এসেছে নতুন শিশু, ছেড়ে দিতে হবে স্থান। অবশ্য আর্জেন্টিনা দলে কোন শিশুর আগমন ঘটেনি। বরং লাউতারো মার্টিনেজ নিজের জায়গাটা তৈরি করে নিয়েছেন। অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ফেলে রেখে যাওয়া স্থানে দখলদারিত্বের আধিপত্য বিস্তার করবার সব রকম রসদ জমা করে ফেলেছেন লাউতারো।
২০২৪ কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনা জিতেছে ১-০ গোলে। ম্যাচের ১১২ মিনিটের মাথায় জয়সূচক একটিমাত্র গোল এসেছে লাউতারো মার্টিনেজের পা থেকে। সবাই যখন আরেকটি টাইব্রেকারের প্রস্তুতি নিয়ে নিচ্ছে মনে মনে, ঠিক তখনই দৃশ্যপটে নায়ক-রূপে হাজির লাউতারো মার্টিনেজ।
বেঞ্চ থেকে একেবারে শিখরে। শিকারি বাজপাখির বয়স হলে নাকি ঠোঁটজোড়া ভেঙে ফেলে নতুনরূপে শিকার করবে বলে। লাউতারোর বয়স না হলেও, সেই ঠোঁট ফাটিয়ে নব অস্ত্ররূপে হাজির অবশ্য তিনি হয়েছেন। আর্জেন্টিনার পরবর্তী দিনগুলোতে তিনিই তো হবেন, ‘ক্লাচবয়’।
এবারের কোপা আমেরিকায় নতুন করে নিজেকে পরিচয় করিয়েছেন লাউতারো মার্টিনেজ। দলের প্রয়োজনে তিনি সাইডবেঞ্চ থেকে উঠে আসবেন। করবেন গোল, জিতবেন ট্রফি, জেতাবেন ম্যাচ। সেই ধারাবাহিকতায় সদ্য সমাপ্ত কোপা আমেরিকার সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে গেছেন তিনি।
৭ ম্যাচে ৫ গোল এসেছে তার পা থেকে। যার তিন খানা গোলই তিনি করেছেন বেঞ্চ থেকে উঠে এসে। ফাইনালে স্রোত যখন বিপরীত দিকে প্রবল, ঠিক তখন তিনি সেই বিপরীত স্রোত চিড়ে গোল আদায় করে নিয়েছেন। প্রতিকূলতার বরফ প্রলেপ পেড়িয়ে শৃঙ্গ জয় করেছেন।
সেই শৃঙ্গ জয়ের যাত্রাটা তিনি শুরু করেছিলেন কানাডার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। ৭৬ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নেমে গোল করেন তিনি। চিলির বিপক্ষে কঠিন ম্যাচটাতেও তার একমাত্র গোলেই জিতেছিল আর্জেন্টিনা। সে ম্যাচে শেষের ১৭ মিনিট খেলেছিলেন লাউতারো।
পাক্কা ৯০ মিনিট খেলেছিলেন পেরুর বিপক্ষে। সেই ম্যাচে শুরু একাদশে থেকে করেছিলেন দুই দুইটি গোল। তার দুই গোলের সুবাদে ২-০ গোলে জিতেছিল আলবিসেলেস্তারা। এরপর অবশ্য কোয়ার্টার ফাইনাল আর সেমিফাইনালে নিষ্প্রভ ছিলেন তিনি। কিন্তু ফাইনালের মঞ্চে তিনি আর ভুল করেননি। ম্যাচের ভাগ্য ছেড়ে দেননি আরেক সতীর্থ এমিলিয়ানো মার্টিনেজের উপর।
গোল করে দলকে জিতিয়েছেন ম্যাচ। শেষবেলায় ত্রাণকর্তা। কান্নায় লাল হয়ে যাওয়া ডি মারিয়ার মুখশ্রী মুহূর্তেই বদলে দিয়েছেন লাউতারো। বিদায় বেলায় ডি মারিয়াও যেন খানিক স্বস্তি নিয়ে ছাড়লেন মাঠ। কেননা যোগ্য হাতেই যে আছে আর্জেন্টিনার ভবিষ্যতের দায়িত্বভার।