গ্রেটদের কাতার স্পর্শ করবেন মুশফিক?

ওয়ানডে বিশ্বকাপের মঞ্চে সহস্র রানের মাইলফলক ছুঁতে মুশফিকের চাই আর ১২৩ টি রান। নিজের পঞ্চম বিশ্বকাপে এসে সেই মাইলফলক ছোঁয়ারই দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন বাংলাদেশের এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

২০০৭ থেকে ২০১৯, আগের ৪ বিশ্বকাপ মিলিয়ে মুশফিক রান করেছেন ৮৭৭। যার মধ্যে এক সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৬ টা অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপের মঞ্চে বাংলাদেশের ইতিহাসে সাকিব আল হাসানের পরই সর্বোচ্চ রান এসেছে মুশফিকের ব্যাট থেকে।

আগামী ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের ক্রিকেট অনন্য এক কীর্তি স্পর্শ করবেন মুশফিকুর রহিম। এবারের বিশ্বকাপ দিয়ে যে দুই বাংলাদেশি ক্রিকেটার ‘পাঁচ’ বিশ্বকাপ খেলার দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন হলেন মুশফিক। অন্যজন সাকিব আল হাসান।

তবে পাঁচ বিশ্বকাপ খেলার কীর্তি ছোঁয়া ছাড়াও মুশফিকের সামনে অপেক্ষা করছে ইতিহাসের তৃতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে বিশ্বকাপে ১০০০ রানের রেকর্ড। এর আগে শুধু দুজনই এ কীর্তিতে নাম লিখিয়েছিলেন।

ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম উইকেট উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩ বিশ্বকাপে ৩১ ম্যাচে ১০৮৫ রান করেছেন তিনি।

যেখানে ১ সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৮ টি অর্ধশতক রয়েছে তাঁর। যে একমাত্র সেঞ্চুরিটি তিনি পেয়েছিলেন সেটিও আবার বেশ স্পেশাল। ২০০৭ বিশ্বকাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন গিলক্রিস্ট। যেটি বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই ফাইনালে করা সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড।

মজার ব্যাপার হলো, ২০০৭ বিশ্বকাপ ফাইনালের নায়ক গিলক্রিস্ট তাঁর খেলা ৩ বিশ্বকাপের একটি ম্যাচেও পরাজয়ের স্বাক্ষী হননি। কারণ তিনি যে ছিলেন ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হ্যাটট্রিক শিরোপার সারথি।

ইতিহাসের দ্বিতীয় উইকেট উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে ১০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা। শ্রীলঙ্কার হয়ে ৪ বিশ্বকাপে ৩৭ ম্যাচে ১৫৩২ রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। যা শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ এবং বিশ্বকাপের ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ।

বিশ্বকাপের মঞ্চে ৫৬.৭৫ গড়ে ব্যাটিং করা ৭ হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ৫ টি। যেখানে ২০১৫ বিশ্বকাপের এক আসরেই তিনি টানা ৪ ম্যাচে হাঁকিয়েছিলেন ৪ সেঞ্চুরি।

৪ বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা থাকা সাঙ্গাকারা অবশ্য কখনোই শ্রীলঙ্কার হয়ে বিশ্বকাপ জিততে পারেননি। ২০০৭ ও ২০১১, টানা দুই বার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেও দু’বারই ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। ঐ দুই আসরেই রানার্সআপ হয়েছিল শ্রীলঙ্কা।

২০২৩ বিশ্বকাপে প্রতিটি দলই রাউন্ড রবিন পর্বে ৯ টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। ১০০০ রানের মাইলফলক ছোঁয়ার পথে তাই মুশফিকের জন্য বাকি ১২৩ টি রান সহজসাধ্যই বটে। তার উপরে চলতি বছরে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফর্মেই আছেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

নিজের শেষ বিশ্বকাপটা তাই নিশ্চিতভাবেই রাঙাতে চাইবেন মুশফিক। তবে বাংলাদেশকে নিয়ে তাঁর দৃষ্টিসীমা নিশ্চয়ই আরো অনেক দূরে। ইতিহাসের সেরা সাফল্যের সারথি কেই-বা হতে না চায়!

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link