ঐতিহাসিক খরুচে বোলিংয়ের কর্ণধার

ওয়ানডে ক্রিকেটে ইতিহাসে এমন কিছু বোলার আছেন, যারা এক ইনিংসে এত বেশি রান দিয়েছেন যে ক্রিকেট রেকর্ডের পাতায় তাদের নাম এখনো উঠে আসে সব থেকে খরুচে ওভারের বোলারদের তালিকায়। চলুন দেখে নেওয়া যাক।

বোলারদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের বহু নির্ণায়কের মাঝে একটি হলো বোলারদের ইকোনমি রেট। একজন বোলার তাঁর বোলিংয়ে কতটা কিপ্টেমি করছেন, তা বুঝা যায় এই মানদণ্ডেই। তবে এর উল্টোও আছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে একজন বোলার কতটা উদার, তার মানদণ্ড নির্ধারণ করে প্রতিপক্ষকে যিনি রান উদারহস্তে বিলান।

তো, ওয়ানডে ক্রিকেটে ইতিহাসে এমন কিছু বোলার আছেন, যারা এক ইনিংসে এত বেশি রান দিয়েছেন যে ক্রিকেট রেকর্ডের পাতায় তাদের নাম এখনো উঠে আসে সব থেকে খরুচে ওভারের বোলারদের তালিকায়। চলুন দেখে নেওয়া যাক।

  • বাস ডি লিড (১০ ওভারে ১১৫)

সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপেই বিব্রতকর এক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের বাস ডি লিড। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষের রাউন্ড রবিন লিগের ম্যাচে এ বোলার ১০ ওভারে দেন ১১৫ রান।

যা ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড। যদিও ১১৫ রানের বিপরীতে প্রতিপক্ষের ২টি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। আউট করেন মার্নাস ল্যাবুশানে ও জস ইংলিশকে।

  • অ্যাডাম জাম্পা ও মিক লুইস (১০ ওভারে ১১৩) 

২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ ওভারে ১১৩ রান দিয়েছিলেন মিক লুইস। আর জাম্পা ২০২৩ সালে এসে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ১০ ওভারে ১১৩ রান দিয়ে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ডে তাঁর পাশে বসেন। যদিও বিশ্বকাপে এসে বাস ডি লিড ১১৫ রান দিয়ে জাম্পা ও লুইসকে সেই বিব্রতকর রেকর্ড থেকে মুক্তি দেন।

  • ওয়াহাব রিয়াজ (১০ ওভারে ১১০)

২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে তৃতীয় ওয়ানডেতে ১০ ওভারে ১১০ রান গুণেছিলেন ওয়াহাব রিয়াজ। আর সেটিই ছিল প্রথম কোনো পাকিস্তানি বোলার দ্বারা শতাধিক রান হজম করার রেকর্ড।

এর আগেও অবশ্য পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার আগের রেকর্ডও ছিল তারই। ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯ ওভারে দিয়েছিলেন ৯৩ রান।

  • রশিদ খান (৯ ওভারে ১১০)

আফগান ক্রিকেটের মহাতারকা তিনি। তবে দেশটির হয়ে এক ইনিংসের সর্বোচ্চ রান দেওয়ার বিব্রতকর রেকর্ডটাও তাঁর। ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ৯ ওভারেই ১১০ রান হজম করেছিলেন এ লেগস্পিনার।

  • ভূবনেশ্বর কুমার (১০ ওভারে ১০৬)

ইকোনমি রেট দিয়ে ভূবনেশ্বর কুমার অন্যতম সেরা হলেও ভারতীয় বোলার হিসেবে তিনিই একটি ম্যাচে সর্বাধিক রান দিয়েছেন। ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ ওভারে ১০৬ রান দেন এ পেসার। আর সে ম্যাচে প্রোটিয়াদের দেওয়া ৪৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২১৪ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয় ভারত।

  • নুয়ান প্রদীপ (১০ ওভারে ১০৬)

২০১৭ সালে মোহালিতে ভারতের বিপক্ষে ১০ ওভারে ১০৬ রান দিয়েছিলেন নুয়ান প্রদীপ। যা শ্রীলঙ্কার হয়ে এখন পর্যন্ত খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড হিসেবে অক্ষুণ্ণ আছে। বলে রাখা ভাল, সে ম্যাচে ২০৮ রানে অপরাজিত ছিলেন ভারতের রোহিত শর্মা।

  • প্যাট্রিক স্নেডেন ও টিম সাউদি(১০ ওভারে ১০৫)

ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে এক ইনিংসে ১০০ রান হজম করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের প্যাট্রিক স্নেডেন। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ ওভারে ১০৫ রান দেন তিনি। এর ৪০ বছর পড়ে, ২০২৩ বিশ্বকাপে এসে ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ১০৫ রান হজম করেন টিম সাউদি।

  • ব্রায়ান ভিটোরি (৯ ওভারে ১০৫)

জিম্বাবুয়ের হয়ে এক ইনিংসের সবচেয়ে বেশি রান হজম করার রেকর্ড ব্রায়ান ভিটোরির। ২০১২ সালে নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ ওভারে ১০৫ রান হজম করেন এ পেসার।

  • জেসন হোল্ডার (১০ ওভারে ১০৪)

২০১৫ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গ্রুপপর্বের ম্যাচে ১০ ওভারে ১০৪ রান হজম করেছিলেন জেসন হোল্ডার। যা তখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের মঞ্চে খরুচে বোলিং ফিগারের রেকর্ড ছিল।

  • স্যাম কারেন (৯.৫ ওভারে ৯৮)

ইংল্যান্ডের হয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান হজমের রেকর্ডটা স্যাম কারেনের। ২০২৩ বিশ্বকাপের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৯.৫ ওভারে ৯৮ রান দেন এ পেসার। আর এর মধ্য দিয়েই ইংলিশদের হয়ে ২০০৬ সালে ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ম্যাচে ১০ ওভারে ৯৭ রান দেওয়া হারমিশনের রেকর্ডটি ভেঙে যায়।

  • শফিউল ইসলাম (৯ ওভারে ৯৭)

২০১০ সালের জুলাইয়ে এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ ওভার বোলিং করে ৯৭ রান দিয়েছিলেন শফিউল ইসলাম। যা বাংলাদেশি বোলার হিসেবে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান হজম করার রেকর্ড হিসেবে এখনও অক্ষুণ্ন রয়েছে।

  • ডেল স্টেইন (১০ ওভারে ৯৬)

২০১৬ সালে ডানেডিনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০ ওভারে ৯৬ রান হজম করেছিলেন ডেল স্টেইন। যা এখন পর্যন্ত প্রোটিয়াদের হয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড হয়ে আছে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...