জার্মানি বনাম স্পেন – বহুল আকাঙ্খিত ম্যাচটা তখন প্রায় টাইব্রেকারে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ কি জানি হলো, শূন্যে লাফিয়ে উঠে আকাশ ছুঁতে ইচ্ছে হলো মিকেল মেরিনো। ছুঁয়েও ফেললেন বটে, দানি অলমোর ক্রসে মাথা ছুইয়ে জার্মান বধের গল্প লিখলেন তিনি। জার্মানির সাথে সাথে অবসরের দ্বারপ্রান্তে থাকা টনি ক্রুসকেও শেষ বিদায় জানিয়ে দিতে হলো।
ইউরো শেষে ইতি টানবেন সেই ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন এই মিডফিল্ডার, তবে কোয়ার্টার ফাইনালেই থামতে হবে তা বোধহয় আশা করেননি তিনি। যদিও চিরচেনা মুচকি হাসিতেই বিদায় বলেছেন তিনি, অর্জনে সমৃদ্ধ এই মানুষটাকে বেদনা স্পর্শ করতে পারেনি একটুও।
এদিন স্বাগতিকরা বরাবরের মতই ৪-২-৩-১ ফরমেশন নিয়ে খেলতে নেমেছিল, যেখানে মূল লক্ষ্য উইং ধরে আক্রমণ করা। স্পেন এদিন চিরচেনা ছকেই একাদশ সাজিয়েছিল, তবে ম্যাচের শুরুতেই পেদ্রি চোটে পড়ায় এলোমেলো হয়ে যায় স্প্যানিশদের একাদশ। তাঁর জায়গায় বাধ্য হয়ে দানি অলমোকে পাঠানো হয়। ফলে মাঝ মাঠে আধিপত্য দেখিয়ে খেলার পরিকল্পনাও বদলাতে হয় তাঁদের।
কিন্তু শেষপর্যন্ত সেটাই শাপে বর হয়ে এসেছে দলটির জন্য, নিরীহ প্রথমার্ধে কিছু করতে না পারলেও বিরতি থেকে ফিরেই স্কোরবোর্ডে নাম তুলেছিলেন অলমো। ডান প্রান্ত দিয়ে ইয়ামালের বাড়ানো বল থেকে দারুণ ফিনিশংয়ে জালের দেখা পান তিনি। সেই গোলেই হয়তো ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হতো, কিন্তু ফ্লোরিয়ান উর্টজ জানতেন কি করতে হবে।
তাই তো ৮৯ মিনিটে তিনি প্রাণ ফিরিয়ে আনেন জার্মানদের শরীরে; দুর্দান্ত ভলিতে চলতি ইউরোতে নিজের দ্বিতীয় গোল তুলে নেন এই তরুণ। এরই ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ম্যাচের বাকি গল্প তো জানাই আছে সবার, দুর্ধর্ষ এক হেডারে সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছেন মিকেল মেরিনো।
প্রথমবারের মত স্বাগতিক দলকে হারিয়ে স্পেন চলে এলো সেমিফাইনালে, এখন তাঁদের অপেক্ষা কেবল ফাইনালে ওঠার। অতঃপর শিরোপা জিতে নেয়ার। আর জার্মানির ঘরের মাঠে ইউরো জয়ের স্বপ্ন যেমন অধরা থেকে গেলো, তেমনি টনি ক্রুসের ক্যারিয়ারেও ইউরোর অভাব থেকে গেলো অনন্তকালের জন্য।