ভারতীয় ক্রিকেট দল কেন পাকিস্তানে আসতে পারবে না?

ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় লড়াইটা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার লড়াইয়ের থেকেও বড় ম্যাচ। তিনি এক প্রকার অনুরোধ করেই বলেছেন ভারত যেন এই জৌলুশটা হারিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ না করে। 

ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। সৃষ্টির লগ্ন থেকেই প্রতিটা সেক্টরেই এই দুই দেশ লড়েছে একে অন্যের সাথে। তবে সবচেয়ে ঝুকিহীন লড়াইটা হয়েছে ময়দানে। ক্রিকেট হোক কিংবা অন্য কোন ক্রীড়াঙ্গনে। তবে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছেছে ক্রিকেট মাঠের লড়াইটা।

ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নিয়ে উন্মদনা ছড়িয়েছে গোটা উপমহাদেশে। কখনো কখনো সেই উন্মদনার বিস্তৃতি হয়েছে সমগ্র ক্রিকেট দুনিয়ায়। সেই জৌলুশটা ভারতের গোড়ামির কারণে হারিয়ে যাচ্ছে বলে মত পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রধান নাজাম শেঠির।

মূলত আবারও ক্রিকেট দুনিয়া সরগরম, ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ নিয়ে। এবারে কারণ এশিয়া কাপ। ভারত পাকিস্তানের মাটিতে এশিয়া কাপের ম্যাচ খেলতে চায় না। এ বিষয় সবারই জানা। মূলত সেই বিষয়টাই জল ঘোলা করছে প্রচুর। আর তাতেই খানিকটা ক্ষিপ্ত পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি।

নাজাম শেঠি বলেন, ‘তারা (ভারত) চায় সবগুলো ম্যাচ কোন এক নিরপেক্ষ ভেন্যুতে হোক। ভারতের উচিত যুক্তিসংগত কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া, যাতে আমাদের কাজ এগিয়ে নিতে কোন সমস্যা না হয়। ভারতের উচিত নয় এমন কোন কিছু করা যাতে করে আমরা এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ বয়কট করি। আর ২০২৫ এ তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বয়কট করুক। তাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।’

পাকিস্তান ইতোমধ্যেই ভারতের সুবিধার কথা মাথায় রেখে হাইব্রিড পদ্ধতির প্রণয়ন করেছে। সেই পদ্ধতি অনুসারে ভারতের সবগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তবে এখানে আবার বাঁধ সেধেছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। মরুর বুকে তপ্ত গরমে খেলতে নারাজ এই দুইদল। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল আয়োজক হিসেবে অন্য কোন দেশকে বেছে নিতে পারে।

তেমনটা হলে, মোটেও ভাল হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন নাজাম শেঠি। তিনি বলেন, ‘এটা কোনভাবেই গ্রহণ করা হবে না। এমনটা হলে পাকিস্তান সত্যিকার অর্থেই বিশ্বকাপ বয়কট করবে।’ এরপর নাজাম শেঠি তাদের নিরাপত্তার ইস্যু সামনে এনে বলেন, ‘আমাদেরও তো ভারতে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে। তাহলে পাকিস্তানকে ঢাকা অথবা আরব আমিরাত কিংবা শ্রীলঙ্কায় খেলতে (বিশ্বকাপ) দেওয়া হোক।’

যতক্ষণ অবধি ভারত পাকিস্তানের সাথে পাকিস্তান বা অন্য কোথায় খেলতে রাজি না হয়, ততক্ষণ অবধি হাইব্রিড মডেলই হতে পারে সমাধান। তেমনটাই মত নাজাম শেঠির। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দলের গাড়ি বহরে হামলা হয় পাকিস্তানের লাহোরে। এরপর থেকেই পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নির্বাসনে চলে যায়।

বহু প্রচেষ্টার পর আবারও পাকিস্তানের ফিরেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। সে কথাও মনে করিয়ে দেন নাজাম শেঠি। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরিয়ে আনতে বেশ কষ্ট করেছি। সব বড় দেশই বিগত কয়েক বছরে পাকিস্তানে খেলে গেছে। তারা সবাই নিরাপত্তা আয়োজন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। সেটা এখন আর সমস্যা না।’

নাজাম শেঠি বেশ ক্ষুব্ধ হয়েই বলেন, ‘ভারতীয় ব্রিজ দল পাকিস্তানে এসেছে, ভারতীয় কাবাডি দল পাকিস্তানে এসেছে, ভারতীয় বেসবল দলও পাকিস্তানে এসেছে। সুতরাং হচ্ছেটা কি? ‘কেন ভারত ক্রিকেট দল কেন আসতে পারবে না পাকিস্তানে?’

তাছাড়া নাজাম শেঠি মনে করেন ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় লড়াইটা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার লড়াইয়ের থেকেও বড় ম্যাচ। তিনি এক প্রকার অনুরোধ করেই বলেছেন ভারত যেন এই জৌলুশটা হারিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ না করে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...