এবাদতের ফেরার সংগ্রামে সঙ্গী খালেদ

বলা হয় ক্রিকেট 'পারফর্মিং আর্ট'। আর যেকোন শিল্পই চর্চায় রাখতে হয় প্রতিনিয়ত। অথচ সাত মাস ধরে বল হাতে কোন ধরণের অনুশীলনই করা হয়নি এবাদত হোসেনের।

প্রায় সাত মাস ধরে মাঠের বাইরে এবাদত হোসেন। ঠিক মাঠের বাইরে নন। প্রতি নিয়তই তিনি সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজেকে ফিরে পাওয়ার লড়াইটা যে চলছে বহুদিন ধরেই। তবে তিনি ক্রিকেটের বাইরে অনেকদিন সেটা তো অস্বীকার করবার উপায় নেই।

বলা হয় ক্রিকেট ‘পারফর্মিং আর্ট’। আর যেকোন শিল্পই চর্চায় রাখতে হয় প্রতিনিয়ত। অথচ সাত মাস ধরে বল হাতে কোন ধরণের অনুশীলনই করা হয়নি এবাদত হোসেনের। লম্বা সময় তো তিনি হেঁটেছেন ক্র্যাচ হাতে। সময়ের পরিক্রমায় হাত মুক্তি পেয়েছে ক্র্যাচ থেকে। কিন্তু শুরু হয়েছে আসল চ্যালেঞ্জ।

ছন্দময় বোলিংয়ের নিদর্শন দেখাতে শুরুই করেছিলেন এবাদত। ঠিক এমন এক মুহূর্তেই চোটে পড়েন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চোট নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন, তাতে করে খেলা হয়ে ওঠেনি বিশ্বকাপ। নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলার সুযোগটা হয়েছে হাত ছাড়া। নিতান্ত কষ্ট বুকে চেপে রেখে অপেক্ষাই স্রেফ করেছেন এবাদত।

মাঝে ঘটে গেছে কতকিছুই। এবাদত ছিলেন না কোন ধরণের আলোচনার মাঝে। এবার তার ফেরার পালা। ঐ যে বললাম ক্রিকেট ‘পারফর্মিং আর্ট’, তাইতো এবাদতকে পারফর্ম করতে হবে সামনের দিনগুলোতে। সেসবের আগে তো ছন্দটা ফিরে পাওয়া প্রয়োজন। বলের সাথে হাতের মেলবন্ধন, মতিষ্ককে চোখের শাসন- এসব কিছু আবার পুনঃরায় রপ্ত করতে হচ্ছে তাকে।

ঠিক যেমনটা তিনি করেছিলেন ফেলে আসা কৈশরে। একেবারে শুরু থেকেই যেন শুরু করতে হচ্ছে তাকে। তাইতো পপিং ক্রিজে দাঁড়িয়ে থেকে বল ছাড়ার অবস্থান ঠিক করে নিচ্ছিলেন তিনি। খালি পায়ে মিরপুর একাডেমি মাঠে দীর্ঘ সময় সেই কাজটিই আয়ত্ত্বে আনার চেষ্টা করেছেন এবাদত হোসেন। একটা লম্বা বিরতিতে বলের ‘রিলিজ পয়েন্ট’ নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয় বোলারদের।

ব্যতিক্রম ঘটেনি এবাদতের ক্ষেত্রেও। ‘লেভেল ওয়ান’ থেকেই বল হাতে ফেরার লড়াইটা শুরু করেছেন এবাদত হোসেন। এদিন অবশ্য তিনি একা ছিলেন না। তার সঙ্গী ছিলেন খালেদ আহমেদ। খালেদ অবশ্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন আসন্ন বিপিএলের জন্য। ফরচুন বরিশালের ডেরায় যুক্ত হয়েছেন সিলেটের এই পেসার।

নিজেকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকা এবাদত অবশ্য খালেদকেও দীক্ষা দিয়েছেন। ইয়োর্কার লেন্থে স্ট্যাম্প রেখে খালেদকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন। খালেদ সেই লেন্থে ঠিকঠাক বল ফেলে স্ট্যাম্পে আঘাত করার পর, এবাদত উদযাপনের ভঙ্গিমায় দু’হাত আকাশ পানে তুলে যেন গর্বের বহিঃপ্রকাশই করলেন।

খালেদ, এবাদত দুইজনই তো উঠে এসেছেন সিলেট থেকে। দুইজন সাদা পোশাক দিয়ে শুরু করেছেন জাতীয় দলের ক্যারিয়ার। একটা সময় নিজের সক্ষমতার দ্যুতি ছড়িয়ে এবাদত হয়েছেন পেস ব্যাটারির অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেদিক থেকে একটু পিছিয়েই রয়েছেন খালেদ। নিজের দুর্দিনেও তাই খালেদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এবাদত। সৌহার্দ্য়ের সজীবতা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াশ।

এবাদতের পুরোদমে ফিরে আসতে সময় লাগবে আরও বেশকিছু দিন। ইনজুরির প্রাক্কালের এবাদতকে হয়ত খুব সহসাই ফিরে পাওয়া যাবে না। সে সময়ের মাঝে খালেদ আহমেদ সক্ষমতা বিকশিত করলে বরং মন্দ হয় না।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...