লিভিংস্টোন লিভিং হিজ ড্রিম

ইনজুরির কারণে একপ্রকার দৃশ্যপট থেকে হারিয়েই গিয়েছিলেন লিয়াম লিভিংস্টোন। তবে দীর্ঘদিন পর আইপিএলে ফিরেই দুর্দান্ত পারফর্ম করে বুঝিয়ে দিচ্ছেন ধূমকেতু নয়, বরং নক্ষত্র হওয়াই তাঁর জীবনের নিয়তি। 

ইনজুরির কারণে একপ্রকার দৃশ্যপট থেকে হারিয়েই গিয়েছিলেন লিয়াম লিভিংস্টোন। তবে দীর্ঘদিন পর আইপিএলে ফিরেই দুর্দান্ত পারফর্ম করে বুঝিয়ে দিচ্ছেন ধূমকেতু নয়, বরং নক্ষত্র হওয়াই তাঁর জীবনের নিয়তি। 

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন লিভিংস্টোন। জাতীয় দল বটেই বিশ্বজুড়ে ফ্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর নিয়মিত মুখ এই ইংরেজ তারকা।

মিডল অর্ডারে নেমে বড় বড় সব ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের চিত্রনাট্য বদলে দিতে এই তারকার জুড়ি মেলা ভার। এছাড়া মাঝের ওভারগুলোতে বল হাতেও দারুণ কার্যকরী এই তারকা। দলের প্রয়োজনে করতে জানেন লেগস্পিন এবং অফস্পিন দুরকম স্পিন বোলিং-ই। 

জাতীয় দলের হয়ে ২০১৭ সালেই টি টোয়েন্টিতে অভিষেক হলেও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি, বরং হারিয়েই গিয়েছিলেন। মাত্র একটি টি টোয়েন্টি খেলেই বাদ পড়তে হয়েছিল সেবারে। তবে ক্রমাগত নিজের ব্যাটিংয়ে উন্নতি এনে চার বছর বাদে ফেরার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে বনে গেছেন জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। 

পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ৪২ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে টি টোয়েন্টিতে থ্রি লায়ন্সদের পক্ষে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটা তাঁর দখলেই। এছাড়াও ঘরোয়া ক্রিকেটে একবার ১৩৮ বলে ৩৫০ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলার রেকর্ড আছে লিভিংস্টোনের।

নিজের ক্যারিয়ারকে ধীরে ধীরে অন্য উচ্চতাতে নিয়ে যাবার পথেই ছিলেন এই তারকা, এর মাঝেই জিতেছেন টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা। গত বছরেই ডিসেম্বরে টেস্টেও অভিষেক ঘটে এই তারকার। 

কিন্তু তারপরেই ঘটে বিপত্তি। নিজের অভিষেক টেস্টেই হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েন এই তারকা। এরপর টানা চার মাস বাইশ গজের বাইরে ছিলেন। খানিকটা দেরিতে আলো ছড়ানো এই তারকা ইনজুরি থেকে ফিরে কতোটা আলো ছড়াবেন সে নিয়ে সন্দিহান ছিলেন অনেকেই। তবে আইপিএলে মারকুটে ব্যাটিং করে বুঝিয়ে দিচ্ছেন ইনজুরির কারণে পারফরম্যান্সে মরচে ধরেনি লিভিংস্টোনের। 

অবশ্য আইপিএলে নিজের শুরুর মৌসুমে ততটা আলো ছড়াতে পারেননি এই ইংরেজ অলরাউন্ডার। ২০১৯ এবং ২০২১ মৌসুমে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে কাটিয়েছেন গড়পড়তা এক মৌসুম। কিন্তু ২০২২ সালে খানিকটা ঝুঁকি নিয়েই সাড়ে এগারো কোটির বিশাল অংকের বিনিময়ে তাঁকে দলে ভেড়ায় পাঞ্জাব কিংস। মাঠে অবশ্য প্রথম মৌসুমেই ব্যাটে-বলে দারুণ পারফর্ম করে দলটির আস্থার প্রতিদান দিয়েছিলেন এই তারকা। 

কিন্তু এবারের মৌসুমের শুরুর দিকে ইনজুরির কারণে অনুপস্থিত ছিলেন এই তারকা। পাঞ্জাবের মাঠের খেলাতেও প্রভাব পড়েছে, অনভিজ্ঞ মিডল অর্ডার নিয়ে ভুগতে হয়েছে শিখর ধাওয়ানের দলকে। তবে লিভিংস্টোন ফেরার পরেই বদলে গেছে দলের চেহারা, ফেরার পর থেকেই আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। 

মুম্বাইয়ের বিপক্ষে রীতিমতো রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন এই তারকা। চার নম্বরে  ব্যাট করতে নেমে প্রতিপক্ষের বোলারদের রীতিমতো পাড়ার বোলারে নামিয়ে আনেন এই তারকা।

সাত চার এবং চার ছক্কায় ৪২ বলে অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংস খেলার পথে জোফরা আর্চারকে হাঁকিয়েছেন টানা তিন ছক্কা। তাঁর মারকুটে ব্যাটিংয়ে ভর করেই প্রথম দশ ওভারে ৭৮ রান তোলা শেষের দশ ওভারে তুলেছে ১৩৬ রান। 

টি টোয়েন্টিতে বিশ্বসেরা তারকা হওয়ার সব গুণাবলীই আছে লিভিংস্টোনের মাঝে। এখন দেখার বিষয় কতদিন দুরন্ত ফর্মটা ধরে রাখতে পারেন এই অলরাউন্ডার। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...