এবার এক নৌকায় স্থীর হবেন মাশরাফি!

কাজের পরিধি যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে ব্যস্ততাও। ঠিক এমন সময়ে প্রশ্ন জাগার কথা- ঠিক আর কতদিন দুই নৌকায় পা দিয়ে চলবেন মাশরাফি বিন মর্তুজা? 

টানা দ্বিতীয় দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। দ্বিতীয় মেয়াদে তাই দায়িত্ব বেড়েই গেল তার। কাজের পরিধি যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে ব্যস্ততাও। ঠিক এমন সময়ে প্রশ্ন জাগার কথা- ঠিক আর কতদিন দুই নৌকায় পা দিয়ে চলবেন মাশরাফি বিন মর্তুজা?

বয়সটা ৪০ এর ঘরে পৌঁছে গেছে মাশরাফির। তার থেকে বড় দুশ্চিন্তার জায়গা তার হাটুর ইনজুরি। যেই ইনজুরি নক্ষত্র হতে চাওয়া এক ক্যারিয়ারকে থমকে দিয়েছে হ্যালোজেন আলোতে। অস্ত্রপচার টেবিল থেকে বেড়িয়ে বহুবার তিনি লড়াই করেছেন। চালিয়ে গেছেন ক্রিকেট ক্যারিয়ার।

তবে এবার অবশ্য তার থামা উচিত। বিদায় বলা উচিত ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে। খেলোয়াড়ী জীবনের ইতি টেনে নেওয়ার সম্ভবত এটাই মোক্ষম সময়। কেননা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে দেওয়ার মত তার এখন তেমন কিছুই অবশিষ্ট নেই। বরং এখন নড়াইলকে দেওয়ার আছে অনেক কিছুই।

সামনেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শুরু হতে চলেছে। কথা ছিল মাশরাফি বিন মর্তুজা সেই টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন। নেতৃত্ব দেবেন সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। তবে সেটা সম্ভবত হয়ে উঠছে না এদফা। হাটুর ইনজুরিটাই যে মূল বাঁধার কারণ।

গেল আসরে সফলভাবেই অবশ্য মাশরাফি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সিলেট দলকে। তরুণ দলটাকে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন ফাইনাল অবধি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি দল। তবে চমক দেখিয়েছে ঠিকই। টুর্নামেন্টের শুরুতে যে মোটেই আলোচনায় ছিল না সিলেট স্ট্রাইকার্স। মাশরাফির নেতৃত্ব গুণ অনেকটাই প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে সিলেটের সাফল্যে।

সেই গুণ অবশ্য মাশরাফির ছিল বহু আগে থেকেই। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি লম্বা সময়। সফলতার হারও তার পক্ষেই কথা বলে। তবে সব ভালরই একটা সমাপ্তি রয়েছে। মাশরাফি নিজের সেই সমাপ্তি নিয়ে আদৌ ভেবেছেন কিনা সেটাই বরং প্রশ্ন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নড়াইল-১ আসনের এই মাথা থেকে ও মাথা ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি প্রতিটা মানুষকেই আশ্বস্ত করেছেন উন্নতির। তিনি বলেছেন, তার পাওয়ার কিছু নেই। ক্রিকেট ক্যারিয়ার তাকে সবকিছুই দিয়েছে। সেটা এক উজ্জ্বল সত্য।

তাই মাশরাফির বরং ঘটা করেই ক্রিকেটকে বিদায় জানানো উচিত। হতে পারে সেটা বিপিএলের মঞ্চে। তেমন পরিকল্পনা হয়ত মাশরাফির নেই। কিন্তু তা না থাকাটা বরং অসুবিধায় ফেলে দেবে তাকে। জনপ্রতিনিধি হয়ে তাকে বেশ গুরুদায়িত্বই পালন করতে হবে। তিনি তেমনটি করতে গিয়ে নিজের ফিটনেস আর ক্রিকেটের সাথে আপোষ করবেন হয়ত। তাতে সম্পৃক্ত থাকা ক্রিকেট দলকে খানিক বিপাকেই পড়তে হবে তাকে নিয়ে।

তবে নামে ভারে তাকে বাদ দেওয়ারও উপায় থাকবে না। তাছাড়া ক্যারিয়ারও তো আর বেশিদূর এগোবার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বর্তমান পেস আক্রমণ দেশের ক্রিকেটের ইতিহাস সেরা। এমন এক আক্রমণে জায়গা করে নেওয়া মাশরাফির জন্যে অবশ্য সম্ভবপর নয়।

মাশরাফি নিশ্চয়ই আর বেশিদিন দুই নৌকায় পা দিয়ে চলতে চাইবেন না। জনপ্রতিনিধির পূর্ণ দায়িত্ব পালনে বর্ণালী এক ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে বিদায় জানাবেন নিশ্চয়ই। সেটাই বরং তার জন্যে হতে পারে আদর্শ সিদ্ধান্ত।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...