সত্য সুন্দর লিটন!

যতই সময় এগিয়েছে সলিড লিটন আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়েছেন। সম্ভবত ইনিংসের প্রথম ভুল শট খেলে পঞ্চাশ অতিক্রম করলেন! এরপর শান্ত লিটন যেন অশান্ত হয়ে উঠলেন। না, ভুল বললাম, লিটন শান্তই ছিলেন। তার ব্যাটই বোধ হয় অশান্ত হয়ে গেছিল। বল আসছে, লিটন আলতো করে আরামসে ব্যাটকে বলের দিকে চালাচ্ছেন! এই তো অফ ড্রাইভ, পরেরটা মারলেন স্কয়ার ড্রাইভ, এর মাঝে তার ক্ল্যাসিক অন ড্রাইভ দেখা যেন ইনিংসের সামান্য অপূর্ণতাও ঘুচিয়ে দিল।বাদ যায়নি আপার কাট মেরে ছক্কাও।

শিরোনামে যা বলেছি ঠিক তাই – লিটন দাসের ব্যাটিং দেখে এই মুহূর্তে এমনই অনুভূতি হচ্ছে আমার। বলা হয়, মানুষ হুট করেই প্রেমে পড়ে। আর পড়ে ডুবে যায়। আমার বোধ হয় তেমনটাই হয়েছে।

রাত জেগে টেস্ট দেখার অভ্যেস ছিলোই। তবে ইন্টারনেটের কল্যাণে বা অকল্যাণে মাঝেমধ্যেই বিরতি নিয়েছি, সেটা স্বীকার করতে আপত্তি নেই। সেট হয়ে টপ অর্ডারদের যাওয়া আসার মিছিলে আরেকটি ম্যাড়মেড়ে ইনিংস হারেরই হাতছানি দিচ্ছিল।

ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি আউট হওয়ার পর উইকেটে ছিলেন লিটন আর নুরুল হাসান সোহান। দু’জনের প্রতি নিজের কিছুটা পক্ষপাতদুষ্টতায় একটু গা ঝাড়া দিয়েই উঠেছিলাম!

এরপর আমার লিটনকাব্য অবলোকনের পালা শুরু। ট্রেন্ট বোল্ট, নিলওয়াগনার, কাইল জেমিসন, কেউই পার পাচ্ছেন না। গা বরাবর শর্ট বলগুলোকে অনায়াসে ব্যাট দিয়ে শাসন করছেন এক বঙ্গসন্তান। হতাশ হয়ে ফুলার লেন্থে বল করলেন সামনের পায়ে কি অবলীলায় ড্রাইভ করছেন! আর অফ স্ট্যাম্পের বাইরে স্কয়ার অব দ্য উইকেটে কাট তো তার ডান হাতের নিয়মিত খেল।

যতই সময় এগিয়েছে সলিড লিটন আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়েছেন। সম্ভবত ইনিংসের প্রথম ভুল শট খেলে পঞ্চাশ অতিক্রম করলেন! এরপর শান্ত লিটন যেন অশান্ত হয়ে উঠলেন। না, ভুল বললাম, লিটন শান্তই ছিলেন। তার ব্যাটই বোধ হয় অশান্ত হয়ে গেছিল।

বল আসছে, লিটন আলতো করে আরামসে ব্যাটকে বলের দিকে চালাচ্ছেন! এই তো অফ ড্রাইভ, পরেরটা মারলেন স্কয়ার ড্রাইভ, এর মাঝে তার ক্ল্যাসিক অন ড্রাইভ দেখা যেন ইনিংসের সামান্য অপূর্ণতাও ঘুচিয়ে দিল।বাদ যায়নি আপার কাট মেরে ছক্কাও।

যখন সোহান আউট হলেন, লিটন সম্ভবত ৭৩ এ ছিলেন। মনের কোণে ভয় জাগল, সেঞ্চুরি করার সুযোগ পাবেন তো লোয়ার অর্ডারকে সাথে নিয়ে? এমন ব্যাটিং করে যদি সেঞ্চুরি না পায়, তবে তো তার নয়, সেঞ্চুরিরই দুর্ভাগ্য! না, লিটন সেটা হতে দেননি। কেবলই সপাটে চালিয়েছেন।

মাঝে মিরাজ আউট হলেও লিটনের ব্যাট থামেনি। প্রথম সেঞ্চুরির মতোন নার্ভাস নয়, পুরো ইনিংসে ডমিনেট করা ব্যাটার ডমিনেটিং স্টাইলেই শতক তুলে নিলেন।

বাংলাদেশে রাতভোর হতে সকালে পর্যন্ত মাঝের কিছু মুহূর্ত তার ব্যাটিংয়ের প্রেমে মোহাবিষ্ট করে রেখেছিলেন

কমেন্টেটর রা বার বার বলেন, ‘ক্লাসি’ ‘ক্লাসি’! লিটন দাস হয়তো ক্যারিয়ারে আরও অনেক বড় বড় ইনিংস,খেলবেন। কিন্তু কিউই কন্ডিশনে অন্য প্রান্তে ব্যাটারদের যাওয়া আসার মিছিলের ফাঁকে এমন দাপুটে প্রশান্তিময় ব্যাটিংয়ের প্রেমানুভূতি কোনোদিনও ম্লান হবে না।

লিটন, আপনার ব্যাটিং আসলেই ‘সুন্দর’!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...