পাপনের গ্যারেজ, বাংলাদেশ ক্রিকেটের তীর্থভূমি!

গুলশান–২ এর ১০৮ নম্বর সড়কের একটি বাড়ি। আর সেই বাড়িরই গ্যারেজ। ভাবতে পারেন, এই গ্যারেজই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের একটি অংশ হতে পারে? 

গুলশান–২ এর ১০৮ নম্বর সড়কের একটি বাড়ি। আর সেই বাড়িরই গ্যারেজ। ভাবতে পারেন, এই গ্যারেজই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের একটি অংশ হতে পারে?

হ্যাঁ। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসভবনের এই গ্যারেজই বাংলাদেশ ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সিদ্ধান্তের সাক্ষী। গত বছরের মে মাসে মুমিনুল হক টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন এই গ্যারেজে।

এরপর গত ৩ আগস্ট তামিম ইকবাল বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন এই জায়গাতেই। এক সপ্তাহ বাদে, নতুন ওয়ানডে অধিনায়কের নামও উচ্চারিত হলো এই গ্যারেজেই। এভাবে এই গ্যারেজেই যেন অধিনায়কের প্রস্থান, নতুন অধিনায়কের আগমনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর মঞ্চস্থ হয়।

মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে বলা হয় হোম অব ক্রিকেট। আনুষ্ঠানিক যে কোনো সিদ্ধান্তই আসার কথা বিসিবি ভবন থেকে। কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে বিসিবি সভাপতির বাসভবনের গ্যারেজ যেন হয়ে উঠেছে বিসিবি’র আরেকটি শাখা। যেখানে নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়।

বিসিবি সভাপতির বাসভবনের গ্যারেজে তামিম বিশেষ বৈঠক করবেন— এমন খবর তাও জানা গিয়েছিল। কিন্তু সাকিবকে অধিনায়ক করার সিদ্ধান্তটা এই গ্যারেজে নেওয়া হয়েছে আগে কোনো রকম ঘোষণা না দিয়েই।

মিরপুরে বিসিবির সংবাদ সম্মেলন কক্ষ রয়েছে। তারপরও কেন এই গ্যারেজে সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে? অনুমিত ভাবে এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে সে সব ছাপিয়ে বিস্ময়কর ভাবে এই গ্যারেজ যে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অবিচ্ছেদ্য এক অংশ হয়ে উঠেছে, তা আর অস্বীকার করা উপায় নেই।

জনপ্রিয়তায় দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ক্রিকেট সবচেয়ে এগিয়ে। একই সাথে অর্থবিত্তেও বিসিবির ধারের কাছেও কোনো ক্রীড়াসংস্থা নেই। কিন্তু পেশাদারিত্বের প্রসঙ্গ আসলে সেটিতে বিসিবি পড়ে যায় তলানিতে। সাকিব হচ্ছেন বিশ্বকাপের অধিনায়ক, ঘোষণাটা আসলো পাপনের গ্যারেজ থেকে। বিশ্বের আর কোন ক্রিকেট বোর্ডে এমন ঘটনার নজির মোটেই মেলে না।

অবশ্য বিশ্বকাপের ট্রফি আসলেও যে বোর্ড কর্তাদের ছবি তোলার ধুম পড়ে যায়। এমন দৃশ্যও বিশ্ব ক্রিকেটে আর দেখা যায় না। পেশাদারিত্বের যেন কোনো তোয়াক্কায় করে না বিসিবি।

অনেকটা উদাসীনতা, অপ্রয়োজনীয়তার বেড়াজালে সব কিছুর প্রবেশ ঘটিয়ে যেন পুরো প্রক্রিয়াটাই স্বাভাবিক করে তুলেছে বিসিবি। আর এ কারণেই আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়েও বিসিবি নিজেদের ভাবমূর্তির কোনো পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। তিমিরেই থেকে গিয়েছে সব।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...