শুধু ব্যাটে কিছু রান থাকলেই হয়ে যেত। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি বাংলাদেশের অধিনায়ক হয়ে যেতেন। অথচ তিনি আজ কোন খবরেই নেই। তাঁকে নিয়ে কারো মধ্যেই যেন একবিন্দু আগ্রহ নেই। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম বড় তারকা, বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যেন আজ ক্রিকেটের অতিথি পাখি।
রিয়াদের অধিনায়কত্ব নিয়ে অভিযোগ গুলো তাও বাংলাদেশ এড়িয়ে যাচ্ছিল। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনেকটা সময়ই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিলেন। তবে সমস্যাটা হলো ব্যাট হাতে রিয়াদের অফ ফর্ম। শুধুমাত্র অধিনায়ক হিসেবে তাঁকে দলে বহন করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই অধিনায়কত্ব ও দলে জায়গা হারালেন তিনি।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জায়গা হারানোর পর আসলে রিয়াদের কাটছে অলস সময়। কেননা এরমাঝে বাংলাদেশ কোন ওয়ানডে ম্যাচ খেলছেনা। আবার টেস্ট ক্রিকেট থেকেও অবসর নিয়েছেন এই ব্যাটার। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রিয়াদের সহসা মাঠে নামার সুযোগ নেই।
তবে এরমাঝে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারতেন রিয়াদ। দেশের ক্রিকেটে শুরু হচ্ছে নতুন মৌসুম। এই মাসেই শুরু হচ্ছে জাতীয় ক্রিকেট লিগ। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসর নেননি রিয়াদ। ফলে জাতীয় লিগে রিয়াদ খেলবেন এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক ছিল।
অথচ সবাইকে অবাক করে দিয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগে খেলতে রাজি হননি এই ক্রিকেটার। নিজেকে ক্রিকেট থেকে একটু বিশ্রামই দিতে চাইছেন তিনি। আরো বিস্ময়কর ব্যাপার ঘটেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল সফর নিয়ে। ভারতের চেন্নাইয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল।
এই অবসর সময়ে ভারতে গিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করার কথা ছিল রিয়াদের। বা(বিসিবি) থেকেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে এমন প্রস্তাবই দেয়া হয়েছিল। অথচ সেই প্রস্তাবেও রাজি হননি রিয়াদ। ফলে জাতীয় ক্রিকেট লিগ কিংবা এ দল কোনটাতেই খেলছেন না তিনি।
অথচ ব্যাট হাতে রিয়াদ যে বাজে সময় কাটাচ্ছেন সেটা কাটিয়ে উঠতে পারতেন এই ম্যাচগুলো খেলেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা রিয়াদের জন্য দিনদিন ভীষণ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেট ছেড়েছেন, টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়েছেন। বাকি থাকে শুধু ওয়ানডে ফরম্যাট।
অথচ এই ফরম্যাটেও খুব একটা ভালো সময় কাটছেনা তাঁর। অনেকদিন ধরেই তাঁর ব্যাটে রানের দেখা মিলেনা। ওয়ানডে স্ট্রাইকরেট নিয়েও আছে প্রশ্ন। এমন চলতে থাকলে ওয়ানডে দলেও তাঁর জায়গা ধরে রাখাটা কঠিন হয়ে যেতে পারে। তবে রিয়াদ কী আদৌ এসব নিয়ে চিন্তিত? যদি হতেন তাহলে নিশ্চয়ই এই সময়টা কাজে লাগাতে চাইতেন।
অফফর্মের কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা খেলতে পারলেন না। ধরা হচ্ছে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপই রিয়াদের শেষ বিশ্বকাপ হতে চলেছে। তবে ব্যাট হাতে রিয়াদ আবার চেনা রূপে ফিরতে না পারলে এই বিশ্বকাপটা রিয়াদ খেলতে পারবেন তো?
টেস্ট ক্রিকেট থেকে গতবছরই অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। ফলে সাদা বলের ক্রিকেটে নিজেকে আরো উজার করে দেয়ার কথা ছিল তাঁর। রঙিন পোশাকে অনেক বেশি মনোযোগ দেয়ার সুযোগও ছিল। তবে রিয়াদ বোধহয় নিজেকে একটু সময় দিতে চাইছেন। নিজের খেলাটা নিয়ে একটু ভাবতে চাইছেন। হয়তো এই অবসর সময়টাই আবার রিয়াদকে ফিরে পেতে সাহায্য করবে।