স্বর্গীয় গোলকধাঁধা

রেফারি হাত তুলে থামালেন পুসকাসকে। বিপক্ষ দল সাবসটিচিউট নামাচ্ছে। মানে গ্যারিঞ্চা বেরিয়ে গিয়ে তার জায়গায় একটা ছোটখাটো শরীরের ছেলে ছুটতে ছুটতে মাঠে ঢুকল।

ফ্রি কিক মারার জন্য তৈরি হচ্ছেন ফেরেঙ্ক পুসকাস। আড়চোখে একবার দেওয়ালের সমান্তরালে দাঁড়ানো ইউসবিওকে দেখে নিলেন। তার একটু পেছনে অলস পায়ে হাঁটছেন জর্জ বেস্ট, লুজ বল পাওয়ার আশায়।

রেফারি হাত তুলে থামালেন পুসকাসকে। বিপক্ষ দল সাবসটিচিউট নামাচ্ছে। মানে গ্যারিঞ্চা বেরিয়ে গিয়ে তার জায়গায় একটা ছোটখাটো শরীরের ছেলে ছুটতে ছুটতে মাঠে ঢুকল।

গ্যারিঞ্চাকে বসিয়ে দিল? পাশে দাঁড়ানো দিদির সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময় করলেন পুসকাস। এমনিতেই ওরা দুই গোলে পিছিয়ে রয়েছে, তার ওপর …… যাক গে, ওদের দলের ব্যাপার ওরাই চিন্তা করুক।

বাঁ পায়ে বলটাকে ইউসবিওর উদ্দেশ্যে ভাসিয়ে দিলেন পুসকাস। নির্ভুল নিশানায় লক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলটা। দেওয়ালের বাঁ দিকে ছুটলেন পুসকাস। কিন্তু না, মাঝপথেই বল থামিয়ে সেটা ক্লিয়ার করেছেন কার্লোস অ্যালবারটো। ঠিক ক্লিয়ার করেছে বলা ঠিক হল না, লম্বা পাস এগিয়ে দিয়েছে নতুন নামা ছেলেটার উদ্দেশ্যে।

চিন্তার কিছু নেই। পেছনে অপেক্ষা করছেন ববি মুর। মুরের পেছনেও লোক আছে। হঠাৎ স্পিড বাড়িয়ে অনায়াসে ববি মুরকে কাটিয়ে আরও দুই জনকে পেরিয়ে ছোট্ট শরীরটা বিদ্যুতের গতিতে এগিয়ে ঢুকে পড়ল পেনাল্টি বক্সের মধ্যে। সামনে শুধু গোলকিপার।

সামনের গোলপোস্টে মারার ভান করল ছেলেটা। গোলকিপার ডাইভ দেওয়ার পর-মুহূর্তে অন্য পোস্টটায় বাঁ পায়ে বল প্লেস করে নিজের মুষ্টিবদ্ধ হাত আকাশের দিকে ছুঁড়ে।

মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থাতেই লেভ ইয়াসিন বুঝতে পারলেন ছোকরা ওকে বোকা বানিয়েছে। বাঁ হাতের পাশ দিয়ে গড়িয়ে যাওয়া বলটা লক্ষ্য করে এবার উল্টো দিকে ডাইভ দিলেন তিনি। গোল লাইনের কয়েক ইঞ্চি দূরে যখন বল তখন যেন ইলাস্টিকের মত ইয়াসিনের বাঁ হাত লম্বা হয়ে টোকা দিয়ে বলটাকে গোললাইনের ওপারে করে দিল।

কর্নার!

‘ছোকরাটার নাম কী?’ অলস পায়ে পেনাল্টি বক্সের দিকে হাঁটতে হাঁটতে ববি মুর রেফারিকে জিজ্ঞেস করলেন।

‘ম্যারাডোনা, ডিয়েগো ম্যারাডোনা!’ সংক্ষেপে উত্তর দিয়ে এগিয়ে গেলেন রেফারি।

‘হুম! একমাত্র জর্জ বেস্ট ছাড়া আর কেও যে এভাবে আমাকে ড্রিবল করে বেরিয়ে যেতে পারে সেটা ভাবতেই পারি নি।’

কর্নার নিতে একটু দেরি হল। আরও একটা সাবসটিচিউট।

কর্নার কিক নেওয়ার জন্য কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। তাঁর দলের নতুন প্লেয়ারটিকে দেখে তিনি অবাক হয়ে গেলেন। একে তো তিনি চেনেন। ইতালির পাওলো রোসি না? এরই মধ্যে ওরও সময় হয়ে গেল?

পাওলো রসি আর ম্যারাডোনার মধ্যে দৃষ্টি বিনিময় হল। তিন চার পা ছুটে বলটাকে তুলে দিলেন মারাদোনা। বক্সের ওপর বলটা গোত্তা খেয়ে নেমে আসছে। সেই সঙ্গে ছুটছেন রসি। ছুটছেন ববি মুরও। যদিও পোস্টের নিচে ইয়াসিন রয়েছেন এখনও কিন্তু তবু নতুন ছেলেদুটোকে লাইটলি নেওয়া ঠিক হবে না।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...