সময়ের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। ব্যালন ডি’অর জেতার দাবিও জানাচ্ছেন তিনি। কিন্তু বছর খানেক আগে অবধি লাউতারো মার্টিনেজকে শুনতে হয়েছে কটু কথা। জাতীয় দলের জার্সিতে তিনি বারেবারে খেই হারিয়েছেন। কিন্তু এবারের কোপা আমেরিকাতে যেন দেখা মিলছে নতুন এক লাউতারো মার্টিনেজের।
ক্লাব ফুটবলেও সময়টা ভাল কেটেছে তার। লাউতারোর অধীনেই নিজেদের মোনোগ্রামে আরও একটি তারকা যুক্ত করতে পেরেছে ইতালির ক্লাব ইন্টার মিলান। ২০ তম শিরোপাটা গেল মৌসুমে ঘরে তুলেছে ইন্টার। ২০২৩/২৪ মৌসুমে ইতালিয়ান সিরি আ-তে ৩৩ ম্যাচে ৩০ গোলে সরাসরি অবদান ছিল লাউতারোর। নিজে করেছেন ২৪ খানা গোল, করিয়েছেন আরও ৬টি।
সিরি আ ছাড়াও সুপারকোপা ইতালিয়ানার শিরোপা জিতেছে ইন্টার মিলান। সেখানেও দুই ম্যাচে ১টি করে গোল ও অ্যাসিস্ট করেছেন লাউতারো। সব মিলিয়ে গেল মৌসুমে ২৭ খানা গোল এসেছে লাউতারোর কাছ থেকে। সাত খানা গোল তিনি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন। যদিও চ্যাম্পিয়ন্স লিগটা বেজায় বাজে কেটেছে তার। রাউন্ড অব সিক্সটিনে তার দল টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছে।
ইউরোপের শ্রেষ্ঠ ক্লাব হওয়ার দৌড়ে দলকে তেমন একটা সহয়তা করতে পারেননি লাউতারো। ২ গোল এসেছিল তার পা থেকে, খেলেছিলেন ৮ ম্যাচ। তখনই মূলত প্রশ্ন জেগেছিল বড় মঞ্চে লাউতারোর সামর্থ্য নিয়ে। কিন্তু সেসব প্রশ্ন যেন তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছেন তিনি কোপা আমেরিকার মঞ্চে।
তিন ম্যাচে চার গোল করেছেন এই তারকা। তার গোলে ভর করেই অনায়াসে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে আর্জেন্টিনা। এদফা লিওনেল মেসিকে ছাপিয়ে তিন বনে গেছেন আলবিসেলেস্তাদের ‘মেইন ম্যান’। চিলির বিপক্ষে তার করা একমাত্র গোলেই জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছিল আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে পেরুর বিপক্ষে জয়সূচক দুই গোলই এসেছে লাউতারোর কল্যাণে।
সময়টা দারুণ যাচ্ছে তার, সে কথা বলতেই হয়। মৌসুমের সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব জেতার দাবিটা তিনি জানাচ্ছেন তাই জোরেসোরেই। তবে সেজন্য অবশ্য তাকে জিততে হবে কোপা আমেরিকা। তবুও হয়ত থেকে যাবে নানারকম সমীকরণ। কেননা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যে তিনি থেকে গেছেন নিষ্প্রভ।
তবে ব্যক্তিগত অর্জন ছাপিয়ে লাউতারো হয়ত দলগত সাফল্যের দিকেই রাখছেন নিজের দৃষ্টি। জাতীয় দলের আকাশী জার্সিতে আরও একটি শিরোপা চুমু এঁকে দিতে চান নিশ্চয়ই। মঞ্চটা প্রস্তুত আছে। পথটাও কঠিন হওয়ার নয়। কেননা গোটা আর্জেন্টিনা যে উড়ছে দুর্বার গতিতে।