১৯৭৪, প্রথম অজি বধের স্বাদ

বদলটা শুরু হলো ওপেনার গ্লেন টার্নার, রিচার্ড হ্যাডলির মতো ব্যাটিং ও বোলিং এ দুই সেরা মানের খেলোয়াড় দলে আসার পর। বড় বাঁধা ছিল অস্ট্রেলিয়া, প্রতিবেশি হওয়ার কারণে রেষারেষি ছিল - কিন্তু মাঠের খেলায় তার প্রভাব দেখা যেত না বললেই চলে।

নিউজিল্যান্ড দল বিশ শতকের প্রথম পর্ব (১৯৩০) থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে শুরু করলেও ইতিহাসে শক্তিশালী দল হয়ে উঠতে পারেনি। কারণ, তখন শক্তিশালী খেলোয়াড়ের অভাব এ দলে ছিল। বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিভাবান খেলোয়াড় দলে এলেও – একইসাথে ব্যাটিং বোলিং এ উঁচু মানের খেলোয়াড় একসাথে আসেনি।

কিন্তু বদলটা শুরু হলো ওপেনার গ্লেন টার্নার, রিচার্ড হ্যাডলির মতো ব্যাটিং ও বোলিং এ দুই সেরা মানের খেলোয়াড় দলে আসার পর।

বড় বাঁধা ছিল অস্ট্রেলিয়া, প্রতিবেশি হওয়ার কারণে রেষারেষি ছিল – কিন্তু মাঠের খেলায় তার প্রভাব দেখা যেত না বললেই চলে। অস্ট্রেলিয়াকে এর আগে কোনোদিন নিউজিল্যান্ড দল হারাতে পারেনি। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে ওদের দেশে সফরে গিয়েও ২-০ সিরিজ হেরে এসেছে।

এ সময়ের অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অত্যন্ত শক্তিশালী। ছিলেন রেডপাথ, স্ট্যাকপোল, ইয়ান চ্যাপেল, গ্রেগ চ্যাপেল, ডগ ওয়াল্টার্স, রডনি মার্শ। বোলিংয়ে ছিলেন পেসার ওয়াকার, গিলমোর, ডাইমক, স্পিনার ম্যালেট প্রমুখরা। বোলিং একটু কমজোরী হলেও একেবারে উপেক্ষা করার নয়। লিলি এ সময় চোটের জন্য দলের বাইরে। আর টমসনের তখনও অভিষেক হয়নি ।

১৯৭৪ সালে সফরে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। তো, প্রথম টেস্ট ড্র হওয়ার পর দ্বিতীয় টেস্টে দুই ভাই রিচার্ড ও ডেল হ্যাডলি , কলিঞ্জ, কংডন চমৎকার বোলিং করে মাত্র ২২৩ রানে অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করে দিল। কেবল রেডপাথ ৭১ রান করেছিলেন, পরের সবোর্চ্চ রড মার্শের ৩৮। ইয়ান চ্যাপেল ও ডগ ওয়াল্টার্সকে আউট করেন রিচার্ড হ্যাডলী। তিনি তিন উইকেট নেন।

ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ড করে ২৫৫ রান। শতরান করেন গ্লেন টার্নার (১০১)। চার উইকেট নেন পেসার ওয়াকার। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৯ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। দুই ভাই রিচার্ড ও ডেল ৪ টি করে উইকেট নেন। রিচার্ডের শিকার রেডপাথ, গ্রেগ চ্যাপেল, ডেভিস এবং ম্যালেট। ডেলের শিকার ওয়াল্টার্স, মার্শ, ওয়াকার এবং ডাইমক। ওয়াল্টার্স ৬৫ ও রেডপাথ ৫৮ রান করেন।

পাঁচ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। আবার শতরান করেন টার্নার। নিউজিল্যান্ড প্রথমবার অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পরে ধীরে ধীরে শক্তিশালী দল হিসাবে গড়ে তুলতে থাকে জিওফ হাওয়ার্থ, জেরোমি কোনি, জন রাইট, মার্টিন ক্রো, ব্রুস এডগারের মতো ব্যাটসম্যান এবং রিচার্ড হ্যাডলির মতো দুর্দান্ত বোলারের বিকাশের পর।

সূত্রপাত হয়েছিল হ্যাডলির হাত ধরেই। এরপর ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ হারানোর ঘটনা ছাড়াও বিদেশের মাঠেও হ্যাডলি এবং তার দল সাফল্য আনতে শুরু করে। সবধরণের পিচে সাফল্য পাওয়া স্যুইং যাদুকর হ্যাডলী নিউজিল্যান্ডের আসল অস্ত্র হয়ে ওঠেন।

চেস্ট অন অ্যাকশনে হ্যাডলির দুর্দান্ত আউটস্যুইঙ্গার এবং দুদিকে সিম ও স্যুইং এর ক্ষমতা পৃথিবীর সর্বকালীন সেরা এক বোলার হিসাবে তাঁকে প্রতিষ্ঠা দেয়। তাঁকে চাইলেই সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন বলে রায় দেওয়া যায়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...