টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষ দল অস্ট্রেলিয়া। চলতি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও যাদের জায়গা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু উড়ন্ত এই অস্ট্রেলিয়াকেই এবার মাটিতে নামিয়েছে ভারত। নিজেদের মাটিতে ৪ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে অজিদের সামান্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগটাও দেয়নি ভারত। ইনিংস ও ১৩২ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
ভারতের মাটিতে আসলেই যেন খাপছাড়া হয়ে যায় অজিরা। এমন তিক্ততার ইতিহাস অবশ্য বেশ পুরনোই। প্রায় দেড় যুগ ধরে ভারতের মাটিতে কোনো টেস্ট সিরিজ জেতা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। এবার সেই ইতিহাস বদলাতেই ভারতে এসেছিল প্যাট কামিন্সের দল।
কিন্তু সেটি তো হয়নি। বরং ন্যূনতম লড়াইয়ের ছবিও ফুটে ওঠেনি। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া তাও শতরান ছাড়িয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে লাবুশানে, স্মিথরা মিলেও দলের রান ১০০ রান অতিক্রম করতে পারেননি। ৯১ রানেই বাক্সবন্দী হতে হয়েছে ক্যাঙ্গারুদের।
প্রথম ম্যাচের এমন হারের পর এখন পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে চোখ অজিদের। কিন্তু এমন একপেশে ম্যাচেও ষড়যন্ত্র খুঁজছে অস্ট্রেলিয়ানরা। সাবেক এক অজি ক্রিকেটারের মত, অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর জন্য স্পিন সহায়ক উইকেট বানিয়েছে ভারত।
এমন অভিযোগ অবশ্য এই সময়ে একেবারেই ধোপে টিকে না। কারণ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলা হলেও তো তাদের শক্তিমত্তা অনুযায়ী উইকেট পেস বোলারদের জন্য স্বর্গ হয়ে যায়। স্বাগতিক দেশ নিজেদের শক্তির জায়গা নিয়ে উইকেট বানায়। এটা ক্রিকেটে মোটেই নতুন কিছু নয়।
তবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার দাবি, নাগপুর টেস্টের আগে একই উইকেটে অনুশীলন করেছিল তারা। কিন্তু ম্যাচ পরিস্থিতিতে সেই উইকেটের ধরন একেবারেই বদলে যায়। এ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া কোচিং স্টাফের একজন বলেন, ‘আমরা যখন অনুশীলন সেশন ত্যাগ করতাম তখন স্টেডিয়ামের গ্রাউন্ডসম্যান ঢুকত। তাই উইকেটের ধরন বদলে যাওয়া নিয়ে আমাদের তো সন্দেহ থাকবেই।’
তিনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘একটা ম্যাচ তিন দিনে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এটা টেস্ট ক্রিকেটে খুব কমই ঘটে। তাই আমরা পিচ যারা নিয়ন্ত্রণ করে তাদের আরো গুরুত্বের সাথে দেখার জন্য অনুরোধ করেছি।’
তবে অস্ট্রেলিয়ার কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড আবার ভিন্ন কথা বলেছেন। তিনি মনে করেন, এমন কিছু হয়ে থাকলেও টপ অর্ডারদের সেই প্রতিকূলতায় ভাল করা উচিৎ ছিল। অজি ব্যাটারদের এমন প্রতিকূল কন্ডিশনে আরো ভাল কিছু করা উচিৎ ছিল।
উইকেট নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। অন্তত অস্ট্রেলিয়ার জন্য তো নয়-ই। বছর খানেক আগের এক অ্যাশেজেই উইকেট নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন তখনকার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। তবে এমন অভিযোগ তোলা মানে দিনশেষে শুধুই বিতর্ককে উষ্কে দেওয়া হয়। এর বাইরে কিছুই হয় না।
আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে আবারো মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। সিরিজ জিততে হলে এ ম্যাচ জিততেই হবে অজিদের। নয়তো পুরনো ইতিহাস এবারও সঙ্গী হবে অস্ট্রেলিয়ার সাথে।