ব্রাজিল চায় এনরিকেকে, নেইমারদের দ্বিমত

ব্রাজিল ফুটবলের স্বপ্নদ্রষ্টা পারি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। যেই পেলের হাত ধরেই ব্রাজিল ফুটবল সমৃদ্ধি লাভ করেছে, সেই পেলে আজ পৃথিবী নামক ছোট্ট গ্রহ থেকে বহু দূরে। খানিকটা আক্ষেপ নিয়েই হয়ত তিনি চলে গেলেন। তিনি একাই ব্রাজিলের তিনটি বিশ্বকাপ জয়ের কারিগর। তাঁর পরে  ব্রাজিল আরও দুইটি বিশ্বকাপ জিতলেও, তৃতীয়টি জেতা হয়নি।

বহু আশা আর দুর্দান্ত একটি দল নিয়ে কাতারে হাজির হয়েছিল ব্রাজিল দল। এবার অন্তত হেক্সা মিশল পাবে পূর্ণতা। তবে না, সেটা হল না। ব্রাজিল না পারলেও তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দী আর্জেন্টিনা জিতে নিয়েছে নিজেদের তৃতীয় বিশ্বকাপ। সেলেসাওদের ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে সরে দাড়িয়েছেন সদ্য সাবেক কোচ তিতে। তাঁর ফেলে রাখা জায়গাটা তো আর খালি রাখা যায় না। পৃথিবী নাকি শূন্যস্থান, শূন্য রাখে না।

ব্রাজিলের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তাই হন্যে হয়ে নতুন কোচের সন্ধান করছে। প্রায়শই বিশ্ব কাপানো কোচদের নাম শোনা যায়। তবে এখন অবধি কাওকেই চূড়ান্ত করেনি ব্রাজিলের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এবার নতুন করে স্প্যানিশ কোচ লুইস এনরিককে ঘিরে গুঞ্জনে সূত্রপাত হয়েছে। তিনিই নাকি পছন্দের তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন এমনটাই মত বহু গণমাধ্যমের।

লুইস এনরিকে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে স্পেন দলের ডাগআউটের হর্তাকর্তা ছিলেন। তিনি তরুণ একটা দল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বিশ্বকাপের মঞ্চে। তবে দলের হয়েছিল ভরাডুবি। দ্বিতীয় রাউন্ডে মরক্কোর কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল একবারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। স্বাভাবিকভাবেই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এনরিকে। তাইতো তিনি বর্তমানে চাকরিহীন অবস্থায় রয়েছে।

এই সুযোগটাই লুফে নিতে চায় ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন। বেশকিছু কারণও রয়েছে এনরিককে ব্রাজিল দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পেছনে। প্রথমত এনরিকে বেশ সাহসী একজন কোচ। তিনি দলের প্রয়োজনে যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করেন না। তাছাড়া তরুণ খেলোয়াড়দের প্রাধান্য দেওয়ার বিষয়েও তিনি সিদ্ধহস্ত। ব্রাজিলে তরুণ প্রতিভাদের অভাবও নেই। সেই সাথে এনরিকে জানেন ঠিক কি করে শিরোপা জয় করতে হয়। তাছাড়া আগ্রাসী মনোভাব রয়েছে তাঁর।

দলকে সেই মোতাবেক দিকনির্দেশনাই দিয়ে থাকেন এনরিকে। এই সবকিছুই এখন ব্রাজিল ফুটবলের চাহিদা অনুযায়ী মিলে যায়। কিন্তু এনরিককে ব্রাজিলের কোচ নিয়োগের সমস্যা রয়েছে। আর সেটা খানিকটা গুরুতর। দলের স্তম্ভ এমন কিছু খেলোয়াড় এনরিকের বিপক্ষে। তাঁরা বরং এনরিকের পরিবর্তে ব্রাজিলিয়ান কোচ ফ্রার্নান্দো দিনিজকে কোচ হিসেবে দেখতে চান।

ব্রাজিলিয়ান দল ফ্লুমিনেসের কোচের দায়িত্ব পালন করছেন দিনিজ। তাঁকে আখ্যায়িত করা হয়েছে ‘ব্রাজিলিয়ান পেপ গার্দিওলা’ নামে। বলের দখল ও প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হয়ে খেলতে তিনি তাঁর শীর্ষ্যদের উদ্বুদ্ধ করে থাকেন। সেদিকটা বিবেচনায় তাঁকে দলে চাইছে বহু সিনিয়র খেলোয়াড়। কিন্তু দিনিজের শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা একেবারে শূন্যের কোঠায়। তাই খানিকটা বিপাকেই রয়েছে ব্রাজিলের ফুটবলের কর্তারা।

এনরিকে ছাড়াও জিনেদিন জিদান, পেপ গার্দিওলা, কার্লো আনচেলত্তিদের মত ইউরোপের বেশ নামকরা কোচদের নাম যুক্ত হতে দেখা গেছে ব্রাজিলের সাথে। তবে শেষ অবধি ঠিক কার কাঁধে উঠবে দায়িত্ব সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে নিশ্চয়ই তাঁর উপর চাপটা থাকবে ভীষণ। ব্রাজিলকে তো জেতাতে হবে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link