এক ঝাক অভিষেকের অপেক্ষা

ক্যারিবিয়ানদের স্কোয়াডের মাত্র পাঁচ ক্রিকেটার অভিজ্ঞতা রয়েছে ওয়ানডে খেলার। অর্থ্যাৎ আগামীকালের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছয় জন ক্রিকেটারের অভিষেক হতে যাচ্ছে। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হলেন মিডল ব্যাটসম্যান রোভম্যান পাওয়েল। এখন পর্যন্ত ৩৪ টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি।

দীর্ঘ ১০ মাস বিরতির পর অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ফেরার ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই সিরিজ দিয়েই আইসিসি ওয়ানডে লিগ শুরু করতে যাচ্ছে দুই দল। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাকিব আল হাসানের প্রত্যাবর্তনের সাথে অধিনায়ক হিসাবে যাত্রা শুরু হচ্ছে তামিম ইকবালের।

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে ১১.৩০ মিনিটে। ২০১৮ সালে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো হোম অব ক্রিকেটে।

করোনা ইস্যুতে বাংলাদেশ সফর থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম সারির ক্রিকেটাররা। ক্যারিবিয়ানদের স্কোয়াডের মাত্র পাঁচ ক্রিকেটার অভিজ্ঞতা রয়েছে ওয়ানডে খেলার। অর্থ্যাৎ আগামীকালের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছয় জন ক্রিকেটারের অভিষেক হতে যাচ্ছে। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হলেন মিডল ব্যাটসম্যান রোভম্যান পাওয়েল। এখন পর্যন্ত ৩৪ টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি।

করোনায় আক্রান্ত হওয়াতে শেষ সময়ে এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারিয়েছে লেগ স্পিনার হেইডেন ওয়ালশকে। তাই প্রথম ওয়ানডেতে রোভম্যান পাওয়েলের সাথে পেসার আলজারি জোসেফ, সুনীল অ্যামব্রিস এবং অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদই ক্যারিবিয়ানদের বল ভরসার নাম।

কাগজে কলমে আগামীকালের ম্যাচের ফেবারিট বাংলাদেশ। খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ওয়ানডে লিগের ৩০ পয়েন্ট অর্জনের এক সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের সামনে। তবে অধিনায়ক তামিম ইকবাল এতো দূর না ভেবে জানিয়েছেন ভালো শুরু করাটা আগে জরুরী। তিনি বলেন, ‘সিরিজ জেতা অবশ্যই জরুরি। কিন্তু আমার যেটা মনে হয় কালকের ম্যাচটা শুরু করাটা সবচেয়ে বেশি জরুরী।’

এই ম্যাচ দিয়েই আইসিসির নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের ফেরার ম্যাচে অভিষেক হতে পারে হাসান মাহমুদ ও মেহেদী হাসানের। মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে বোলিং আক্রমণে দেখা যেতে পারে এই দুই তরুণকে। ওপেনিংয়ে যথারীত তামিমের সাথে থাকবেন লিটন দাস। এরপর ব্যাটিং অর্ডারে শান্ত, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে থাকবেন সৌম্য সরকার।

তবে কাগজে কলমে বাংলাদেশ ফেবারিট হলেও পরিসংখ্যানে এখনো এগিয়ে রয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। এখন পর্যন্ত ৩৮ টি ওয়ানডে খেলেছে দুই দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২১ টি জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ১৫ টি ম্যাচে। তবে সর্বশেষ ১৯ ম্যাচে ১২ টিতে জয় পায় বাংলাদেশ। আর সর্বশেষ ৫ ম্যাচের সব গুলোতেই জিতেছে টাইগাররা। সর্বশেষ ১০ ম্যাচ বিবেচনায় নিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় ৮ ম্যাচে। দুই দলের খেলা ৯ টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ৫ টি সিরিজ এবং বাংলাদেশ জিতেছে ৪ টি সিরিজ। বাংলাদেশের সামনে সুযোগ রয়েছে সমতা আনার।

দুই দলের মুখোমুখি হওয়া ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৩২২ রান। গত বিশ্বকাপে সাকিব লিটনের ব্যাটে এই রান তাড়া করে জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৩৩৮ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন সংগ্রহের সাথেও জড়িয়ে আছে বিশ্বকাপ। ২০১১ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে ৫৮ রান অলআউট হয়েছিলো বাংলাদেশ। পরের বছরই ক্যারিবিয়ানদের ৬১ রানে অলআউট করে প্রতিশোধ নেয় টাইগাররা।

ক্যারিবিয়ানদের সাথে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয় ১৬০ রান ও ৮ উইকেটের। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৭৭ রান ও ১০ উইকেটের ব্যবধানে জয় পেয়েছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট ব্যবধানের জয় ১৮ রান ও ২ উইকেটে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বনিম্ন ব্যবধানে জয় ৩ রান ও ১ উইকেটের।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিপক্ষে  বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী তামিম ইকবাল। ২৬ ম্যাচে তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে ৪০.৫৬ গড়ে ৯৩৩ রান। ২৬ ম্যাচে ৪৪ গড়ে ৮৮০ রান নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন মুশফিকুর রহিম। পরের অবস্থানে থাকা সাকিব আল হাসানের সংগ্রহ ১৮ ম্যাচে ৫৫.৪৬ গড়ে ৭২১ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী শাই হোপ। মাত্র ১০ ম্যাচে ৯৪.৭৫ গড়ে হোপের সংগ্রহ ৭৫৮ রান। তবে করোনার কারণে বাংলাদেশ সফরে আসেননি হোপ।

বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩০ উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ১৯ উইকেট নিয়ে পরের অবস্থানে আব্দুর রাজ্জাক ও মোস্তাফিজুর রহমান। সিরিজে মোস্তাফিজ থাকলেও নেই বাকি দুই জন। ১৮ উইকেট নিয়ে ৪র্থ স্থানে রয়েছেন সাকিব আল হাসান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি কেমার রোচ। মাশরাফির সমান ১৯ ম্যাচে তিনিও নিয়েছেন ৩০ উইকেট। তবে রোচের সামনে সুযোগ আছে মাশরাফিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।

দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ:

বাংলাদেশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: জশুয়া ডি সিলভা (উইকেটরক্ষক), সুনীল অ্যামব্রিস, জেসন মোহাম্মদ, আন্দ্রে ম্যাকার্থি, রেমন রেইফার, রোভম্যান পাওয়েল, কাইল মেয়ার্স, এনক্রুমাহ বনার, চেমার হোল্ডার, আকিল হোসেন এবং আলজারি জোসেফ।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...