দুই বছর সংগ্রামের ফসল

এমন ম্যাচ বাংলাদেশ বহু হেরেছে। বিপক্ষ দলের লোয়ার অর্ডারে নামা ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন এমন ঘটনা বোধহয় গুণেও শেষ করা যাবে না। তবে আজকে বাংলাদেশ পাশার দান উল্টে জয়ী দলে। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সিরিজ খেলতে নামা লিটন হয়ে গেলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ। আর মিরাজ বোধহয় বাংলাদেশের ইতিহাসেরই সবচেয়ে ‘আপাত অসম্ভব’ দুটি ইনিংস খেললেন। তাও আবার টানা দুই ম্যাচে।

সহজ ম্যাচ কঠিন করে জেতা যেন বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিরই অংশ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ যখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে, তখন আঙুুলের ব্যান্ডেজ নিয়ে মাঠে নেমে রোহিত প্রায় জিতিয়েই দিচ্ছিলেন ভারতকে। তবে আজকে দিনটি বাংলাদেশের। নাহলে ওমন ধ্বংসস্তুপ থেক বাংলাদেশকে টেনে তোলেন মিরাজ! ম্যাচ সেরা মিরাজ ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জানান নিজের সংগ্রামের কথা।

তিনি বলেন, ‘গত দুইবছর ব্যাটিং নিয়ে কোচদের সাথে কাজ করার সুফলই পাচ্ছি এখন। কোচরা অনেক তথ্য শেয়ার করেন যেটা ব্যাটিংয়ে কাজে দেয়। এছাড়াও রিয়াদ ভাইয়ের সাথে ব্যাটিং উপভোগ করেছি। তিনি আমাকে বলছিলেন ইনিংসের শেষ পর্যন্ত থাকতে হলে ছোট ছোট লক্ষ্য ঠিক করতে হবে পার্টনারশিপের জন্য।’

দুই ম্যাচে বাংলাদেশকে প্রায় একাই জেতালেন মিরাজ। প্রথম ম্যাচে শেষ উইকেটে মোস্তাফিজের সাথে ওমন অবিশ্বাস্য ৫১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি আর আজ ধ্বংস্তুপ থেকে সেঞ্চুরি। এমন স্বপ্নের মত সিরিজ কাটানো মিরাজের উচ্ছ্বসিত হওয়াটাই স্বাভাবিক।

অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সিরিজ খেলতে নেমে লিটন প্রথম সিরিজেই ইতিহাসের অংশ। বাংলাদেশের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে অধিনায়কত্বের অভিষেক সিরিজটাই জিতে নিলেন লিটন দাস। ম্যাচ শেষে লিটন বলেন, ‘২৪০-২৫০ রানই এই পিচের জন্য লক্ষ্য ঠিক করেছিলাম আমরা। শুরুতে চাপে পড়ে গেলেও রিয়াদ ভাই আর মিরজ অসাধারণ ব্যাটিং করেছে। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সিরিজ জিতে দারুণ উচ্ছ্বসিত।’

অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে প্রায় হারিয়ে দেওয়া রোহিত শর্মার বিরোচিত ব্যাটিং অবশ্য সবার প্রসংশা কুড়াচ্ছে। আঙুলে ব্যান্ডেজ নিয়েও দলের প্রয়োজনে ব্যাটিংয়ে নামেন রোহিত। হাফ সেঞ্চুরি পেলেও দলকে জেতাতে পারেননি তিনি।

তিনি বলেন, ‘দুটো ম্যাচের কোনোটাতেই আমাদের বোলাররা ভালো করতে পারেনি। শুরুতে বাংলাদেশকে চাপে ফেললেও সেই চাপ আর ধরে রাখতে পারনি বোলাররা। এই জায়গায় আরো উন্নতি করতে হবে আমাদের। তাদের শিখতে হবে কিভাবে পার্টনারশিপ ভাঙতে হয়।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link