অতি পরীক্ষণেই অফ ফর্মে হৃদয়

মহাদেশীয় আসরের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনি ব্যাট করেছিলেন পাঁচ নম্বরে। পরের ম্যাচে আবার নামানো তিন নম্বরে; সেখানে এক ম্যাচের বেশি স্থায়ী হননি, পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট করেন চিরচেনা পাঁচ নম্বরেই।

২০২৩ সালের মার্চ; ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ড সিরিজে অভিষেক হয় তাওহীদ হৃদয়ের। অভিষেক ম্যাচেই খেলেন ৯২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস, পরের ম্যাচে এক রানের জন্য ফিফটি মিস করেন। মাস দেড়েক পর আবারও মাঠে নামেন তিনি, রানও করেন। সবমিলিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ ইনিংসে তাঁর মোট রান ২৪৯, আর গড় ৪৯.৮০।

যেকোনো বিচারে এমন পরিসংখ্যান প্রশংসনীয়; তাই তো আফগানিস্তানের বিপক্ষে তেমন ভাল না করলেও এশিয়া কাপে বড় প্রত্যাশা ছিল তাঁকে ঘিরে। কিন্তু সমস্যার শুরুটা হয় এই টুর্নামেন্টেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম থেকে পাঁচ নম্বরে পারফর্ম করা হৃদয়কে গিনিপিগ বানিয়ে পরীক্ষা করতে থাকে টিম ম্যানেজম্যান্ট।

এই যেমন মহাদেশীয় আসরের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনি ব্যাট করেছিলেন পাঁচ নম্বরে। পরের ম্যাচে আবার নামানো তিন নম্বরে; সেখানে এক ম্যাচের বেশি স্থায়ী হননি, পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট করেন চিরচেনা পাঁচ নম্বরেই। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচে ব্যাট করতে নামেন চার উইকেট পড়ার পরে!

সেদিন অবশ্য ৮২ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছিলেন তিনি; দলকে জেতানোর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছিলেন একাই। পরের ম্যাচেও ছয় নাম্বারেও নামেন তিনি, ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচেও করেছিলেন ফিফটি। ফলে মিডল অর্ডারেই নিজের সেরাটা দিতে পারেন এই তরুণ, সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়।

কিন্তু সেসবে তোয়াক্কা না করেই হৃদয়কে নিয়ে বিশ্বকাপেও পরীক্ষা চলতেই থাকে। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টাইগাররা চার উইকেট হারালেও ব্যাটিংয়ে দেখা যায়নি তাঁকে। কারণটা বোঝা যায় পরের ম্যাচগুলোতে; ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডের সাথে সাত নম্বর ব্যাটার হিসেবে এই ডানহাতিকে ব্যবহার করে টিম ম্যানেজম্যান্ট।

ফলাফল, উড়ন্ত ফর্মে থাকা হৃদয় রান করতেই ভুলে যান। তাঁর সবচেয়ে শক্তির জায়গা স্ট্রাইক রোটেশন, সাত নম্বরে নেমে সেটাই করতে পারছিলেন না তিনি।

ভারতের বিপক্ষে অবশ্য পাঁচ নম্বরে ফেরানো হয় তাঁকে। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে, আত্মবিশ্বাস তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল। সেজন্যই ৩৫ বলে ১৬ রানের বিভীষিকাময় একটা ইনিংস খেলে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেছিলেন। আর শেষমেশ বাদ পড়েছেন দল থেকে।

বিশ্বকাপের আগে যে ব্যাটসম্যানের গড় ছিল ৪০ ছুঁই ছুঁই, স্ট্রাইক রেট ছিল ৯০ এর উপরে; সেই ব্যাটারের গড় এখন ৩৫ এর ঘরে আর স্ট্রাইক রেট নেমে এসেছে ৮০-তে। ব্যাটিং লাইনআপের অন্যতম নির্ভরযোগ্য সদস্যের এমন বিধ্বস্ত রূপের জন্য দায়ী দলের অতি-পরীক্ষণের মানসিকতা।

পাঁচ আর ছয় নম্বরে চমৎকার পারফরম্যান্স উপহার দেয়া সত্ত্বেও বারবার তাঁকে জায়গা বদলাতে হয়েছে – আর এখন লড়তে হচ্ছে অফ ফর্মের সাথে।

hrido

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...