প্রকৃতি কখনো শূন্যস্থান শূন্য রাখে না। উদাহরণের অপেক্ষা করতে হবে না হয়ত খুব একটা। আশেপাশে একটু চোখটা মেলুন। দেখতে পাবেন শূন্যস্থান ভরে যাওয়ার উদাহরণ। হয়ত সময় লাগে কিংবা লাগে না। হয়ত পুরোপুরি ভরাট হয় না শূন্যস্থান। তবুও তা তো আর একেবারেই ফাঁকা থাকে না। এত কিছু বলার কারণ রয়েছে নিশ্চয়ই। প্রকৃতির এই অদ্ভুত নিয়মের প্রতিফলন যেন একসাথে দেখলো পুরো ক্রিকেট বিশ্ব।
দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তি ব্যাটার এবি ডি ভিলিয়ার্সের কথা নিশ্চয়ই ভুলে যাওয়ার কথা নয়। এমন অসাধারণ নান্দনিক একজন ব্যাটারকে আসলে ভুলে যাওয়া যায় না। স্মৃতির গহীন থেকে বারবার উঁকি দেবে তাঁর মাঠের চারদিকে খেলা দূর্দান্ত সব শট। দ্রুততম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে শতক হাঁকানোর দিন। এসব কিছু স্মৃতিতে মলিন হয়ে যাওয়াটাও বেশ কষ্টসাধ্য। তবে দুঃখজনক এবি ডি ভিলিয়ার্সকে আর হয়ত ক্রিকেট মাঠে দেখা যাবে না। দিন কতক আগে তো তিনি তাই জানালেন।
কিন্তু আমি যদি বলি হয়ত তাঁকে যাবে। তাহলে কি একটু চমকিত হবে না? হবেন হয়ত কিংবা হবেন না। সেই আলাপ বাদ। তবে প্রকৃতির শূন্যস্থান শূন্য না রাখার উদাহরণ সেই দক্ষিণ আফ্রিকান তরুণ ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলছে যুবক ব্রেভিস। ডানহাতি ব্যাটার। নেমেছিলেন তিন নম্বরে ব্যাট করতে। খেলেছেন দলের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। কিন্তু সবার চোখ আটকেছে তাঁর ব্যাটিং স্টাইলে। একপর্যায় হয়ত অনেকে ভেবেছেন সেই এবি ডি ভিলিয়ার্স এসেছেন তরুণ হয়ে যুব বিশ্বকাপ খেলতে।
কিন্তু না ভিলিয়ার্স না। ছেলেটা উনিশ না পেরোনো এক কিশোর। সে যতক্ষণ মাঠে ছিলো সবাই যেন অবাক হয়ে তাকিয়ে শুধু তফাৎ খোঁজার চেষ্টা করেছে। তবে যে একেবারে নেই তা কিন্তু নয়। মানুষ তো আর অবিকল আরেকজন হয় না। তবে আশার আলো ঠিকই জ্বেলেছেন ব্রেভিস। তিনি যে একজন মিডেল অর্ডার ব্যাটার হওয়ার দক্ষতা নিজের মধ্যে ধারণ করে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে ভারতের বিপক্ষে প্রোটিয়া যুবাদের প্রথম ম্যাচে।
আগে ব্যাট করে ভারতীয় যুবারা টার্গেট ছুড়ে দেয় ২৩৩ রানের। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে দলের ব্যাটিং এর হাল ধরেন ডেওয়াল্ড ব্রেভিস ও ভেলেন্টাইন কিটাইম। ৯৯ বলে ৬৫ রানের সময় উপযোগি এক ইনিংস খেলেছেন ‘বেবি এবি’ তকমা পেয়ে যাওয়া ব্রেভিস। তাঁকে সেই নামেই সম্বোধন করা শুরু করে দিয়েছে তাঁর সতীর্থ থেকে শুরু করে টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই সাথে বিশ্ব ক্রিকেট বোদ্ধাদের কাছেও বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছেন ব্রেভিস।
তাঁর কাভার শট, রিভার্স সুইপ, পুল শট সবকিছুই যেন মনে করে দিয়েছে এবি ডি ভিলিয়ার্সের কথা। যদিও তাঁর সেই ইনিংস দলের পরাজয় এড়াতে পারেনি। ৪৫ রানে হেরেছে প্রোটিয়া যুবারা। বেশ সম্ভাবনাময়ী ব্যাটার হিসেবেই সমাদৃত হচ্ছেন। দ্বিতীয় ম্যাচেও নিজের ফর্ম ধরে রেখে দারুণ ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন ব্রেভিস। উগান্ডার বিপক্ষেও দূর্দান্ত খেলেছেন ব্রেভিস।
সম্ভাবনা জাগিয়েছেন ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। এখন দেখবার বিষয় তিনি তাঁর সেই সম্ভাবনা মিটিয়ে খেলে যেতে পারেন কিনা। হতে পারেন কিনা বেবি এবি থেকে আগামী দিনের এবি ডি ভিলিয়ার্স কিংবা ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। সময়ের হাতে তোলা থাক সেসব সম্ভাবনার প্রশ্ন।