টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক বিরাট কোহলি। নিজের মেয়াদের ৬৮ ম্যাচের মাঝে জয় পেয়েছেন ৪০ ম্যাচেই। ঘরের মাঠ ছাপিয়ে ভারত প্রথম বারের মত সেনা কন্ডিশনে জয় পেতে শিখেছে তাঁর নেতৃত্বেই।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নাগপুরে প্রথম টেস্ট জয়ের পর ভারতের বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মাও স্বীকার করে নিলেন বিরাটের অধিনায়কত্ব থেকে শিক্ষা নেয়ার কথা।
রবি শাস্ত্রীর সাথে জুটি গড়ে ভারতীয় টেস্ট দলকে আইসিসি র্যাংকিংয়ের এক নম্বর দলে পরিণত করেছিলেন কোহলি। স্পিননির্ভর এক দলের তকমা থেকে বেরিয়ে এসে পেস বোলারদের সুযোগ দিয়েছেন মেলে ধরবার। জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ, ইশান্ত শর্মাদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন দুধর্ষ এক পেস অ্যাটাক।
শাস্ত্রীর অধীনেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জেতার পাশাপাশি পেস বোলিং নির্ভর কন্ডিশনে টেস্ট জিততে শুরু করে ভারত। বলা যায়, ভারতীয় টেস্ট দলে নতুন এক যুগের সূচনা করেছিলেন এই জুটি।
বোর্ডার – গাভাস্কার ট্রফির প্রথম টেস্টে অজিদের বিপক্ষে ইনিংস এবং ১৩২ রানের বড় জয়ের পর রোহিত শর্মা তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন কোহলির প্রতি। জানালেন খেলোয়াড় হিসেবে খুব কাছে থেকে কোহলির অধিনায়কত্ব দেখে শেখার কথা।
তিনি বলেন, ‘আমি যখন কেবল খেলোয়াড় ছিলাম, তখন বিরাট অধিনায়ক ছিল। তখন খেয়াল করেছি উইকেট না আসলেও বিরাট কখনো প্রতিপক্ষের উপর থেকে চাপটা সরতে দিত না। কারণ ও বিশ্বাস করত চাপে পড়লে প্রতিপক্ষ একটা সময়ে এসে ভুল করবেই। বিরাটের অধিনায়কত্ব দেখেই এটা শিখেছি আমি।’
রোহিত আরো বলেন, ‘অধিনায়ক হওয়ার পর আমিও একই নীতি মেনে চলার চেষ্টা করছি। প্রতিপক্ষের উপর চাপটা বজায় রাখো, প্রতি বলে উইকেটের আশা না করে বরং ভালো জায়গায় একটানা বল করে যাও।’
নাগপুরে স্বপ্নের মত এক টেস্ট কাটিয়েছেন রোহিত। বাকি ব্যাটাররা টিকতে না পারলেও রোহিত তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি। এতেই গড়েছেন বিরল এক কীর্তি, ভারতের ইতিহাসে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে তিন ফরম্যাটেই সেঞ্চুরি আছে তাঁর।
প্রথম ইনিংসে জাদেজার তোপে পড়ে ১৭৭ রানে অল আউট হয় অস্ট্রেলিয়া। মার্নাস লাবুশেন এবং স্টিভেন স্মিথ দুজনেই উইকেটে সেট হলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। এরপরই শুরু হয় রোহিত ম্যাজিক।
স্পিন নির্ভর পিচে বাকি ব্যাটসম্যানরা যেখানে হিমশিম খেয়েছেন, সেখানে সাবলীল ছিলেন রোহিত। তাঁর ক্রমাগত সুইপ কিংবা রিভার্স সুইপে দিশেহারা হয়েছেন অজি বোলাররা। তাঁর ১২০ রানের ইনিংসের ফলেই প্রথম ইনিংসে চারশো ছাড়ায় ভারত, পেয়ে যায় ২২৩ রানের বড় লিড।
এরপরের কাজটা সেরেছেন স্পিনাররা, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের পাঁচ উইকেটে সফরকারীরা গুটিয়ে যায় মাত্র ৯১ রানে। জাদেজা এবং অশ্বিন ডুয়ো মিলেই প্রতিপক্ষের ১৫ উইকেট শিকার করেন। সাত উইকেটের পাশাপাশি ৭০ রান করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন ছয় মাস পর মাঠে ফেরা রবীন্দ্র জাদেজা।