মালিঙ্গা, দ্য স্লিঙ্গা

মাথায় সোনালি রঙের এক ঝাঁক কোঁকড়া চুল। প্রথম দেখায় অনেকেই পাখির বাসাও মনে করতে পারেন! আর সত্যিকার ভাবলে মিউজিশিয়ানও ভাবতে পারেন। চোখের উপর ভ্রু'তে ম্যাগনেট, হাতে রাবার ব্যান্ড আর শরীরে ট্যাটু আঁকা একজন নিজের বোলিং মার্কে প্রস্তুত বল হাতে। বলে আলতো চুমু খেয়ে দৌড় শুরু করলেন - অদ্ভুত অ্যাকশনে বল ছাড়লেন! হয়তো কোনো ইয়োর্কার নয়তো ডেডলি কোনো বাউন্সারে ব্যাটসম্যানের বুঁকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছেন। অ্যাকশন কিংবা স্টাইল বলেন, সব দিক থেকেই তিনি ছিলেন সবার চেয়ে আলাদা।

মাথায় সোনালি রঙের এক ঝাঁক কোঁকড়া চুল। প্রথম দেখায় অনেকেই পাখির বাসাও মনে করতে পারেন! আর সত্যিকার ভাবলে মিউজিশিয়ানও ভাবতে পারেন। চোখের উপর ভ্রু’তে ম্যাগনেট, হাতে রাবার ব্যান্ড আর শরীরে ট্যাটু আঁকা একজন নিজের বোলিং মার্কে প্রস্তুত বল হাতে।

বলে আলতো চুমু খেয়ে দৌড় শুরু করলেন – অদ্ভুত অ্যাকশনে বল ছাড়লেন! হয়তো কোনো ইয়োর্কার নয়তো ডেডলি কোনো বাউন্সারে ব্যাটসম্যানের বুঁকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছেন। অ্যাকশন কিংবা স্টাইল বলেন, সব দিক থেকেই তিনি ছিলেন সবার চেয়ে আলাদা।

এতোক্ষণে বুঝতেই পেরেছেন লঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গার কথা বলছি।

শ্রীলঙ্কার গলের এক গ্রাম সাউদার্ন কোস্টাল। গল থেকেও ১২ কিলোমিটার ভিতরের সেই গ্রামেই বেড়ে ওঠা মালিঙ্গার। সেখানেই ক্রিকেট শেখা। বোরিং ফিল করলেই টেপ টেনিস বল হাতে মাঠে, জঙ্গলে যেখানেই জায়গা পেতেন চলে যেতেন বোলিং করতে। আঙুল ভাঙা, নাক ফাঁটানোটা ছিলো তাঁর একপ্রকার রোজকার কাজ!

কড়া রোদ কিংবা বৃষ্টি আবহাওয়া যেমনই থাকুক সময় পেলেই তিনি ছুঁটতেন বল করতে। তিনি নিজেই নিজের মেন্টর, কোচ, ট্রেইনার সবই ছিলেন। আর ফিটনেস ঠিক রাখতে সকাল সকাল সাতরে ছোট নদী পার হয়ে চলে যেতেন নিজের আত্নীয়র বাড়ি। বিকালে বাড়ির পাশে নারকেল গাছে ওঠা নামা করে শক্তি বাড়াতেন তিনি। ছেলেবেলায় নারকেলের পানিকেই অ্যানার্জি ড্রিংক হিসেবে নিতেন তিনি। প্রায় সময়ই নির্দিষ্ট জায়গায় নিজের বুট জোড়া রেখে সেই মার্কে বোলিং অনুশীলন করতেন।

টেনিস বলে যখন খেলেন, মালিঙ্গার বয়স তখন ১৩। আর এর মাঝেই দেখা পান সাবেক লঙ্কান পেসার ও কোচ চাম্পাকা রামানায়েকের। সেখান থেকে টেনিস বলে অনুশীলন করতে করতে চার বছরের মাথায় হাতে নেন লেদার বল। ওই সময় গল ক্রিকেটের হয়ে একই সঙ্গে খেলতেন সাথে কোচিংও করাতেন রামানায়েকে। এক ম্যাচে রামানায়েকে মালিঙ্গাকে নিজের জায়গায় দলে সুযোগ দেন!

