কেনেডি ওটিয়ানো, নস্টালজিক কেনিয়ার ব্যাটিং স্তম্ভ

এখন হারিয়ে গেলেও লম্বা একটা সময় ক্রিকেট মানচিত্রে শক্তিশালী অবস্থান ছিল কেনিয়ার। গত শতাব্দীর শেষ দিক থেকে শুরু চলতি শতাব্দীর শুরুর দিকে কেনিয়াকে গুরুত্বের সাথেই দেখতো অন্য দেশগুলো।

এখন হারিয়ে গেলেও লম্বা একটা সময় ক্রিকেট মানচিত্রে শক্তিশালী অবস্থান ছিল কেনিয়ার। গত শতাব্দীর শেষ দিক থেকে শুরু চলতি শতাব্দীর শুরুর দিকে কেনিয়াকে গুরুত্বের সাথেই দেখতো অন্য দেশগুলো।

দেশটিকে এমন অবস্থায় আনতে স্টিভ টিকলো, রবীন্দু শাহ, মার্টিন সুজির মতই অসামান্য অবদান রেখেছিলেন একজন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান – তিনি কেনেডি ওটিয়ানো ওবুয়া।

অন্যান্য খেলোয়াড়ের মতই উত্থান পতন ছিল কেনেডি ওটিয়ানোর ক্যারিয়ারে; তবে যতবারই বাজে খারাপ করার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন, ততবারই তিনি ফিরে এসেছিলেন আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে।

১৯৯৫ সালের আগস্টে ভারত এ দল কেনিয়া সফরে এসেছিল; প্রথমে হালকা ভাবে নিলেও তাঁদের অবাক করে দিয়েছিল স্বাগতিকদের পারফরম্যান্স। এমনকি এক ম্যাচে আট উইকেটের বিশাল ব্যবধানে ভারত এ দলকে হারিয়ে দিয়েছিল আফ্রিকান দলটি।

আর পুরো সিরিজ জুড়েই রান করেছিলেন কেনেডি। কয়েক মাস পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও নিজের সামর্থ্য প্রমাণ দিয়েছিলেন এই উইকেটরক্ষক। মার্ক ওয়াহ এর দারুণ ব্যাটিংয়ে ৩০৪ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ার পর বল হাতেও শুরুটা ভাল করেছিল অজিরা।

তবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাঁদের ছাড় দেননি মিডল অর্ডারে ব্যাট করা ওটিয়ানো। মরিস ওদুম্বেকে সঙ্গে নিয়ে একশত রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানো কেনেডি ওবুয়ার ক্যারিয়ারের অন্যতম স্মরণীয় ঘটনা।

কেনিয়ার যে সব খেলোয়াড়েরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের খেলা দেখে বড় হয়েছিলেন, তাঁরা হুট করেই আন্তর্জাতিক ম্যাচে উইন্ডিজদের হারিয়ে দিয়েছিল। ১৯৯৭ সালে প্রেসিডেন্টস কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওপেনিং করতে নেমে ২২৫ রানের বিশাল জুটি করেছিলেন কেনেডি ওটিয়ানো।

সেদিন কেনেডি খেলেছিলেন ১৪৪ রানের অতিমানবীয় এক ইনিংস আর দীপক চুদাসামা করেছিলেন ১২২ রান। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ভাল করতে না পারলেও দুই বছর পর ঠিকই ভারতকে হারিয়ে দিয়েছিলেন কেনেডি।

এছাড়া ২০০৩ বিশ্বকাপে কেনিয়াকে সেমিফাইনালে নিতে বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। সেই টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাঁর ৬০ রানের ইনিংস দুই দলের ব্যবধান নির্ধারণ করে দিয়েছিল।

আবার সেমিতে ভারতের সঙ্গেও এই ব্যাটারের কাছ থেকে এসেছিল ৭৯ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। বাকি অনেক কেনিয়ান গ্রেটের মত ওটিয়ানোর জন্যও ২০০৩ বিশ্বকাপটা স্মরণীয় হয়ে আছে।

পরবর্তীতে খানিকটা ছন্দ হারিয়েছিলেন কেনেডি ওটিয়ানো, একইসাথে কেনিয়ার ক্রিকেটেও নেমে এসেছিল দুর্নীতি আর বিশৃঙ্খলা। ফলে ২০০৯ সালে একরকম বাধ্য হয়েই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।

সব মিলিয়ে ৯০ ম্যাচ খেলে দুই হাজারের বেশি রান করেছেন কেনেডি ওটিয়ানো, জন্ম দিয়েছেন বহু আইকনিক মুহূর্তের। কেনিয়ার অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে তাই মনে রাখতে হবে এই ডানহাতি ব্যাটারকে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...