লিওনেল মেসি নাকি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো? – তর্কটা চলছে প্রায় একযুগ ধরেই। এবার এ তর্কে মেসিকে এগিয়ে রেখে ইংলিশ ফুটবল পণ্ডিত গ্যারি লিনেকার জানালেন, বার্সা কিংবদন্তির ‘ধারেকাছেও’ নেই রোনালদো!
শেষ এক যুগে দুজনের দ্বৈত শাসনই দেখেছে বিশ্ব। এ সময় বারোটা ব্যালন ডি অরের ১১টাই ভাগ করে নিয়েছেন মেসি-রোনালদো।
বার্সা অধিনায়ক তার ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় জুড়েই আছেন কাতালান ক্লাবটিতে। গেল বছরই জিতেছেন রেকর্ড ষষ্ঠ ব্যালন ডি অর। চলতি মৌসুমেও সপ্তম বারের মতো ট্রফিটি জেতার জোর দাবিদারই ছিলেন তিনি।
অন্যদিকে রোনালদো পুরো ক্যারিয়ারজুড়ে খেলেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবে, দুটো ক্লাবের হয়েই জিতেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। সাফল্য-ক্ষুধার্ত হয়ে এরপর ছুটেছেন জুভেন্তাসে, ভিন্ন লিগে নিজেকে প্রমাণের চ্যালেঞ্জ নিতে। সেটা নিচ্ছেনও৷ চলতি মৌসুমেই যেমন সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে করেছেন ২৫ গোল, করিয়েছেন আরও তিনটি গোল।
তবুও লিনেকারের সেরার খাতায় রোনালদো পিছিয়ে থাকবেন শুধুমাত্র সামগ্রিক দক্ষতার হিসেবে৷ সম্প্রতি বিবিসি স্পোর্টসকে লিনেকার বলেন, ‘মানুষজন জীবনের সব ক্ষেত্রকেই গোত্রীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চায়। মেসি বনাম রোনালদো ব্যাপারটাও তেমন কিছুই। যেটা দিনশেষে আপনি বার্সেলোনা সমর্থক নাকি রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবা জুভেন্টাস সমর্থক তার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। যেটা ভালো-আমি বুঝতে পারি ব্যাপারটা।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি রোনালদোরও অনেক বড় ভক্ত। কিন্তু যদি ইতিহাসের সেরা কে এ নিয়ে তর্কটা হয় তাহলে বলবো মেসিই সেরা, আর এ নিয়ে কোনো বিতর্কই থাকা উচিত নয়। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, এটা খুব কাছাকাছি একটা লড়াইও নয়।’
তিনটি ভিন্ন শীর্ষস্থানীয় লিগে শিরোপা জেতায় রোনালদোকে এগিয়ে রাখেন অনেকেই। এ যুক্তির প্রেক্ষিতে লিনেকারের কথা, ‘মেসি অতি অবশ্যই সেখানে থাকাকালীন দারুন সব খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলেছে কিন্তু তার সঙ্গে যেই খেলেছে তারাও প্রায় একই রকমের সংখ্যা ধরে রাখতে পেরেছে। সে সন্দেহবাদীদের বারবারই ভুল প্রমাণ করেছে।’
লিনেকার তাঁর যুক্তিতে শেষ দুই মৌসুমের কথাও উল্লেখ করেন। এ সময়ে দলকে দুবার লিগ জিতিয়েছেন মেসি, নিজে দুইবার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শ্যুও জিতেছেন। সাবেক ইংলিশ ফুটবলারের ভাষ্য, ‘এমনকি শেষ দুই মৌসুমে দল যখন অতীতের মতো ভালো ছিলো না, তবুও তার নৈপুণ্যে একটুও হেরফের হয়নি। সত্যি বলতে, তাকে ছাড়া বার্সা ভালো সমস্যাতেই পড়তো। মেসি যেভাবে বার্সেলোনায় থেকেছে তার মতো করে একজন খেলোয়াড়ের একটা ক্লাবের হয়েই খেলে যাওয়াটা এখন বিরলই হয়ে গেছে। ১৩ বছরে আর্জেন্টিনা ছেড়ে বার্সায় আসাটাকে নাহয় একপাশেই রাখলাম।’
লিনেকার জানান, বার্সা ছাড়লেও বড় সমালোচনার মুখে পড়তেই হতো মেসিকে। তার ভাষ্য, ‘যদি সে কোনো কারণে ক্লাব ছেড়ে যেতোও, তবেও তাকে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ পোহাতেই হতো। এদিক থেকেও মেসি সুবিধা পেতো না।’