আর সেই সুযোগ লুফে নিয়েই ম্যাচে মালিঙ্গা শিকার করেন ৮ উইকেট! প্রথমবার লেদার বল হাতে নিয়েই দুর্দান্ত পারফর্ম করেন মালিঙ্গা। এরপর নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভিদালোকা কলেজের হয়ে খেলতে নেমেই শিকার করেন ৬ উইকেট। সেখান থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি মালিঙ্গাকে।

রামানায়েকের হাত ধরেই ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কা দলের নেট বোলার হিসেবে ডাক পান তিনি। গল থেকেও দূরের এক গ্রাম থেকে উঠে আসা অদ্ভুত অ্যাকশনে বল করা কেউ জাতীয় দলের আশেপাশে থাকবে সেটা যেনো কারোই মনঃপুত হয়নি। তাঁর বোলিং দেখার পর তো অনেকেই বলতে শুরু করলেন একে কোনোভাবেই দলে নেওয়া উচিত হবে না! এ যে কাউকে ইনজুরিতে ফেলতে পারে। সেসময় মালিঙ্গার বোলিং টেকনিকটাও ছিলো বেশ সাধারণই। ব্যাটসম্যানের পা লক্ষ্য করে বল ফেলা কিংবা বাউন্সারে ব্যাটসম্যানকে পরাস্থ করতে পারাটাই যেনো তাঁর জন্য ছিল বড় সাফল্য।

এভাবে তিন বছর জাতীয় দলের নেট বোলার হিসেবেই চালিয়ে গেলেন তিনি। তবে, এমন এক অস্ত্র নেটে রেখে বিলাসিতা দেখানোর মতো ভুল করেনি লঙ্কান বোর্ড। ২০০৪ সালে অজিদের বিপক্ষে পেলেন জাতীয় দলে খেলার সুযোগ!

ডারউইনে অজিদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেই অভিষিক্ত হলেন লাসিথ মালিঙ্গা। সে সময় শক্তিশালী অজিদের বিপক্ষে জয়ের চিন্তা করাটাও যেনো আকাশকুসুম ভাবনা! অজিদের বিপক্ষে জয়ের দেখা পেলেও সেটা কালেভদ্রে। সিরিজের প্রথম টেস্টেই বড় ব্যবধানে অজিদের কাছে হারে লঙ্কানরা। কিন্তু সেই টেস্টে সবার নজর কাঁড়েন ২১ বছর বয়সী তরুন মালিঙ্গা। দুই ইনিংসেই অজি ব্যাটসম্যান ড্যারেন লেহমেনকে আউট করেন তিনি। ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়ে অজিদের ডেরায় বিশ্ব ক্রিকেটে ত্রাশ করবার বার্তাটাও দিয়ে এসেছিলেন সেদিনই!

ম্যাচ শেষে খোদ অ্যাডাম গিলক্রিস্ট স্টাম্প হাতে ছুঁটে আসেন লঙ্কানদের ড্রেসিং রুমে। আর ভালো পারফর্ম স্বরূপ মালিঙ্গাকে সেটি উপহারও দেন গিলি। এরপর দ্রুতই মালিঙ্গা ও তাঁর স্লিঙ্গশট অ্যাকশন ক্রিকেট বিশ্বে এক নতুন আলোচনার জন্ম দেয়।

তাঁর অদ্ভুত অ্যাকশনটা ধরতে যেনো ভ্যাবাচ্যাকা খাচ্ছিলেন ব্যাটসম্যানরা। পরের নিউজিল্যান্ড সিরিজে তো এক কিউই ব্যাটসম্যান আম্পায়ারকে বলেই ফেললেন আম্পায়ারের টাই আর বেল্টের কালারে পরিবর্তন করতে! যাতে করে বল রিলিজের সময় সহজেই মালিঙ্গার হাতের দিকে নজর রাখতে পারেন তিনি। অবশ্য সেই অদ্ভুত অনুরোধটা নাকচ করে দেন আম্পায়ার!

তখন নিয়মিতই ১৪০-১৫০ গতিতে বল ছুঁড়তেন মালিঙ্গা। টেস্টের পর ওয়ানডে স্কোয়াডেও জায়গা করে নেন সহজেই। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রিকেট দেশে নিজের ডেডলি বাউন্স আর ইয়োর্কারে মাত দিচ্ছিলেন বড় বড় তারকা ব্যাটসম্যানদের। এর এক বছরের মাথায় স্ট্রেইট আর কালো চুলকে ট্রান্সফর্ম করে কোঁকড়ানো ও গোল্ডেন কালার করেন মালিঙ্গা! এই চুল নিয়েই তো আলোচনায় আসা। বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেকে আলাদা পরিচয় দেওয়া।

সেই সাথে স্বল্প সময়েই অ্যাকশন পরিবর্তন না করেও দ্রুতই অফ কাটারও আয়ত্তে আনেন তিনি। তাঁর সবচেয়ে বড় এডভান্টেজ হলো অ্যাকুরিসি ও আনপ্রেডিক্টিবিলিটি! ওভারে ছয় বল ছয় রকমের করতে পারতেন তিনি। ব্যাটসম্যানও দ্বিধায় থাকতেন মালিঙ্গা ঠিক এই বলে কোনভাবে বলটা করবেন।

২০০৭ বিশ্বকাপে তো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার বলে চার উইকেট নিয়ে এক অনন্য কীর্তি গড়েন তিনি। সেই সাথে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে দেখা পান প্রথম হ্যাট্রিকের। সে সময়ে হঠাৎ মালিঙ্গা নামটা যেনো ক্রিকেট দুনিয়ায় বেশ সাড়া ফেলে দেয়। এরপর ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে হাঁটুর ইনজুরিতে দল থেকে ছিটকে যান মালিঙ্গা! হাটুর ভয়াবহ ইনজুরিতে ক্যারিয়ার তখন হুমকির মুখে তাঁর। অনেকেই বলতে শুরু করলেন মালিঙ্গা আর ফিরছেন না!

