স্মিথ-কোহলি, রাজায় রাজায় লড়াই

অবশ্য, কোহলি ও স্মিথ - দু’জনেই ক্যারিয়ারের সুদিন শেষ করে ফেলেছেন। এই সিরিজটাকে তাঁদের বিদায়ী যাত্রার শুরুও বলা যায়। সেই শুরুর দ্বৈরথ শুভ হোক - এমনটাই প্রত্যাশা।

২০১০ সালের জুলাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাগি গ্রিন ক্যাপটা মাথায় নিয়ে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে আর্বিভাব স্টিভ স্মিথের। তার একবছর পরই টেস্টে উত্থান হয় বিরাট কোহলি। প্রকৃতি নাকি সবসময় লড়াইটা সাম্যতায় রাখতে চায়, এজন্যই হয়ত ইমমুভেবল অবজেক্টের বিপরীতে আনস্টপেবল ফোর্সকে দাঁড় করিয়ে দেয়।

পরবর্তী দশক যেন ছিল এই দুইজনের রাজত্ব কায়েম ও দখলের লড়াই। টেস্ট ক্রিকেটে ১৯৫ ইনিংসে ৫৬.৯৭ গড়ে ৯৬৮৫ রান। ৪১ সেঞ্চুরির  সাথে সেঞ্চুরি ৩২ টা। সমান তালে পাল্লা দেওয়া কোহলি ২০১ ইনিংসে ৪৭.৮৩ গড়ে রান করেছেন ৯০৪০। হাফ সেঞ্চুুরি ৩১টা, সেঞ্চুরি ২৯ টা। মার্টিন ক্রো’র ফ্যাবুলাস ফোর তত্ত্বের অন্যতম দুই স্তম্ভ কোহলি-স্মিথ। দুইজনই খেলেন দুই ক্রিকেট পরাশক্তি ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে। ঐতিহাসিক বোর্ডার-গাভাস্কার মহারণতেও নজর তাঁদের দিকে থাকতে বাধ্য।

এই দ্বৈরথের শুরুটা মূলত ২০১৪-১৫ সালে। চার ম্যাচের সিরিজটা ২-০ তে জিতে যায় সেবার অস্ট্রেলিয়া। তবে, স্মিথ-কোহলির সেই লড়াই আজও চোখে ভাসে অনেকের। উদ্যমী, আগ্রাসী দুই তরুণ। ব্যাটটা যেন উন্মুক্ত তলোয়ার। যা সমানে কচুকাটা করে যাচ্ছে প্রতিপক্ষের সব বোলারদের। সেই সিরিজে আট ইনিংসে ১২৮.১৬ গড়ে ৭৬৯ রান করেছিলেন স্মিথ। সেঞ্চুরি চারটা, সেঞ্চুরি দু’টি। কোহলিও কম যাননি সেবার, ৮ ইনিংসে ৮৬.৫০ গড়ে প্রায় সাতশো রান ছিল তার। সেঞ্চুরি তারও ছিল সমান চারটাই।

এই দা-কুমড়ার লড়াই চলে আসছে বিগত দশক ধরেই। এখন অবধি বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে ৪২ ইনিংসে ৪৮.২৬ গড়ে ১৯৭৯ রান করেছেন কোহলি। অপরদিকে, ৩৫ ইনিংসে ৬৫.০৬ গড়ে ১৮৮৭ রান তাঁর। একটা চমকপ্রদ তথ্য জানেন? এই মহারণে দুইজনেরই সেঞ্চুরি আটটা, হাফ সেঞ্চুরিও সমান পাঁচটা করেই।

আবারও দুয়ারে এই মহারণে। দুইজনের ব্যাটার উপরেই তাকিয়ে থাকবে হয়ত দুইটা দল। কারণ, যেকোনো হিসাব নিকাশ বদলে দিতে পারেন তারা। রেকর্ড ও হাতছানি দিচ্ছে তাদের সামনে। অস্ট্রেলিয়া- ভারত সিরিজে সর্বোচ্চ নয়টা সেঞ্চুরি আছে শচীন টেন্ডুলকারের, তিনি খেলেছিলেন ৬৫ ইনিংস। অবশ্য, কোহলি ও স্মিথ – দু’জনেই ক্যারিয়ারের সুদিন শেষ করে ফেলেছেন। এই সিরিজটাকে তাঁদের বিদায়ী যাত্রার শুরুও বলা যায়। সেই শুরুর দ্বৈরথ শুভ হোক – এমনটাই প্রত্যাশা।

Share via
Copy link