দূর দিগন্তে জেগেছে এক সরু আশার আলো। সবুজ ধানের উপর বয়ে চলা বাতাসের মতই মনে লেগেছে দোয়া। হুট করেই স্মৃতির পাতায় ভেসে বেড়াচ্ছে বেগুনি-মেরুন জার্সির সব চিত্র। লিকলিকে এক ছোকড়া লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছে প্রতিপক্ষের রক্ষণ। পায়ের কারিকুরিতে প্রতিপক্ষকে বাধ্য করছে মাথা নত করতে। কি অভাবনীয় এক ফুটবলীয় সৌন্দর্য!
নেইমার জুরিয়র যতদিন বার্সেলোনায় ছিলেন, ততদিনই এমন সব দৃশ্য মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। সেই দৃশ্য আরেকটিবার হয়ত দেখতে চান অনেক সমর্থকরা। নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। সে সম্ভাবনা জাগিয়েছেন জোয়ান ফোন্তেস। কাতালান এই সাংবাদিক জানিয়েছেন, যেকোন মূল্যে বার্সেলোনায় ফিরতে চান নেইমার জুনিয়র।
২০১৩ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোস ছেড়ে বার্সেলোনায় এসেছিলেন। এসেই দর্শকদের মনে জায়গা করে নেন। লিওনেল মেসি আর লুইজ সুয়ারেজের সাথে গড়ে তোলেন এক অপ্রতিরোধ্য ত্রয়ী। নিজের পায়ের জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন কাতালুনিয়ার বাসিন্দাদের। খুব আপন করে নিয়েছিল সবাই তাকে। নেইমারও নিজের ঘর হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন।
কিন্তু অর্থের ঝনঝনানি তাকে ঠেলে দেয় ধূম্রজালে। ২২০ মিলিয়ন ইউরোরর বিনিময়ে তিনি বার্সা ছেড়ে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই-তে যোগ দেন। এরপরই যেন তার ক্যারিয়ার গ্রাফ ক্রমশ নিম্নগামী হয়েছে। ইনজুরির ভয়াল থাবা বারেবারে তাকে জাপটে ধরেছে। তবুও নিজস্ব সত্ত্বার প্রতিফলন ঘটাতে চেয়েছিলেন তিনি যতদিন ছিলেন পিএসজি-তে।
কিন্তু তিনি কোথাও আর প্রশান্তি খুঁজে পাননি। পায়ের নানা ইনজুরিতে অধিকাংশ সময় তিনি থেকেছেন মাঠের বাইরে। পিএসজিও তাকে বোঝা ভাবতে শুরু করে। ক্যারিয়ার যখন অন্ধকার পথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সে সময়ে সৌদি আরব থেকে আবারও বিপুল অর্থের হাত-ছানি। সাত-পাঁচ না ভেবে তিনি উঠে পড়েন সৌদিগামী বিমানে।
যদিও সৌদি ক্লাব আল হিলালের জন্য এখনও নিজেকে প্রমাণের ঠিকঠাক সুযোগ পাননি। তবে এর আগেই তাকে ঘিরে নতুন গুঞ্জন মাথাচাড়া দিয়েছে। যদিও এই গুঞ্জন সত্য হবার সম্ভাবনা শূন্যের কাছাকাছি। কেননা তার বয়স ও ইনজুরির ইতিহাস বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। কোন দলই আসলে তার ইনজুরির ভয়াবহতা মাথায় নিয়ে সাদরে তাকে আমন্ত্রণ জানাবে না।
বার্সেলোনার প্রতি নেইমারের হৃদয়ে একটা ‘সফট কর্ণার’ রয়েছে। ঠিক একই চিত্র রয়েছে ব্লাউগানা সমর্থকদের মনেও। তবে সে সবে যে আর চিড়ে ভিজবে না। কার্যকারিতা না থাকলে একজন খেলোয়াড়কে দলে ভেড়ানোর বিশেষ কোন কারণ নিশ্চিতরূপেই নেই। তাই তো গুঞ্জনে উদ্বেলিত হওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোন রাস্তা যে আর খোলা নেই।