টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার জুড়ে পঞ্চাশোর্ধ গড় যার সঙ্গী, তিনি কিনা খেললেন ১৬ বলে ২৯ রানের ইনিংস। এমন ইনিংস নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। হয়তো সমালোচনারও অবকাশ নেই। তবে ৪৩০ দিন পর যখন এই ফরম্যাটে ভারতের হয়ে ফিরলেন, তখন এমন ইনিংসও যেন স্বস্তির পালে কিছুটা হাওয়া দিচ্ছে। কারণটা, ইতিবাচক ব্যাটিং। মাস পাঁচেক পরে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বিরাটের এমন আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ব্যাটিংটাই দেখতে চেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া।
অবশেষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফিরলেন বিরাট কোহলি। ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন সেই ২০২২ সালের নভেম্বরে। ২০২৩ সালে টি-টোয়েন্টি না খেলা বিরাট ২০২৪-এ এসে ফিরলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। আর এ দিন ব্যাট হাতে আক্রমণাত্বক বিরাটকে আবিষ্কার করেছে ভারত।
শুরুতে রয়েশয়ে খেলবেন, এরপর সময় গড়ালেই নিজের ব্যাটিংয়ে ধরন পাল্টে আক্রমণাত্বক ভূমিকায় আবির্ভূত হবেন। এটাই বিরাটের স্বভাবসুলভ ব্যাটিং। কিন্তু আফগানিস্তানের দেওয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্যে বিরাট ব্যাটিং করলেন একদম সময়োপযোগী। আগের ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও শূন্য রানে ফিরেছিলেন রোহিত। তাতে রানের গতিটা থেমে যাওয়ার শঙ্কা হয়েছিল বটে।
তবে বিরাট সেই পরিস্থিতি সামলেছেন দারুণভাবে। ইনিংস বড় করতে পারেননি। তবে যতটুকু সময় ক্রিজে ছিলেন, পুরোটাতেই ব্যস্ত ছিলেন। রান বের করেছেন, গ্যাপ খুঁজে বাউন্ডারি আদায় করে নিয়েছেন। শুরু থেকেই যেমন ব্যাটিং করেছেন, তাতে মনেই হয়নি, বিরাট এই ফরম্যাটে ছিলেন না ৪৩০ দিন।
ফজল হক ফারুকীর বল মিড অনে ঠেলে নিজের ইনিংস শুরু করেছিলেন কোহলি। তবে রান পাননি। অবশ্য রান বের করতে সময় নেননি। মুজিব উর রহমানের বিপক্ষে খেলা পরের বলটিতেই এক্সট্রা কভার অঞ্চল দিয়ে চার মারেন তিনি।
এরপর ঐ ওভারেই স্লগ শটে বাউন্ডারি পার করেন তিনি। মুজিবের বলে এরপরেও চার বের করেন কোহলি। মাঝের দুই ওভারে নাভিন উল হকের বলে দুটি চার মারেন তিনি। কোহলির ২৯ রানের ইনিংসটিও থামে তাঁর বলেই। ইব্রাহিম জদরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
প্রথম ওভারেই রোহিতের আউটে দারুণ শুরু পেয়েছিল আফগানিস্তান। তবে তাতে চড়া মূল্য দিতে হয়নি ভারতকে। কোহলি-জয়সওয়ালের জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তাঁরা। কোহলি আউট হওয়ার আগে ৫ ওভারের মাঝেই ৫৮ রান তুলে ফেলে ভারত।
ফেরার ম্যাচে একটি রেকর্ড অবশ্য হাতছানি দিচ্ছিল বিরাত কোহলিকে। ৩৫ রান করলেই স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ভারতের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ১২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারতেন কোহলি। কিন্তু তিনি করেছেন ২৯ রান। অর্থাৎ আর ৬ রান করলেই এই কীর্তিতে নাম লেখাবেন ভারতীয় এ ব্যাটার।
অতি নাটকীয় কিছু না হলে আসন্ন বিশ্বকাপ দলে নিশ্চিতভাবেই থাকছেন কোহলি। তবে ভারতের জন্য স্বস্তির ব্যাপার হলো, এই সংস্করণে সাবলীল কোহলিকে ফিরে পাওয়া। মাত্র ২৯ রানের ইনিংস দিয়েই এ ব্যাটার বুঝিয়ে দিয়েছেন, দলে তাঁকে কতটা দরকার। কখনোই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না জেতা কোহলির ক্যারিয়ারে এটাই অন্যতম এক অপ্রাপ্তি। এবার নিশ্চয়ই সেই অপ্রাপ্তি ঘুচাতে চাইবেন তিনি।