সত্যি কি মালিঙ্গার ক্যারিয়ার শেষ?

হয়তো ক্যারিয়ারে আর ২২ গজে দেখা যাবে না তাঁকে। এই কঠিন মুহূর্তটায় কাউকেই কিন্তু পাশে পাননি তিনি। ক্ষোভে মনে মনে ভেবেও রেখেছিলেন আবারো ফিরে যাবেন নিজ গ্রামে!

এক সাক্ষাৎকারে তো বলেই ফেলেছিলেন, ‘চামিন্দা ভাস ও মুত্তিয়া মুরালিধরন দলে থাকতে কারই বা মালিঙ্গাকে লাগবে!’ ইনজুরি গুরুতর হওয়ায় তিনিও ভেবেছিলেন ক্রিকেট মাঠে ফেরার রাস্তাটা বোধ হয় বন্ধ হয়েই গেলো। কোনো কিছুতেই যেনো ইনজুরি থেকে সেরে উঠছিলেন না তিনি। সিদ্ধান্ত নিলেন ফিরে যাবেন ছেলেবেলায় বেড়ে ওঠা সেই গ্রামে।

ঠিক তখনি একটি কল এলো!  লঙ্কান প্রেসিডেন্টের ফোন!

ওপাশ থেকে বার্তা এলো মালিঙ্গাকে নিজ বাসভবনে ডেকেছেন তিনি। সেখানে যাওয়ার পর তৎকালীন লঙ্কান প্রেসিডেন্ট তাকে ওয়াদা করলেন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত ফিজিও তাকে চারদিনের মাঝেই সুস্থ করে তুলবেন! আর মিরাকল ঘটিয়ে সার্জারীর ঠিক চারদিনের মধ্যেই মালিঙ্গা বেশ সুস্থ অনুভব করছিলেন!

মালিঙ্গার নিভতে বসা ক্যারিয়ারে নতুন করে আশার আলো জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন লঙ্কান প্রেসিডেন্ট। থমকে যাওয়া সিংহ তাহলে আবারো ২২ গজে গর্জন করবে? আবারো স্টেডিয়াম ভর্তি সমর্থকরা স্লোগান দিবেন ‘স্লিঙ্গা’ নামে।

এরপর ২০০৯ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) আসরে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলার সুযোগ পান তিনি। আগের আসরেও সুযোগ পেয়েছিলেন অবশ্য। তবে, ইনজুরিতে খেলতেই পারেননি। পরবর্তীতে আইপিএলে নিজের প্রথম আসরে ১৮ উইকেট নিজের নামে করেন তিনি। সেই পারফরম্যান্স দিয়ে জায়গা করে নেন ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও। ওই বছরই ভাস দল থেকে বাদ পড়ায় দলের অটো চয়েজে পরিনত হন মালিঙ্গা। বাউন্সার আর ইয়োর্কারে নিজের আঙুলের ইশারায় ২২ গজে ব্যাটসম্যানদের নাচাচ্ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ার হুমকিতে মালিঙ্গার নামে আবারো মুখোরিত হয় স্টেডিয়াম।

প্রায় এক বছর সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে কাটানোর পর মালিঙ্গা চেষ্টা করলেন টেস্টে কামব্যাক করার। তিনি ফিরলেনও। কিন্তু ফিরলেন মুরালির বিদায়ী টেস্টে! ওই ম্যাচে ৮ উইকেট শিকার করেন ম্যান অব দ্যা ম্যাচও হন মালিঙ্গা। তবে, পুরোনো ইনজুরি বার বার বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিলো তাঁর জন্য। ইনজুরি থেকে দূরে থাকতে টেস্টে আগ্রহ কমিয়ে মনযোগী হন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে।

এরপর ২০১১ বিশ্বকাপ। ফাইনালে শচীন-শেবাগকে দ্রুত ফেরালেও শেষ পর্যন্ত শিরোপা জিততে পারেনি লঙ্কানরা! ওই বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হ্যাট্রিক গড়েন তিনি! এরপরের ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট না খেলার সিদ্ধান্ত জানান মালিঙ্গা! একই সময়ে উড়াল দেন আইপিএলের জন্য। সে সময় লঙ্কান ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক দুলিপ মেন্ডিস মালিঙ্গাকে আল্টিমেটাম দিয়ে বললেন আইপিএল থেকে ফিরে আসতে! তাঁর ইনজুরির জন্য নাকি মেডিকেল-রিহ্যাবের ব্যবস্থা করবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট!

