শুভমান ‘অবিশ্বাস্য সুন্দর’ গিল

অবিশ্বাস্য, অতিমানবীয়, ভয়ংকর সুন্দর! এবারের আইপিএলে শুভমান গিলের ব্যাটিংকে বর্ণনা করতে কোনো বিশেষণই বোধহয় যথেষ্ট নয়। উইকেটের চারপাশে মোহনীয় সব শটের পসরা সাজিয়ে গোটা বিশ্বকে গুণমুগ্ধ ভক্তে পরিণত করেছেন এই তারকা। 

অবিশ্বাস্য, অতিমানবীয়, ভয়ংকর সুন্দর! এবারের আইপিএলে শুভমান গিলের ব্যাটিংকে বর্ণনা করতে কোনো বিশেষণই বোধহয় যথেষ্ট নয়। উইকেটের চারপাশে মোহনীয় সব শটের পসরা সাজিয়ে গোটা বিশ্বকে গুণমুগ্ধ ভক্তে পরিণত করেছেন এই তারকা।

বয়সভিত্তিক দলে থাকার সময়েই পেয়ে গিয়েছিলেন ভবিষ্যত তারকার তকমা। জাতীয় দলে প্রতিষ্ঠিত হতে খানিকটা সময় লাগলেও জানান দিয়েছেন নিজের সামর্থ্যের। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে কেবলমাত্র লাল বলের ক্রিকেটে ভাবা হলেও তিন ফরম্যাটেই যেন অপ্রতিরোধ্য এই তারকা।

আইপিএল ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের তাঁর তারকাবহুল টপ অর্ডারে সুযোগ না পেয়ে ব্যাট করতে না পেরে নামতে হতো নিচের দিকেই। ফলে নিজের প্রতিভার পূর্ণ প্রতিফলন দেখাতে পারছিলেন না মোটেই/ গত মৌসুমেই তাই দল বদলে নাম লেখান গুজরাট টাইটান্সে।

নতুন দলে নিজের প্রিয় ওপেনিং পজিশন ফিরে পেয়েই যেন নিজের সেরা ছন্দে শুভমান। ঋদ্ধিমান সাহাকে নিয়ে সাথে গড়ে তোলেন দারুণ এক উদ্বোধনী। প্রথম মৌসুমেই গুজরাটকে শিরোপা জেতাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন এই তারকা।

এবারের মৌসুমে যেন আরো পরিণত এবং বিধ্বংসী রূপে ফিরে আসেন এই তারকা। জাতীয় দলের দারুণ ফর্মটা টেনে আনেন গুজরাটের জার্সিতেও। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে খানিকটা ধীরগতির ব্যাটিং করলেও এবারের মৌসুমে ইনিংসের শুরু থেকেই দারুণ মারকুটে এই তরুণ। প্রতিপক্ষের বোলারদের বিন্দুমাত্র সুযোগ দিচ্ছেন না। ভালো বলকে সমীহ করে ইনিংস বড় করার পাশাপাশি বাজে বলকে সীমানাছাড়া করতে দুবার ভাবেননি।

সর্বশেষ চার ম্যাচে তো রীতিমতো অতিমানবীয় ফর্মে আছেন গিল। তিন বারই সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন, পার্পল ক্যাপটা তো একপ্রকার জিতেই গেছেন। আইপিএলে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে এক মৌসুমে আটশো রান ছাড়িয়েছেন।

প্লে অফে প্রথম কোয়ালিফায়ারে প্রত্যাশামাফিক ব্যাটিং করতে পারেননি। সেই কারণে নিজের উপর খানিকটা হতাশও ছিলেন এই তারকা। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে হারের হতাশার রাগই কিনা শুভমান ঝাড়লেন মুম্বাইয়ের বোলারদের উপর।

ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে এদিন শুভমান যেন অতিমানব হয়ে উঠেছিলেন। উইকেটের চারপাশে দারুণ সব শট খেলে অবলীলায় বলকে সীমানাছাড়া করেছেন। ইনিংসের শুরুতে খানিকটা ধীরগতির শুরু করলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে রীতিমতো কচুকাটা করতে থাকেন বোলারদের।

ফিফটিতে পৌঁছাতে ৩২ বল খেলতে হলেও, পরের ৫০ করতে লাগে মাত্র ১৭ বল। ৪৯ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেবার পরও থামেননি, দলীয় সংগ্রহকে মুম্বাইয়ের নাগালের বাইরে নিয়ে যাওয়াই ছিল তাঁর লক্ষ্য। শেষপর্যন্ত সাত চার এবং দশ ছক্কায় ৬০ বলে ১২৯ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন শুভমানের। এবারের আসরে এটা এই তারকার তৃতীয় সেঞ্চুরি।

এক সময়ে ভাবা হতো ২০১৬ মৌসুমে বিরাট কোহলির গড়া ৯৭৩ রানের রেকর্ড ভাঙতে পারবেন না কেউই। কিন্তু এবারের মৌসুমে যেন সেই রেকর্ড ভাঙার লক্ষ্যেই এগোচ্ছেন শুভমান, ইতোমধ্যেই করে ফেলেছেন ৮৫১ রান। ফাইনালে রেকর্ড নিজের করে নেয়ার কাজটা কঠিন হলেও শুভমানের ফর্ম বিবেচনায় অসম্ভব নয় মোটেই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...