্যাঙ্কাশায়ার দ্বিতীয় একাদশের হয়ে হ্যাঁরি ওপেনিং করে থাকেন। সিং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘কয়েকদিন আগে, আমরা ইসিবি থেকে একটি কল পেয়েছি যে হ্যারিকে ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের জন্য বাছাই করা হয়েছে। সে শ্রীলঙ্কার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলবে।

তবে হ্যারি প্রথম নন, এর আগে বেশ কিছু দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভুত ক্রিকেটাররাই ইংল্যান্ডের যুব স্তরের হয়ে খেলেছিলেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে সিনিয়র পর্যায়ে টিকে থাকার সংখ্যাটা খুব কম। ছেলেকে সামনে আরও যে অনেক চ্যালেঞ্জ এর মুখোমুখি হতে হবে এই বিষয়টি সম্পর্কে আরপি সিং অবগত।

আর পি সিং সিনিয়র

এটাকে ছেলের ক্যারিয়ারের একটি ধাপ হিসেবে নিচ্ছেন তিনি, অর্জন নয়। তিনি বলেন, ‘কাজটা সহজ নয়, শীর্ষ ধাপে পৌছাতে হলে কিছুটা ভাগ্যের এবং প্রচুর রান করা দরকার। আমি নব্বই এর দশকে এমন অনেক ক্রিকেটারকে দেখেছি যারা ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল করেছিলেন, কিন্তু তারা ভারতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করার সময় মারাত্মকভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন। হ্যারি বড় হওয়ার সাথে সাথে তাকে সেই টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর সমন্বয় করতে হবে যা প্রত্যেক সফল ক্রিকেটার করে থাকেন।’

হ্যারি আট বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন। সিং জানান যে তাঁর ছেলে ফুটবলেও ভালো ছিল, কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথে ক্রিকেটের প্রতি তার আগ্রহ বাড়তে থাকে। তখনই পরিবারের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয় যে, তার একমাত্র ছেলে বাবার কোচিংয়েই ক্রিকেট শিখবে ও খেলবে। হ্যারির বয়স এখন আঠারো। ফাস্ট বোলিং দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে সে ওপেনিং ব্যাটার ও অফ-স্পিনার হিসেবে নিজেকে পরিপক্ব করেছে।

হ্যারিকে ভালো ব্যাটার বানানোর জন্য মুম্বাইয়ের দিলীপ ভেঙসরকার একাডেমিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর পি সিং। যেখানে সে সাবেক ভারতীয় অধিনায়কের নির্দেশনায় প্রশিক্ষণ নিবে। সিং-এর ইচ্ছে হ্যারিকে এমন একজন অলরাউন্ডার বানানোর, যাতে তিনি সব ধরনের সারফেসে খেলতে পারবেন।

আর পি সিং সিনিয়রের মেয়েটিও মেডিসিনে ক্যারিয়ার বেছে নেওয়ার আগে ল্যাঙ্কাশায়ার অনূর্ধ্ব ১৯ দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। বাবার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা অল্পতে থেমে গেলেও, ক্রিকেটে হ্যারির সফল পদচারণা হোক দীর্ঘ। ক্রিকেটবিশ্ব আবির্ভাব হোক দারুণ এক অলরাউন্ডারের।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...