দ্য টার্নিং পয়েন্ট

ম্যাচে তখন ইংল্যান্ড চালকের আসনে। জশ বাটলার আর ডেভিড মালানের ব্যাটে জয়ের পথে স্বাচ্ছন্দ্যেই হেঁটে চলেছে দলটি। তখন ঠিক আর জয়ের আশা নয়, বরং আর কতটা রান করতে পারলে – এই ম্যাচে আশা থাকত স্বাগতিক দলের সেই নিয়েই যেন তর্ক বিতর্ক হচ্ছিল বেশি।

চাপা একটা আশঙ্কা – ইশ, বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ করা গেল না। কিন্তু, তখনই মোড় বদল। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। এক উইকেটে ১০০ থেকে হঠাৎই ইংল্যান্ড তিন উইকেটে ১০০ রান। ব্যাস, সেখান থেকেই ম্যাচটা ইংল্যান্ডের হাত থেকে ফঁসকে গেল।

১৩ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের রান ছিল ১০০। সাজঘরে গিয়েছেন মাত্র একজন ব্যাটার। মানে বাকি সাত ওভারে নয় উইকেট হাতে নিয়ে করতে হবে আরও ৫৯ রান। মানে রান রেট সাড়ে আটের নিচে রাখলেও ম্যাচ বের করা যাবে। টি-টোয়েন্টির বিবেচনায় সহজ এক সমীকরণ।

তবে, মুস্তাফিজুর রহমানের করা ১৪ তম ওভারের প্রথম দু’টো ডেলিভারিই সকল সমীকরনে গুবলেট পাঁকিয়ে দিল। প্রথম বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন হাফ সেঞ্চুরিয়ান ডেভিড মালান। বাংলাদেশের আশা ফিরে। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে নিজেরে শততম উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছান মুস্তাফিজ।

তবে, সবচেয়ে বড় বিস্ময়টা জমা ছিল এর পরের বলের জন্য। আলত ব্যাটে বলটা পয়েন্টের দিকে ঠেলে দিয়েই দৌঁড়টা শুরু করেছিলেন নতুন ব্যাটার বেন ডাকেট। অধিনায়ক বাটলারের মধ্যেও কোনো সংকচ ছিল না। কিন্তু, কে জানত, ঠিক ওই মুহূর্তে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়ে উঠবেন ধূর্ত এক চিতাবাঘ।

বাঁ-দিকে এগিয়ে ক্ষীপ্রতার সাথে বলটা লুফে নিয়ে মিরাজ উল্টো ঘুরে বলটা থ্রো করলেন স্ট্রাইকার এন্ডে। সরাসরি থ্রো, আর স্পট অন। স্ট্যাম্পে বলটা লাগার সাথে সাথেই বোঝা গেল বেজে গেছে বাটলারের বিদায় ঘণ্টা। তৃতীয় আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্ত পর্দায় জানিয়ে দেওয়া সেখানে কেবলই বাহুল্যতা।

পর দু’টি ডেলিভারিতে দু’জন সেট ব্যাটারকে হারিয়ে আদৌ আর ম্যাচে ফেরা হয়নি ইংলিশদের। শেষ সাতটা ওভারে তাঁরা করতে পারে মাত্র ৪২ রান। ম্যাচটা এখানেই বাংলাদেশের নামে লেখা হয়ে গেছে। আর এর কৃতিত্ব অবশ্যই ওই দু’টো ডেলিভারির, বিশেষ করে মিরাজের ওই অবিশ্বাস্য থ্রো-টা, যা নিশ্চিত করে বাটলারের বিদায়। উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া বাটলার কি করতে পারেন – সেটা কে না জানে!

কার্যত, মিরাজ যে দু’টো টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন দু’টোতেই কার্যকর ছিলেন নিজের ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায়। দ্বিতীয় ম্যাচে ১২ রানে চার উইকেট, ব্যাট হাতে ১৬ বলে ২০ রানের জরুরী ইনিংস খেলে পান ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

দ্বিতীয় ম্যাচে এত সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারেননি। ব্যাটিংয়ে নামাই হয়নি। বল হাতেও ছিল না বড় কোনো ভূমিকা। তবে, এবার ফিল্ডিং দিয়েই যেন ম্যাচের সবটুকু আলো কাড়লেন নিজের দিকে!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link