সিটির অর্থের নীতি

এবারের দলবদলের ‘হটকেক’ স্ট্রাইকারকে দলে ভিড়িয়েছে তারা। এমনটা প্রায় সময়ই করতে দেখা যায়। স্ট্রাইকার কিনতে কার্পণ্য করেনি সিটি। এমন সব চড়া দরে কেনা স্ট্রাইকারদের নিয়েই থাকছে আজকের আয়োজন।

মৌসুমের শেষ দিকে ইউরোপিয়ান ফুটবল অঙ্গন মেতে ওঠে অন্যরকম এক উন্মাদনায়। খেলোয়াড়দের ক্রয়-বিক্রয়ের মহা উৎসবের হাওয়া বয়ে যায় ইউরোপের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। সেখানটায় অর্থের ছড়াছড়ি যেন আরও বেশি আকর্ষণ বাড়িয়েছে। আর সে অর্থের সাগরে ডুব দেওয়া ক্লাবের মধ্যে ম্যানচেস্টার সিটির নামটাও বেশ জোড়াল।

গেল মৌসুমটা সিটিজেনদের একটাই অভাব ছিল একজন কার্য্যকর স্ট্রাইকারের। যদিও, পেপ গার্দিওলার দল গোল করতে কখনোই হোঁচট খায়নি। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে ইচ্ছেটা স্রেফ ইচ্ছেই রয়ে যায়। তাইতো এবারের দলবদলের ‘হটকেক’ স্ট্রাইকারকে দলে ভিড়িয়েছে তারা। এমনটা প্রায় সময়ই করতে দেখা যায়। স্ট্রাইকার কিনতে কার্পণ্য করেনি সিটি। এমন সব চড়া দরে কেনা স্ট্রাইকারদের নিয়েই থাকছে আজকের আয়োজন।

  • আর্লিং হাল্যান্ড (নরওয়ে)

এবারের মৌসুমের হটকেক ছিলেন নরওয়ের তরুণ স্ট্রাইকার আর্লিং হাল্যান্ড। অস্টিয়ান ক্লাব রেড বুল সালৎজবার্গে থাকতেও নিজের দিকে আলো কেড়ে নিয়েছিলেন হাল্যান্ড। এরপর জার্মান ক্লাব বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডে নিজেকে মেলে ধরে চাহিদা বাড়িয়ে নেন বহুগুণে।

নিজের গোল করার ক্ষমতায় মুগ্ধ করেন ইউরোপের বড় বড় ক্লাবকে। তবে সবাইকে থামিয়ে দিয়ে হাল্যান্ডকে নিজেদের করে নেয় ম্যানচেস্টার সিটি। ৫৪ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে তাকে আকাশী জার্সি পড়াতে চলেছে সিটিজেনরা।

  • সার্জিও অ্যাগুয়েরো (আর্জেন্টিনা)

ম্যানচেস্টার সিটির ইতিহাসে সার্জিও অ্যাগুয়েরো যেন এক অবিচ্ছেদ্য নাম। তাঁর স্মরণে একখানা ভাস্কর্যও স্পাপন করেছেন সিটিজেনরা। এই সার্জিও অ্যাগুয়েরোকে ২০১১ সালে ৩৬ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে স্পেন থেকে উড়িয়ে এনেছিল ম্যানচেস্টার সিটি।

স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে তরুণ স্ট্রাইকার ক্রমান্বয়ে হয়েছেন পরিণত। এরপর ২৩ বছর বয়সে সিটির জার্সি গায়ে তুলে হয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির কিংবদন্তি।

  • ইডেন জেকো (বসনিয়া) 

২০১১ এর দলবদলে ইডেন জেকোকেও বেশ চড়া দরেই ক্রয় করেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। জার্মান বুন্দেসলিগার ক্লাব ওলফসবার্গে থেকে তাকে সে সময়ে ৩৩.৩০ মিলিয়ন পাউন্ডে নিজেদের দলে ভেড়ায়।

সেখানে পাঁচ মৌসুম কাটিয়েছেন। বসনিয়ান এই তারকা খেলোয়াড় সিটিজেনদের জার্সিতে লম্বা সময় ধরে খেললেও তাঁর অবদান অনেকটাই ঢাকা পড়ে যায় অ্যাগুয়েরোর দূর্দান্ত পারফরমেন্সের সামনে।

  • উইলফ্রেড বনি (আইভেরি-কোস্ট)

মাত্র দুই মৌসুমের জন্যে ম্যানচেস্টার সিটির জার্সি পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিলে আইভেরি কোস্টের স্ট্রাইকার উইলফ্রেড বনির। তবে তাকে এই দুই মৌসুমের জন্যে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে জায়গা করে দিতে প্রায় ২৯.০৭ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করেছিল সিটিজেনরা।

২০১৫ সালে তাকে ইংলিশ ক্লাব সোয়ানসি সিটি থেকে কিনে নেয় সিটি। তবে ঠিক নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি বনি। অগ্যতা ধারে খেলার পরের মৌসুমে তাকে ছেড়ে দিতে হয়।

  • গ্যাব্রিয়েল জেসুস (ব্রাজিল)

আর্লিং হ্যালান্ড দলে আসার পর সবচেয়ে বড় হুমকিতে রয়েছেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। গেল বেশ কিছু মৌসুম ধরে এই ব্রাজিলিয়ান ভুগছেন নানা ইনজুরিতে। এর পাশাপাশি অফফর্ম সিটিকে বাধ্য করেছে নতুন এক স্ট্রাইকার খুঁজতে। তবে এমনটা হওয়া কথা বোধহয় ছিল না।

কেননা বেশ আশা করেই ২০১৬ সালে তাকে ২৮.৮০ মিলিয়ন পাউন্ডে ঘরের ছায়ায় নিয়ে আসে ম্যান সিটি। ব্রাজিলিয়ান এই তারকা স্ট্রাইকার তখনও ইউরোপে নতুন। এমন একজন খেলোয়ড়কে দলে ভেড়াতে এত পরিমাণ অর্থ খরচ করাটা নিতান্তই বেশ খরচের বিষয়।

এখন অবধি স্ট্রাইকারদের পেছনে সিটির অর্থ খরচ করার প্রবণতা খানিকটা বেশি। হয়ত এমনটা চলতে থাকবে। কিংবা তারা একটা পর্যায়ে নিজেদের অ্যাকাডেমির উপরও নজর দেবে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...