নীরব সাধনায় অনন্য মুশফিকুর রহিম

ইংল্যান্ড বধ, অজি দূর্গের পতন, মাউন্ট মঙ্গানুই রূপকথা কিংবা সিলেটের অবিস্মরণীয় জয় - প্রতিটাতে মুশফিকুর রহিম মাঠে ছিলেন, হয়েছেন ইতিহাসের অংশ।

মুশফিকুর রহিম – তিনি কি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিভাবান ক্রিকেটার; অবশ্যই নয়। তবে কি বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার, তাও তো নয়। তাহলে তাঁর পরিচয় কি, মুশফিকের সবচেয়ে বড় পরিচয় বোধহয় তাঁর নিবেদন। চোখ বন্ধ করে বলা যায় এই দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে সবচেয়ে নিবেদিত প্রাণ এই তারকা।

একটা বিশেষ পরিসংখ্যানেই সেটা স্পষ্ট। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ টেস্ট ম্যাচ জিতেছে ১৯টি, তার মধ্যে ১৮টিতেই একাদশে ছিলেন তিনি। একটিতে ছিলেন না; থাকবেনই বা কিভাবে, সেটা তো বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয় ছিল। তাঁর তখন অভিষেকই হয়নি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।

ইংল্যান্ড বধ, অজি দূর্গের পতন, মাউন্ট মঙ্গানুই রূপকথা কিংবা সিলেটের অবিস্মরণীয় জয় – প্রতিটাতে মুশফিকুর রহিম মাঠে ছিলেন, হয়েছেন ইতিহাসের অংশ। টাইগারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টেস্ট জয়ের মালিকও তিনি।

সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা বিভিন্ন ইস্যুতে যখন টেস্ট খেলা থেকে বিরত থাকতে চান মুশফিক সেখানে সাদা পোশাকে শুভ্রতার সাধনা করে যান। তাই তো প্রায় কাছাকাছি সময়ে অভিষেক হওয়া সত্ত্বেও সাকিবের চেয়ে তাঁর জয় সংখ্যা পাঁচটা বেশি, তামিমের চেয়ে সাতটা! কি জানি, ভাগ্য ভাল হলে সংখ্যার ব্যবধান আরো বাড়লেও বাড়তে পারে।

শুধু মুশফিক নয় সাকিব, তামিম, মাহমুদউল্লাহর মত সিনিয়রদের ইতোমধ্যে পিছনে ফেলেছেন মুমিনুল হক, তাইজুল ইসলামরাও। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের চেয়ে ২৩ ম্যাচ কম খেলেই সমান ১৩টি জয় পেয়েছেন তাইজুল; অন্যদিকে মুমিনুল ১৪বার নিয়েছেন টেস্ট জয়ের স্বাদ, যদিও শততম টেস্ট আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সুযোগ পেলে আরো দুইটা জয় যোগ হতো তাঁর ঝুলিতে।

টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি মুশফিকুর রহিমের আগ্রহ সত্যিই অনন্য। তিন ফরম্যাটেই নিয়মিত খেলেন এমন ক্রিকেটারদের মাঝে কেবল তিনিই পেরেছেন টানা লাল বলে খেলে যেতে।

এই ত্যাগের পুরষ্কার নিশ্চয়ই পাবেন তিনি, আর খানিকটা সময় খেলতে পারলেই সম্ভবত বনেদি সংস্করণে ১০০ ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন এই ব্যাটার। তার চেয়ে বড় কথা, সাদা পোশাকে টাইগারদের অর্জনের গল্প যতবার স্মরণ করা হবে, ততবারই মনে করতে হবে মুশফিককে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...