বার্তা সংস্থা পিটিআই ফোন করেছিলো বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) শীর্ষ এক কর্মকর্তাকে। তারা জানতে চাচ্ছিলো, ভবিষ্যত অধিনায়ক হিসেবে লোকেশ রাহুলের কোনো ভবিষ্যত আছে কি না।
ভারতীয় বোর্ডের ওই কর্মকর্তা পাল্টা প্রশ্ন করলেন, ‘আপনার কাছে কি কোনো দিক থেকে লোকেশ রাহুলকে অধিনায়ক বলে মনে হয়েছে?’
এই একটা কথোপকথনই বলে দেয়, ভবিষ্যত অধিনায়ক হিসেবে লোকেশ রাহুলের সম্ভাবনাটা প্রায় বাতিল হয়ে গেছে। এক দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যে অধিনায়কত্ব করেছেন, তাতে আসলে এই অধিনায়ক হওয়ার দৌড় থেকে ছিটকে গেছেন এই তরুন ব্যাটসম্যান।
রাহুল এই সিরিজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিন ম্যাচে একটা মাত্র ফিফটি করতে পেরেছেন। তাতে দলের ভাগ্যের কোনো হেরফের হয়নি। তবে ব্যাটসম্যান রাহুলকে নিয়ে খুব চিন্তিত না ভারত। তারা ধাক্কা খেয়েছে তরুণ এই খেলোয়াড়ের নির্বিষ অধিনায়কত্বে।
বিরাট কোহলির সময়ে ভারত হয়ে উঠেছিলো বিশ্বের অন্যতম আগ্রাসী একটা দল। সৌরভ গাঙুলি, মহেন্দ্র সিং ধোনির সময় থেকে একটু একটু করে তৈরি হয়েছে এই আগ্রাসণ। কিন্তু কোহলি বিদায় নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে রাহুলের এই দলটা একেবারে প্রতিটা ম্যাচে আত্মসমর্পণ করেছে। বিশেষ করে শরীরি ভাষাটা ছিলো খুবই নেতিবাচক।
আর এ জন্য বিশ্লেষকরা লোকেশ রাহুলের অধিনায়কত্বকেই দায় দিচ্ছেন। যেমন সুনীল গাভাস্কার ধারাভাষ্যে বলছিলেন, ‘একটা জুটি প্রতিপক্ষ করে ফেললেই লোকেশ রাহুলকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় মনে হয়েছে। দেখে মনে হয়েছে, ওর আসলে আইডিয়ার অভাব পড়েছে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ডার শন পোলক বলছিলেন, ‘এই ভারতীয় দল কিছু ঘটার জন্য অপেক্ষা করছে। নিজেরা কিছু ঘটানোর চেষ্টা করছে না।’
ভারতীয় দল এই যে কিছু করতে পারছে না, এর পেছনের কারণ লোকেশের নুইয়ে পড়া বলে মনে করেন গাভাস্কার। তিনি মনে করেন, লোকেশের এই অধিনায়কত্ব দিয়ে চলবে না।
লোকেশের এই আচরণে বিরক্ত গাভাস্কার বলছিলেন, ‘অধিনায়কত্ব আপনাকে তো স্বাধীনতা দেয়। আপনাকে অধিনায়কত্ব দায়িত্ব দেয়। কিন্তু অধিনায়কত্ব পেয়ে এভাবে নুইয়ে গেলে তো চলবে না। লোকেশের অধিনায়ক হিসেবে আসলে অনেক উন্নতি করতে হবে।’
তবে সবাই যে এমন নেতিবাচক ভাবে দেখছেন, তা নয়। অন্তত কোচ রাহুল দ্রাবিড় তার এই ‘মিতা’র খুব একটা দোষ দেখছেন না। বলাই হয় রাহুল দ্রাবিড় লোকেশকে খুব পছন্দ করেন। সিরিজ শেষেও দ্রাবিড় লোকেশকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন, ‘সে সাধারণের চেয়ে ভালো করেছে। আসলে অধিনায়কত্বের বড় ব্যাপারই হলো, আপনার খেলোয়াড়রা কেমন স্কিল দেখাতে পারছে। আমরা ওয়ানডে দল হিসেবে ভালো করতে পারিনি। আমি মনে করি, সে (লোকেশ) আস্তে আস্তে আরও ভালো করবে এবং যোগ্যতর হয়ে উঠবে।’