মিনো রাইওলা, দ্য সুপার এজেন্ট

মিনো রাইওলা, ইউরোপের ফুটবলের যাদের খানিক মনোযোগ তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন কে এই লোক। তিনি রীতিমত একজন তারকা। না ফুটবল মাঠের নয়, তিনি মাঠের বাইরের তারকা। তিনিই তো কত ফুটবলারদের একেবারে তৃণমূল থেকে উঠিয়ে এনে জায়গা করে দিয়েছেন ইউরোপের বিশাল বড় সব ক্লাবে। সে রাইওলা ছেড়ে গেছেন নিজের দেহখানা, সে রাইওলা এখন আর কারো জন্যে দর কষাকষি করবে না।

যে দেখিয়েছে পথ, সে আজ তাঁর অন্তিম, অনন্ত পথের দিকে দিয়েছে পারি। সে পথের থেকে যে ফেরার উপায় নেই। চাইলেই আইন-কানুনের মারপ্যাঁচ দিয়ে উল্টো পথে হাঁটার সুযোগ নেই। চাইলেই এক ক্লাব ছেড়ে অন্যক্লাবে যাওয়ার সুযোগ নেই। প্রয়াণ ঘটেছে ফুটবলের ‘সুপার এজেন্ট’ মিনো রাইওলার।

মিনো রাইওলা, ইউরোপের ফুটবলের যাদের খানিক মনোযোগ তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন কে এই লোক। তিনি রীতিমত একজন তারকা। না ফুটবল মাঠের নয়, তিনি মাঠের বাইরের তারকা। তিনিই তো কত ফুটবলারদের একেবারে তৃণমূল থেকে উঠিয়ে এনে জায়গা করে দিয়েছেন ইউরোপের বিশাল বড় সব ক্লাবে। সে রাইওলা ছেড়ে গেছেন নিজের দেহখানা, সে রাইওলা এখন আর কারো জন্যে দর কষাকষি করবে না।

ইউরোপের ফুটবলে বেশ এক আলোচিত কিংবা সমালোচিত চরিত্র ছিলেন মিনো রাইওলা। তিনি খেলোয়াড়দের ট্রান্সফার এজেন্ট হিসেবে ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। এই কাজটা করতে গিয়েই তিনিন স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের চোখের বালি হয়েছিলেন। রেড ডেভিল ডেরা থেকে পগবাকে নিয়ে গিয়েছিলেন ইতালির ক্লাব জুভেন্টাসে। তাতেই চটেছিলেন ফার্গুসন।

তবে ফার্গুসনে সে রাগ অবশ্য তিনি হয়ত ভাঙতে পেরেছিলেন পগবাকে আবার ম্যানচেস্টারে ফিরিয়ে। তবে রাগ, ক্ষোভ, অভিমান যাই থাকুক না কেন তাঁর উপর রাইওলা কাজ করে গেছেন খেলোয়াড়দের আর্থিক উন্নয়নের জন্যে। তাই হয়ত জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের মত খেলোয়াড়ও শেষবেলায় হাসপাতালে দেখতে ছুটে গিয়েছিল। তাঁর মৃত্যু নিয়ে তো জলও কম ঘোলা হয়নি।

প্রথমে জানুয়ারির দিকে খবর এলো তিনি মারা গেছেন। আসলে তিনি গিয়েছিলেন নিয়মিত চেক আপের অংশ হিসেবে। তবে এবার তো জল ঘোলা হয় রীতিমত অস্বচ্ছতার চরম সীমানায় পৌঁছে গিয়েছিল। বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে নিজের সাথে লড়াই করে যাচ্ছিলেন। ঠিক যেমনটা তিনি করে যেতেন ক্লাবগুলোর সাথে খেলোয়াড়দের জন্যে।

হঠাৎ করেই তাঁর এজেন্সি মারফরত খবর এলো যে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। একটা শোকের মাতম হয়ে গেল। আবার খানিক বাদেই তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করা হল যে তিনি মারা যাননি। এই তো শুরু দোলাচলের। তবে অবশেষে পরিবার নিশ্চিত করেছে যে তিনি ৩০ এপ্রিল তিনি সত্যিকার অর্থেই মারা গেছেন। অবশেষে বিশাল এক বিবৃতি দিয়ে এই খবরটি জানানো হয়েছে।

১৯৬৭ সালে তিনি জন্মেছিলেন ইতালিতে। প্রায় ৫৪ বছরের একটি বর্ণাঢ্য জীবন শেষে তিনি ইতি টেনে নিলেন। এই সময়ে তিনি ফুটবলটাকে একটু ভিন্নভাবে আপন করে নিয়েছিলেন। তিনি হয়ে গিয়েছিলেন ফুটবলারদের কথা বলার মুখপাত্র। প্রথমবার রাইওলা ডাচ তারকা ফুটবলার ডেনিস বার্গক্যাম্পকে নিয়ে গিয়েছিলেন ইন্টার মিলানে। সেই শুরু এরপর এক এক করে কত খেলোয়াড়দের তিনি দেখিয়েছেন পথ তাঁর হিসেব নেই।

সম্প্রতি তিনি আবার এসেছিলেন আলোচনায় আর্লিং হালান্ডের ট্রান্সফার নিয়ে। হালান্ডকে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে অন্যকোন বড় ক্লাবে নেওয়া নিয়ে বেশ একটা দৌড়ঝাঁপ করছিলেন রাইওলা। এতেই ক্লাব তো বটেই হালান্ডের সাথও তাঁর সম্পর্কের খানিক ফাঁটল ধরে। তবে সে ফাটল নিশ্চয়ই তাঁর মৃত্যুতে জোড়া লেগে যাবে। নানা বিতর্ক ছাপিয়েও তিনি দুইবার হয়েছিলেন বর্ষসেরা এজেন্ট।

২০১৬ ও ২০২২ এই দুই বছর তিনি পেয়েছিলেন বর্ষসেরা এজেন্ট হওয়ার সম্মান। তাছাড়া মারিও বালোতেল্লি ম্যাথিয়াস ডি লিট, জিয়ানলুজি দোন্নারুমা, মার্কো ভেরাত্তিদের মত খেলোয়াড়দেরও বিশ্বস্ত ছিলেন মিনো রাইওলা। তাঁর প্রয়ানে অল্পস্বল্প হলেও ক্ষতি হল খেলোয়াড়দের। খেলোয়াড়দের হয়ে এখন কথার লড়াইয়ের মানুষটা তো আর রইলো না।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...