অফস্পিনার খুঁজে না পাই

ইনজুরির কারণে এই সিরিজ থেকে মিরাজের বাদ পড়ে যাওয়াটা পুরনো খবর। তাঁর বদলে দলে ডাকা হয়েছিল আরেক অফ স্পিনার নাঈম হাসানকে। চট্টগ্রামের ছেলে নাঈম প্রথম টেস্টে করেছেন বাজিমাত। তবে টেস্টের চতুর্থদিন ফিল্ডিং করতে গিয়ে আঙুলই ভেঙে ফেলেন এই স্পিনার। আর সমস্যার শুরুটাও সেখান থেকে।

এইতো রাতটা পেরিয়ে সকাল হলেই মিরপুরে টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। তবে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশের স্কোয়াডে এই মুহূর্তে পুরোদস্তুর স্পিনার মাত্র দু’জন। ইনজুরির কারণে দুই স্পিনার ছিটকে যাওয়ার পরেও ডাকা হয়নি নতুন কাউকে। আসলে ডাকা হয়নি নাকি ডাকার মত কাউকে প্রস্তুত করেই রাখতে পারেনি বাংলাদেশ?

ইনজুরির কারণে এই সিরিজ থেকে মিরাজের বাদ পড়ে যাওয়াটা পুরনো খবর। তাঁর বদলে দলে ডাকা হয়েছিল আরেক অফ স্পিনার নাঈম হাসানকে। চট্টগ্রামের ছেলে নাঈম প্রথম টেস্টে করেছেন বাজিমাত। তবে টেস্টের চতুর্থদিন ফিল্ডিং করতে গিয়ে আঙুলই ভেঙে ফেলেন এই স্পিনার। আর সমস্যার শুরুটাও সেখান থেকে।

মিরাজের পর নাঈমের ছিটকে যাওয়াটাই আর সামলে নিতে পারলো না বাংলাদেশ। এই মহূর্তে স্কোয়াডে থাকা দুইজন স্পিনারই বাঁহাতি। সাকিব, তাইজুলের সাথে তাই ডানহাতি স্পিনার হিসেবে ভাবা হচ্ছে পার্টটাইমার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। কেননা স্কোয়াডে তো আর কেউ নেই-ই এমনকি বাংলাদেশের ক্রিকেটেও আর নেই কোন ব্যাকআপ স্পিনার।

অথচ মিরপুরের উইকেটে চিরকালই সহায়তা পেয়ে এসেছেন স্পিনাররা। এবারো খুব বেশি হেরফের হবার সুযোগ নেই। তাই এমন উইকেটে যেকোন দলই অন্তত তিনজন জেন্যুইন স্পিনার নিয়ে খেলতে চাইবে। অবশ্য এর আগে এই উইকেটে বাংলাদেশ নিয়মিত চার স্পিনার নিয়েও মাঠে নেমেছে।

তবে ঢাকা টেস্টে চার স্পিনার তো দূরে থাক তিন স্পিনার নিয়েও নামতে পারছেনা বাংলাদেশ দল। দুই বাঁহাতি স্পিনার সাকিব ও তাইজুলের সাথে তাই প্রস্তুত করা হচ্ছে স্কোয়াডে থাকা একমাত্র ডানহাতি স্পিনার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। আগামীকাল টেস্টে মূলত স্পিনার হিসেবেই একাদশে থাকছেন এই অলরাউন্ডার।

তবে এখন প্রশ্ন হতে পারে নাঈম হাসানের ইনজুরির পরেও কেন আর কোন স্পিনারকে স্কোয়াডে ডাকলো না বাংলাদেশ। কেননা টিম ম্যানেজম্যান্ট নিশ্চয়ই জানতো যে মিরপুরের উইকেটে বাড়তি অফ স্পিনার প্রয়োজন হবে বাংলাদেশের।

আসলে সবাই জানলেও করার কিছু ছিল না। কেননা দুই অফ স্পিনারের ইনজুরির পর হঠাতই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে অফ স্পিনারের অভাব কতটা। যতটুকু জানা যায়, বাংলাদেশের দল একজন অফ স্পিনার দলে আনতে চেয়েছিল, এমনকি খোজও চালানো হয়েছিল। তবে টেস্ট দলে আসতে পারে এমন কোন নামই খুঁজে পাননি নির্বাচকরা।

নির্বাচকদেরই বা কি দোষ? লাল বলের ক্রিকেটের পরিকল্পনায় আছেন এমন আরেকজন ডানহাতি স্পিনারের নাম মনে করা তো সত্যিই কঠিন। বাংলাদেশ দলের পাইপলাইন ঠিক রাখার জন্য গঠন করা হয়েছে বাংলাদেশ টাইগার্স। এই ক্যাম্পে নাম আছে মোট ২৩ জন ক্রিকেটারের। তবে সেখানে এখন ডানহাতি স্পিনার আছেন মাত্র একজন। এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ভালো করা নাহিদুল আছেন বাংলা টাইগার্সে। তবে তিনি এই ক্যাম্পে আছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পারফর্ম করার পুরষ্কার হিসেবে। ফলে তাঁকে হঠাত করেই টেস্ট দলে নিয়ে আসা যায় না।

তবে আরেকটি নাম ক্রিকেট পাড়ায় বেশ জোরেসোরেই শোনা যাচ্ছিল। তিনি হচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় পারফর্মারদের একজন শুভাগত হোম। বলা হয় এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় টার্নারও তিনি। তবে এই স্পিনারকেও বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রসেসেই রাখেনি। ২০১৬ সালে সর্বশেষ টেস্ট খেলা এই শুভাগত হোমকে আর পরিকল্পনাতেই রাখা হয়নি। ফলে তাঁকেও হঠাত করে টেস্ট দলে ডাকা যায়নি।

সব মিলিয়ে ঢাকা টেস্টের স্কোয়াডে একজন অফ স্পিনার বাংলাদেশ দল চেয়েছিল নিশ্চয়ই। তবে কাঠামোর মধ্য থেকে কাউকেই খুজে পাওয়া যায়নি। জাতীয় দলের আশেপাশের এই তিন চারজন বাদে যে দেশে অফ স্পিনারের ঘাটতি কতটা তা আরেকবার স্পষ্ট হলো। তাই দুই স্পিনার নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ কী ঢাকা টেস্ট শুরু হবার আগেই খানিকটা পিছিয়ে গেল? প্রশ্নটা তোলা থাকলো।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...