গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অন্তিম লগ্নের সর্বাধিনায়ক
আজ থেকে কয়েক প্রজন্ম পরেও কেউ হয়তো আলোচনার টেবিলে উচ্চারণ করবেন ম্যাক্সওয়েলের নাম, আর বাকিরা শিউরে উঠবে।
জার্সিটা আলাদা; এক ম্যাচে হলদে রং, আরেক ম্যাচে কালোর আধিক্য। তা না হলে হয়তো অস্ট্রেলিয়া-ভারতের ম্যাচকে ভুল করে অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের হাইলাইটস ভেবে বসতো অনেকেই। কেননা দুই দিনেই সব লাইমলাইট একাই কেড়ে নিয়েছেন একজন, তিনি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। বিশ্বকাপে আফগানদের হারানোর পর এবার ভারতকে একক বীরত্বে হারালেন তিনি।
ভারতের ব্যাটিংয়ের কথা, শেষ ওভারে বোলিং করতে এসে ৩০ রান হজম করে বসেন ম্যাক্সওয়েল; এতেই পিছিয়ে পড়েছিল সফরকারীরা। তবে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত ঠিকই করেছেন তিনি; জয়ের জন্য যখন শেষ চার বলে ১৬ রান প্রয়োজন ছিল অস্ট্রেলিয়ার, তখন চার বল থেকে ১৮ রান নিয়েছেন। সেটার বদৌলতেই হারতে হারতে মনে রাখার মত একটা জয়ে পেয়ে গিয়েছে দলটি।
স্বাগতিকদের ছুড়ে দেয়া ২২৫ রানের টার্গেটে ৬৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল অজিরা। সেসময় দলের হাল ধরেন এই অলরাউন্ডার। স্টয়নিস, ওয়েডদের নিয়ে জুটি গড়ে লড়াই চালিয়ে যান তিনি। ছক্কা হাঁকিয়ে ২৮ বলে করেছিলেন ফিফটি; এরপর হয়ে উঠেছেন আরো হিংস্র। পরের বিশ বলে করেছেন ৪৯ রান।
ষষ্ঠ ওভারে নেমে এই মিডল অর্ডার ব্যাটার অপরাজিত ছিলেন শেষপর্যন্ত, খেলেছেন ৪৮ বলে ১০৪ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস। পুরোটা সময় জুড়েই মোহিত করেছেন ক্রিকেটভক্তদের; প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, আর্শ্বদীপ সিংদের বলে কয়ে বাউন্ডারি ছাড়া করেছেন তিনি। তবে গ্যালারিতে থাকা ভারতীয়দের হৃদয়ে সেটা নিশ্চয়ই জ্বালা সৃষ্টি করেছিল।
বাইশ গজে ঝড় তোলার দিনে রেকর্ড বইয়েও ঝড় তুলেছেন এই তারকা। ৪৭ বলে শতক পূর্ণ করার মধ্য দিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়ার দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান হয়েছেন তিনি; একইসাথে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিকও এখন এই ডানহাতি, রোহিত শর্মার সমান চারটি তিন অঙ্কের ইনিংস রয়েছে তাঁর।
আট ছয় আর আট চারে সাজানো একটা ইনিংস একটা মহাকাব্য লিখেছে। ক্রিকেট যতদিন থাকবে ততদিন হয়তো থেকে যাবে এই অমর সৃষ্টি, সেই সাথে থেকে যাবে একটা নাম ‘গ্লেন ম্যাক্সওয়েল’। আজ থেকে কয়েক প্রজন্ম পরেও কেউ হয়তো আলোচনার টেবিলে এই শব্দ দুইটি উচ্চারণ করবেন, আর বাকিরা শিউরে উঠবে।