এই কথাটাই যেনো ধাঁক্কা লাগে মালিঙ্গার! গেল তিন বছর আগে যেখানে দলে থেকেও ক্যারিয়ার হুমকিতে থাকা ইনজুরির জন্য মেডিকেল সুবিধা পাননি; যা ছিলো তাঁর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আর এখন কিনা একই সার্ভিস তাঁকে জোরপূর্বক দিতে চাওয়া হচ্ছে যেটা তিনি চাচ্ছেনও না! মূলত ইংল্যান্ডে টেস্ট না খেলে আইপিএল খেলাতেই চটেছিলেন দুলিপ! আর প্রতিত্তোরে মালিঙ্গাও জানিয়ে দেন সাদা পোশাকে নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত।

এরপর ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাঝ পথে দলের অধিনায়কত্ব পান তিনি। সেবার লঙ্কানরা চ্যাম্পিয়নও হয় তাঁর অধীনে! টেস্টে অবসরের পর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে মালিঙ্গা ছিলেন আরো দুর্দান্ত। ২২ গজে প্রতিপক্ষের জন্য আতংকের নামও ছিলেন তিনি। ইয়র্কার আর বাউন্সারে বরাবরই তিনি ধরাশায়ী করতেন ব্যাটসম্যানদের। কঠিন মূহুর্তেও কত ম্যাচে দলকে একাই জিতিয়ে দিয়েছেন নিজের বোলিং জাদুতে।

মালিঙ্গার রেকর্ডনামা যদি ছোট্ট করে আলোচনা করি। একমাত্র বোলার হিসেবে দুইটি ভিন্ন ফরম্যাটে চার বলে চার উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি। ২০০৭ সালে ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার পর ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এই কীর্তি গড়েন তিনি। এছাড়াও প্রথম বোলার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই একশো উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েন তিনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেই প্রথম বোলার হিসেবে একশো উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন মালি!

ওয়ানডে ইতিহাসের একমাত্র বোলার হিসেবে তিনবার হ্যাট্রিক করেন তিনি! যার মধ্যে ২০০৭ ও ২০১১ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ও কেনিয়ার বিপক্ষে হ্যাট্রিক করেন তিনি। বিশ্বকাপের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে দুইবার হ্যাট্রিকের রেকর্ডটাও যোগ করেছেন নিজের নামের পাশে। তিনিই একমাত্র বোলার যার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে আছে পাঁচটি হ্যাট্রিক! ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রুততম ৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করা ছাড়াও ব্যাট হাতে দশম উইকেটে লঙ্কানদের হয়ে একমাত্র ফিফটির মালিকও মালিঙ্গা!

ক্যারিয়ারে মাত্র ৩০ টেস্টেই নিয়েছেন ১০১ উইকেট, তিনবার শিকার করেছেন ফাইফার। ২২৬ ওয়ানডেতে শিকার করেছেন ৩৩৮ উইকেট, ৮ বার নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। এছাড়া ৩৪টি টি-টোয়েন্টিতে আছে ১০৭ উইকেট, ২ বার নিয়েছেন ফাইফর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫৪৬ উইকেটের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেও শিকার করেছেন প্রায় ১১০০ উইকেট! আইপিএলেও তিনি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক!

২০১৯ সালে ওয়ানডে থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপর চলতি বছর ২০২১ সালে আশায় ছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার। হয়তো বিশ্বকাপ খেলেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা আর হয়নি! বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত ১৫ সদস্যের দলে জায়গা হয়নি ৩৮ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ তারকার। ৩৮ বছর বয়সেই ইতি টেনেছেন ১৭ বছরের দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের!

হেয়ার স্টাইল কিংবা বিভিন্ন কারণে এক সময় নিজে দেশের মিডিয়াতেই সমালোচিত হওয়া মালিঙ্গা ক্যারিয়ার শেষে নিজেকে রেখে গিয়েছেন কিংবদন্তি হিসেবে। ক্যারিয়ারে ঝড় ঝাপটা, চড়াই – উৎরাই যাই এসেছে, নিজের পরিশ্রম আর পারফরম্যান্স দিয়ে সব বাঁধাই পার করেছেন সহজে। ছোট্ট গ্রাম থেকে উঠে আসা মালিঙ্গা এখন বিশ্ব ক্রিকেটের বড় নাম। তিনি আসলেন, বল করলেন আর সবটা জয় করেই বিদায় নিলেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...