মোস্ট ডিফারেন্সিয়াল প্লেয়ার, অর্থাৎ ব্যবধান গড়ে দিতে সবচেয়ে পারদর্শী। বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচের আগে এমন বিশেষণেই লামিন ইয়ামালকে বিশেষায়িত করেছিলেন জিরোনা কোচ। তাঁর সেই প্রশংসাই কাল হয়ে দাঁড়ালো, জিরোনাকে নাচিয়ে ছাড়লেন ইয়ামাল। জোড়া গোল করে বার্সেলোনাকে টানা পঞ্চম জয় এনে দিলেন তিনি।
প্রথমটা স্রেফ জেদের ফল, একরোখা প্রেসিংয়ে ডেভিড লোপেজের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন এই তরুণ। তারপর একাই বক্সে ঢুকে জোরালো শটে পাউলো গাজ্জানিকাকে পরাস্ত করেন তিনি। মোমেন্টাম তখনই পেয়ে গিয়েছিলেন, এরপর কেবল এগিয়ে যাওয়া।
সেই সুবাদে আসে পরের গোল, ডি-বক্সে উড়ে আসা ফ্রি কিক দারুণ দক্ষতায় নিয়ন্ত্রণ করে এই উইঙ্গারের পায়ে পৌঁছে দেন রবার্ট লেওয়ানডস্কি। তিনি এবারও ভুল করেননি, ঠান্ডা মাথায় বাঁকানো শটে লিড দ্বিগুণ করেন। তাঁর অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে প্রথমার্ধেই জয়ের দিকে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনা।
তাঁর দেখানো পথে হেঁটেছেন বাকিরাও, ফলে ম্যাচে ফেরা তো দূরে থাক নিজেদের লজ্জার হাত থেকেই রক্ষা পায়নি জিরোনা। বিরতি থেকে ফিরেই জুলস কুন্দের লফটেড পাস থেকে দলকে তৃতীয় গোল এনে দিয়েছিলেন দানি অলমো – সেই গোলটা অনেকদিন চোখে লেগে থাকবে দর্শকদের। খানিক পরে পেদ্রি গঞ্জালেজও নিজের নাম লেখান স্কোরবোর্ডে।
গত মৌসুমে প্রথম লাইমলাইটে আসেন লামিন ইয়ামাল, তবে চলতি বছরের ইউরো তাঁর ক্যারিয়ারকে দেয় অনন্য গতি। স্পেনকে শিরোপা জেতানোর ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অগ্রণী সেনানীদের একজন। বার্সেলোনার হয়েও চলতি মৌসুমে সেই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা রয়েছে, তাঁর পায়ে দেখা মিলছে ফুটবল জাদুর – এখন পর্যন্ত তিন গোল আর চার অ্যাসিস্ট করেছেন এই ফরোয়ার্ড।
রিয়াল মাদ্রিদ যখন গ্যালাকটিকো তৈরিতে ব্যস্ত, বার্সেলোনা তখন ছুটছে এক তরুণের কাঁধে ভর করে। অনেকটাই যেন লিওনেল মেসি বা রোনালদিনহোর মত গল্প – লামিন ইয়ামাল সে রকম কিংবদন্তি হবেন কি না তা তো সময়ই বলে দিবে, তবে তিনি যে বার্সেলোনার মেসিয়াহ হয়ে এসেছেন সেটা নিশ্চিত।